রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) থেকে
কলেজ চলাকালীন সময়েই কোচিং সেন্টার চালান সীতাকুন্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অজিত কুমার দে। এতে কলেজ ও কোচিং সেন্টারে বারবার আসা যাওয়া করতে হয় তাকে। এটি স্পষ্টত অনিয়ম হলেও পরোয়া করেন না তিনি। উল্টো এই অনিয়মকেই নিয়মে পরিণত করে কলেজের শিক্ষার্থীদের তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন। কোন শিক্ষার্থী তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে তাকে কম নম্বর দেওয়া থেকে শুরু করে উক্ত বিষয়ে ফেল করাতে পর্যন্ত পিছু হটেন না বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। শুধু তাই নয়, পরীক্ষার সময় তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, ক্লাসে সুযোগ পেলেই নাজেহালসহ নানানভাবে হেনস্তা করা হয়। ফলে এই কলেজে ভর্তি হয়ে শিক্ষক অজিত দে’র কাছে অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী। তারা এই জিম্মি দশা থেকে মুক্তি ও নিজেদের মেধার যোগ্য মূল্যায়ন চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছে। সীতাকু- বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স (সম্মান) ৪র্থ বর্ষের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আনোয়ারুল করিম, জিনিয়া, মাছুমা, আবু বক্কর ছিদ্দিক, ইয়াসমিন তৃতীয় বর্ষের তানজিনা, সালমা, মেহেদী হাসানসহ অসংখ্য ছাত্রছাত্রী স্বাক্ষরিত অভিযোগে জানা যায়, উক্ত কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার দে দীর্ঘদিন ধরে কলেজে প্রাইভেট বাণিজ্য চালাচ্ছেন। কলেজ গেইটের সামনেই রয়েছে তার কোচিং সেন্টার। প্রতিদিন কলেজ চলাকালীন সময়ে তিনি সেখানে (সকাল ১০টা থেকে ১টা) কোচিং করান। আর তাই এই কোচিংয়ে ভর্তি হওয়ায় জন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের নানাভাবে চাপে রাখেন তিনি। যেসব শিক্ষার্থী তার কাছে প্রাইভেট পড়েন পরীক্ষায় হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে কেবলমাত্র তাদেরকেই উজাড় করে নম্বর দেন তিনি। এমনকি ২০ এরমধ্যে ২০ও দেন হামেশাই। অন্যদিকে যারা তার কাছে না পড়ে অন্য শিক্ষকের কাছে পড়ে তারা মেধাবী ছাত্রছাত্রী হলেও হিসাব বিজ্ঞানে তাদেরকে যথাসম্ভব কম নম্বর প্রদান করে রেজাল্ট দুর্বল করে ফেলেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ১ম বর্ষে উক্ত স্যারদের হাতে কোন নম্বর ছিল না। এসময় পরীক্ষায় যেসব ছাত্রছাত্রীরা কয়েকটি বিষয়ে ফেল করেছিল শিক্ষক অজিত কুমার দে’র সহযোগিতায় তারাই ২০ এরমধ্যে ২০ পর্যন্ত পাচ্ছে। এছাড়াও তার কোচিং সেন্টারেই কলেজের অনেক লেনদেন রসিদ বইয়ের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সেখানে ইচ্ছামত টাকা নিয়ে পরে টাকার অংক বসান তিনি। ব্যক্তিগত সম্পর্ক কিংবা তার ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ফি অনেক কম নেওয়া হলেও অন্য ছাত্রীদেরকে কয়েকগুন পর্যন্ত বেশি দিতে বাধ্য করানো হয়। ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগে জানায়, ৪ বছরের মধ্যে শিক্ষক অজিত কুমার তাদেরকে ২ বছরই ফলাফল খারাপ করিয়ে দিয়েছেন। আর এক বছর তাদের সময় আছে। আগামী বছরেও যদি তিনি তার প্রতিহিংসা জাহির করেন তাহলে কোন শিক্ষার্থীর ফলাফল ভালো হবে না, তা কোন কাজে আসবে। এভাবে একজন শিক্ষক হয়েও শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় তার কার্যকলাপ তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আকুতি জানিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। এ বিষয়ে তারা সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রেসক্লাবে অভিযোগ করেছেন। যার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড কমিটি, জাতীয় শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে। সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া অভিযোগ পাবার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষার্থীরা এসে একটি অভিযোগ দিয়ে গেছে। আমি ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি দেখার সময় পাইনি। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষকে জানাব। অন্যদিকে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অজিত কুমার দে’র কাছে সাংবাদিকরা ফোন করলে তিনি এ বিষয়ে ফোনে কোন কথা বলতে রাজি নন বলে মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেন। পরে প্রতিবেদক অজিত দে’র ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করলে তার এক বন্ধু ফোন রিসিভ করেন। তিনি দূরে আছেন বলে জানান। ফলে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এদিকে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুবিচারের আশায় অভিযোগ করে এখন সুবিচার না পেলে নিজেদের ক্ষতি হতে পারে বলে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। তাই তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।