Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঈমানদার কখনো খেয়ানত করে না

মুহিব খান | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

যথাযথ একজন মানুষ যদি আল্লাহর রাসূল (সা.) ও আখেরাতের সত্যতার ওপর ঈমানদার হয়, তাহলে সে আমানতের খেয়ানত করতে পারে না। আর যদি সে আমানতের খেয়ানত করে, তবে সে ঈমানের পরিচয় দেয়ার যোগ্যতা রাখে না।

এত কঠোর ও মর্মন্তুদ ব্যাখ্যা সরাসরি হাদিসে আসার পরও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমানতদারী সুন্নতকে অবজ্ঞা করে বাহ্যিক সুন্নতের গর্ব-অহঙ্কার ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশও সুন্নতে নববীর চরম খেয়ানত ছাড়া আর কিছুই নয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাজত করুন। মুসলিম শরিফের হাদিসে হজরত হুযায়ফা (রাজি.) ও হজরত আবু হুরায়রা (রাজি.)-এর যৌথ বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইরশাদে এ রকম উল্লেখ আছে যে, মহান আল্লাহ হাশরের ময়দানে সকল মানুষকে একত্র করবেন। মুমিনরা দাঁড়াবে, বেহেশত তাদের নিকটস্থ করা হবে। তারা একে একে পর্যায়ক্রমে হজরত আদম (আ.), হজরত ইবরাহীম (আ.), হজরত মুসা (আ.), হজরত ঈসা (আ.)-এর কাছে বেহেশতের দরজা খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করতে আরজি পেশ করবে।

কিন্তু তাঁরা সকলেই বিভিন্ন কারণ ও অজুহাত পেশ করে নিজেদের অপারগতা প্রকাশ করবেন। অতঃপর মানুষ শেষ নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে এলে তিনি উঠে দাঁড়াবেন। তাঁকে অনুমতি প্রদান করা হবে এবং ‘আমানত’ ও ‘আত্মীয়তার বন্ধন’ সেখানে উপস্থিত হয়ে পুলসিরাতের ডানে বামে অবস্থান করে নেবে। (আংশিক)

মুসলিম শরিফের এই হাদিসের বর্ণনায় প্রতীয়মান হয়, মানবজাতির পুলসিরাত অতিক্রমকালে ‘আমানত’ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থেকে পুলসিরাত পারাপার ও বেহেশতে প্রবেশের যোগ্যতা প্রমাণের সাক্ষ্য হিসেবে কাজ করবে এবং তার দেয়া সাক্ষ্য অনুসারে মানুষের পুলসিরাত পারাপারের গতি ও প্রকৃতি, এমনকি সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ণীত হবে বলে হাদিসটির বাকি অংশে উল্লেখ রয়েছে। ভেবে দেখুন, আমরা এ অপরিহার্য সুন্নতটির প্রতি কতই না উদাসীন হয়ে থাকি।

হাতে গোনা পোশাকি সুন্নত মেনে চলে আত্মতুষ্টিতে ভোগী আর অন্যকে মন্দারোপ করি। অথচ হতে পারে আমার চেয়েও ওই ব্যক্তি অধিক সৎ ও নিরাপদ, যদি তার ভেতরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শিক বৈশিষ্ট্য ও চারিত্রিক সুন্নতসমূহ থেকে থাকে, যা হয়তো আমার মধ্যে ততটা নেই বা আদৌ নেই। আমরা কি এভাবে কখনো ভেবে দেখি!

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ অনুযায়ী আমানত গ্রহণ, সংরক্ষণ ও যথাযথ আদায়ের পবিত্র সুন্নতটি পালনের জন্য আল্লাহর কাছে যোগ্যতা ও মানসিকতা কামনা করা আমাদের উচিত। সেই সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেই মেঘে ঢাকা সুন্নতের পাবন্দ হওয়া উচিত। যা কেবল মানুষের চোখে ইজ্জত ও সমীহই বৃদ্ধি করে না, বরং ঈমান, তাকওয়া ও খুলুসিয়াতের পরীক্ষাও নেয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দিন। আমীন!



 

Show all comments
  • খোরশেদ আলম ১২ আগস্ট, ২০২০, ২:১৪ এএম says : 0
    এটা ইসলামের শিক্ষা
    Total Reply(0) Reply
  • শামীম সারোয়ার ১২ আগস্ট, ২০২০, ২:১৬ এএম says : 0
    লেখাটির জন্য লেখককে মোবারকবাদ জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply
  • রুহান ১২ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৭ এএম says : 0
    ইমানদাররা কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যায় করে না
    Total Reply(0) Reply
  • আজিজ ১২ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৮ এএম says : 0
    আল্লাহ যেন আমাদেরকে পরিপূর্ণ ইমানদার বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করেন।
    Total Reply(0) Reply
  • নুরজাহান ১২ আগস্ট, ২০২০, ১:০৩ পিএম says : 0
    আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ অনুযায়ী আমানত গ্রহণ, সংরক্ষণ ও যথাযথ আদায়ের পবিত্র সুন্নতটি পালনের জন্য আল্লাহর কাছে যোগ্যতা ও মানসিকতা কামনা করা আমাদের উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • ahmed hossain khan ১৪ আগস্ট, ২০২০, ৮:২৯ এএম says : 0
    aklakun nobi ba nobijir coritro sommonde amader sobar jana ucit nobijir adorso amader jibon japon a taka joruri,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন