দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
পূর্ব প্রকাশিতের পর
মানব জনম একবরাই, আর দুনিয়াতে আসাটাই হলো এক দূর্ঘটনা যা দুঃখজনক। আমরা নফসের তাড়নাই দুনিয়াতে আসি। নফ্স নিয়ন্ত্রণ ও পবিত্র করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য তাই বারো শরীফের সূফী সাধক আওলাদে রাসূল প্রেমিক হযরত শাহ্ সূফী মীর মাস্উদ হেলাল (রঃ) বলেছিলেন; “আমাদের “Sextual Life Controll” করে বিবাহ করা দরকার। আমরা দুনিয়াতে মানুষ রূপে আসি; যেন মানুষ রুপেই ফিরে যেতে পারি। তা না হলে এ দুর্লভ মানব জনম বৃথা হয়ে দুঃখ কষ্টের শেষ থাকবে না। তাই প্রার্থনা করি ঃ “এমন বাঁধন দাও হে প্রভু! বাঁধন যেন ছিড়ে না আর; তুমি যেন বলতে না পার বাঁধন হারা বান্দা তোমার।” * আমীন সূম্মা আমীন।* “পরমাত্মার (আল্লাহর) এ সৃষ্টি জুড়ে/মানবআত্মার গভীর ক্রন্দন/যাবে না এ ধরায়/কি হবে মুক্তির উপায়/ফিরে আসিবার পথ/না হলে মানব জনম হবে বরবাদ”। কুষ্টিযার সন্তান মরহুম মিজু আহ্মেদ ছিলেন বারো শরীফের ভক্ত ও মুরিদ। একদিন কথা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলেন বেহেস্ত দোজখ বিচার এসব কি সত্যই আছে হুজুর? আমার তো মনে হয় এসব কিছু নাই। শেষ জামানার জ্ঞানী সূফী সাধক বারো শরীফের মহান ইমাম (রঃ) কয়েক মূহুর্ত মাথা নিচু করে থেকে বললেন ঃ “যে ভাবে বইয়ে আছে সে ভাবে নাই। তবে একদিন সব আত্মাকে এক জায়গায় করা হবে। কর্মনুযায়ী আত্মর রূপ সে রকম হয়। বলা হয় দোজখে খারাপ জিনিস খেতে দেয়া হবে; যেমন-মল, মূত্র, পুঁজ, রক্ত, পচা জিনিস। এ দুনিয়ায় কি, কুকুর, শূকর, শিয়াল তা খাচ্ছে না। আত্মার রূপ যে রকম হবে তাতে ফুঁকে দিবে। মিজু ভাই বললেন, তাহলে এ ভাবেই চলতে থাকবে। ইমাম (রঃ) বললেন, “এ ভাবে একটা আত্মা যতদিন না মুক্তি পাবে ততদিন কেয়ামত হবে না। এরপর যেদিন সকল আত্মা মুক্তি পাবে, যেখান থেকে এসেছিল ফিরে যাবে। আল্লাহ, যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছিল তখন সেটা হয়ে যাবে, তখনই হবে ‘মহাপ্রলয়’। বললেন, ‘যতদিন দেহ ততদিন স্ত্রীর ভূমিকা। স্বামী-স্ত্রী মারা গেলে সবই এক। আত্মার জগতে নারী পুরুষ বলে কিছু নেই। সবই এক। ‘আত্মার জগতে’ আবার পার্থক্য আছে নাকি। কেবল নিজ নিজ কর্মেরহ ছাপ নিয়ে চলে যাবে। (মোহাম্মদী ডাইরী ১২-১১-৮২)
১৩-০৬-৮২ তে কথা প্রসঙ্গে মহান শেষ ইমাম (রঃ) কে বলেছিলাম, মুর্শিদ! বারো শরীফ দরবারে ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার সময় এত মশা যে, ছেঁকে ধরছে, হাতে-পায়ে কাপড় দিয়েছে। মনে মনে করছিলাম, “আল্লাহ এতসব কেন সৃষ্টি করলো। পরক্ষনেই মনে হলো-আল্লাহ নিশ্চয়ই কোন উদ্দেশ্যে করেছেন।” শুনে আওলাদে রাসূল প্রেমিক, সূফী সাধক মহান ইমাম (রঃ) কয়েক মূহুর্ত চোখ বন্ধ করে ধ্যানাস্থ হয়ে বললেন, “অনেক গুলো আত্মার অধোঃগতির ফলে সৃষ্ট।” বললেন, ‘দোজখ বেহেস্ত, এসব কিছু এখানেই। আলাদা করে কিছু নেই। উপমা দিয়ে এসব তৎকালীন জামানার মানুষকে বুঝানো হয়েছে। আছে “আত্মার অধোঃ গতি আর উর্দ্ধগতি। অধোঃগতি হলে এসব হবে; জন্তুর (পশু) মধ্যে ফুঁকে দিবে। এভাবেই শাস্তি হয় এবং চলতে থাকে। এখানে আমরা সকল অবস্থায় পুলসেরাতের উপর। একদিন রাসূল (সাঃ), হযরত আনাস (রাঃ) সহ যাচ্ছেন। আনাস, জিজ্ঞাসা করলেন -“ইয়া রাসূলাল্লাহ (সঃ)! বেহেস্ত পাবার সহজ পথ কি? বললেন; “আমার হাতে যারা মুরিদ হয়েছে তাদেরকে, আমাকে ভালবাসতে হবে। এতে “আমার আত্মার” ছাপ তাদের উপর পড়বে। ফলে আত্মার মুক্তি হবে।” আনাস বললেন, এটা তবে সবাইকে বলে দেই; বললেন না, এতে সবাই জড় হয়ে পড়বে। এবাদত বাদ দিবে। ” মাওলানা রুমী বলেছেন, “যদি তোমরা আত্মার মুক্তি চাও তবে, কামেলকে ভালবাস ও মুরিদ হও। এতে ভুল করলেও (অভ্যাস বশতঃ হওয়া স্বাভাবিক) যেহেতু কামেলের আত্মার ছাপ তার রূপ এক হয়ে যায়। তাই শাস্তি এড়ানো যায়। আত্মা বিকৃত হয় না। রাসূল, সেদিন বলতে নিষেধ করেছিলেন, সেটা হচ্ছে এটাই, যা বললাম।” (মোহাম্মদী ডাইরী-১৩-০৬-৮২)
লেখক : ধর্মতত্ত্ববিদ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।