Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কামড়ে পক্ষাঘাত, চীনের পর রক্তচোষা পোকার উৎ‌পাত ব্রিটেনে!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০২০, ৪:৪০ পিএম

যুক্তরাজ্যে করোনা সংকটের মধ্যেই এবার ভয়ানক এক পোকার উৎ‌পাত শুরু হয়েছে। ব্রিটেনের চিকিৎসকেরা বলছেন, আকারে ছোট হলেও, এই পোকা ভয়ংকর! একবার যেখানে কামড়ায়, সেখানে বসেই রক্তচোষে। শরীরে এমন ভাবে মিশে থাকে, সহজে চোখেও পড়ে না। আর এ ভাবে কয়েক দিন শরীরে বাসা বাঁধতে পারলেই আক্রান্তের পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস অবধারিত। যে কারণে ব্রিটিশ চিকিৎ‌সকেরা চিন্তায় পড়েছেন। ব্রিটেনের ট্যাবলয়েড ‘দ্য সান’-এ ক্ষুদ্রকায় ভয়ানক এই পোকা নিয়ে একটি রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

সম্প্রতি নতুন বুনিয়াভাইরাসের কথা জানিয়েছিল চীন। এর মধ্যে এই ভাইরাসে সাত জন মারাও গিয়েছেন। তবে এই ভাইরাস নিয়ে চীন সতর্ক হলেও, উদ্বিগ্ন নয়। কারণ, এই ভাইরাসের বাহক এক ধরনের রক্তচোষা পোকা। বনজঙ্গল ছাড়া যে পোকার কামড় খাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই এই ভাইরাস প্রাণঘাতী হলেও করোনার মতো মহামারীর সম্ভাবনা নেই।

যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত এ পোকার আক্রমণে মাত্র দু’জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু, এই সংখ্যা দু’জন থেকে ১০ জন হতে সময় লাগবে না বলেই মনে করছেন চিকিৎ‌সকেরা। তাদের বক্তব্য, ব্রিটেনে এ ধরনের রক্তচোষা পোকার কামড় বিরল ঘটনা।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই পোকাটির কামড়ে একজনের বেবিওসিস রোগ হয়েছে। পোকার কামড় থেকে ব্রিটেনে এমন রোগের নজির নেই বলেই তাঁরা দাবি করেন। বেবিওসিস সাধারণত এক প্রকার পরজীবীর কারণে হয়ে থাকে। যারা রক্তের লোহিত কণিকাকে সংক্রমিত করে। এই পোকার কামড়ে টিবিই নামে আর একটি রোগও হতে পারে। মূলত ভাইরাল ইনফেকশন। এই সংক্রমণ সেন্ট্রাল নার্ভস সিস্টেম বা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যার জেরে আক্রান্ত পক্ষঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

চিকিৎ‌সকেরা জানিয়েছেন, রক্তচোষা এই পোকা সাধারণত শরীরের এমন স্থানে কামড়ায়, যেখানে সহজে দেখা যাবে না। ওই স্থানেই বাসা বেঁধে ক্রমাগত রক্ত খেতে থাকে। কামড়ানোর স্থানে র‌্যাশ বেরোয়। তাই প্রদাহ বা জীবাণু সংক্রমণ হলে, ফেলে না-রেখে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখাতে হবে। তারা বলেছেন, শরীর থেকে পোকাটি টেনে বের করে, আক্রান্ত স্থানটি সাবান দিয়ে ভালো ভাবে পরিষ্কার করতে হবে। শরীরের আর কোথাও কামড়েছে কি না, তা-ও ভালোভাবে দেখতে হবে।

ব্রিটেনের পাবলিক হেলথের উপদেষ্টা ডাক্তার ক্যাথরিন রাসেল জানান, বিরল ওই রক্তচোষা পোকাগুলো সাধারণত বসন্ত ও শরৎকালে সর্বাধিক সক্রিয় থাকে। তাই বাইরে বের হওয়ার সময়, সতর্ক থাকতে হবে। সম্প্রতি চীনেও বিশেষ এক ধরনের রক্তচোষা পোকার কামড় থেকে ছড়িয়ে পড়ছে নয়া ভাইরাসের সংক্রমণ। এর মধ্যে সাত জন মারাও গিয়েছেন। সংক্রামিতের সংখ্যা ৬০ ছাড়িয়েছে।

চীনের গ্লোবাল টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, জিয়াংসু প্রদেশ এখনও পর্যন্ত ৩৭ জনের শরীরে নতুন এসএফটিএস ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এই ভাইরাসের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, সর্দিকাশি, সেইসঙ্গে লিউকোসাইটের সংখ্যা হ্রাস। যাকে একসঙ্গে বলা হচ্ছে এসএফটিএস। অন্য দিকে, পূর্ব চীনের আনহুই প্রদেশও আরও ২৩ জন নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্ত।

কোভিড ভাইরাসের মতো নয়া এসএফটিএস ভাইরাস প্রাণঘাতী কি না, তা এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তরে আছে। তবে, কোভিড থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার আর গাছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে না চীন। বিশেষত, সাত জনের প্রাণহানির পর।

তবে চীনের ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এসএফটিএস ভাইরাস আদতে নতুন ভাইরাস নয়। ২০১১ সালেই এই ভাইরাসের প্যাথোজেনকে পৃথক করা হয়। এটি বুনিয়াভাইরাস-এর ক্যাটেগরিতে পড়ে। ভাইরোলজিস্টদের ধারণা, বিশের একধরনের রক্তচোষা পোকার কামড় থেকেই মানুষের শরীরে এই ভাইরাস সংক্রামিত হয়েছে। তবে, মানুষ থেকে মানুষের শরীরে সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা তারা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। রক্ত বা মিউকাস থেকে ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করেছেন চীনের ঝিজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিত্‍‌সক শেং জিফাং।



 

Show all comments
  • saif ১৩ আগস্ট, ২০২০, ৫:০৮ পিএম says : 0
    হে জুলুম কারি ক্ষমতাধরেরা, নিরিহ মানুষের রক্তনিয়ে হলি খেলতে যারা ভাল বাস অপেক্ষায় থাক আল্লাহ্‌র পক্ষথেকে তোমাদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ শুরু হবে তার পরিনতি ভোগ করার জন্যে, যেমন ফেরাউনের হয়েছিল।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ১৩ আগস্ট, ২০২০, ৫:৩৬ পিএম says : 0
    May Allah allow to bite all the Murtard/Munafiq/Taghut government around world and wipe out them. Ameen
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ