পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
টানা ১১ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সোমবার (১০ আগস্ট) দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে কমেছে ডিএসইর প্রধান সূচক। সিএসইতে সবকটি সূচক বেড়েছে।
টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর শেয়ারবাজারের এই দরপতনকে স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, টানা উত্থানের পর কিছুটা মূল্য সংশোধন হওয়া স্বাভাবিক। তাছাড়া নতুন প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদন করার জন্য কিছু বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির কিছুটা চাপ বাড়িয়েছেন। এ কারণেই এই মূল্য সংশোধন হয়েছে।
আস্থা সংকট আর মহামরি করোনাভাইরাসের প্রকোপে নিস্তেজ হয়ে পড়া দেশের শেয়ারবাজার প্রায় দেড়মাস ধরেই উর্ধ্বমুখী। রোববার পর্যন্ত টানা ১১ কার্যদিবস টানা বাড়ে সূচক। এই টানা উত্থানে ৪৭৫ পয়েন্টে বাড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক। এর মধ্যে রোববারই বাড়ে ১৮০ পয়েন্ট।
এই বড় উত্থানের পর সোমবার লেনদেনের শুরুতেও শেয়ারবাজারে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। প্রথম ১০ মিনিটের লেনদেনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এরপর বিক্রির চাপ বাড়ায় নিম্নমুখী হয়ে পড়ে সূচক। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৫৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
শেয়ারবাজারের এই চিত্র সম্পর্কে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সম্প্রতি বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যে কারণে শেয়ারবাজারে টানা উত্থান প্রবণতা দেখা যায়। টানা উত্থানের পর কিছুটা মূল্য সংশোধন হওয়া স্বাভাবিক। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
বিনিয়োগকারী তুহিন বলেন, ঈদের আগে থেকেই শেয়ারবাজারে টানা উত্থান হয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় পাঁচশ’ পয়েন্ট বেড়েছে। এরপর আজ সূচক ১২ পয়েন্ট কমেছে। এটাকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই দেখছি। আশাকরি শিগগির বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, ওয়ালটনের আইপিও আবেদন শুরু হয়েছে। কোম্পানিটি আইপিওতে স্বল্প সংখ্যক শেয়ার ছাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই সবাই ধারণা করছে সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেশ বাড়বে। এ কারণে কোম্পানিটির আইপি ধরতে বিনিয়োগকারীরা উদগ্রীব। তাছাড়া নতুন আরও কোম্পানির আইপিও আসছে। এ কারণে কেউ কেউ শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলছেন। যে কারণে আজ বাজারে এক প্রকার সেল প্রেসার দেখা দেয়। যা মূল্যসূচকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আর এক বিনিয়োগকারী মিল্টন বলেন, বিএসইসির নতুন কমিশন কয়েকটি দুর্বল কোম্পানির আইপিও বাতিল করেছে। আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন ভূমিকা আমরা দেখিনি। স্বাভাবিকভাবেই এই কমিশনের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে। আর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়লে বাজারে টাকার অভাব হবে না। তখন স্বাভাবিকভাবেই বাজার ভালো হবে।
তিনি বলেন, ঈদের আগে থেকে শেয়ারবাজারে যে টানা উত্থান হচ্ছে তাতে বিনিয়োগকারীদের লোকসান কিছুটা কমেছে। তবে বিনিয়োগকারীরা লোকসান এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম এখন বেশ কম দামে লেনদেন হচ্ছে। বিএসইসির নতুন কমিশন তাদের বর্তমান অবস্থা ধরে রাখতে পারলে আশাকরি বাজারে সুদিন ফিরে আসবে। তখন বিনিয়োগকারীরা লাভের মুখ ও দেখবেন।
এদিকে প্রধান সূচক কমলেও বেড়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচক। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট ১ হাজার ৫৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া ১১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৭টির। আর ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এই মূল্য সংশোধনের দিনে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা কমেছে। তবে ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ১২৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৮০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৮৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪৪টির দাম কমেছে এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।