Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবনে আদিপাত্য বিস্তার করতে জেলেদের উপর হামলা চালিয়েছেন শরণখোলার ভাইস চেয়ারম্যান

শরণখোলা (বাগেরহাট) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২০, ৩:০৬ পিএম

সুন্দরবনে আদিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শরণখোলা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ একটি মাছ ধরা ট্রলারের হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় তিনি ও তার লোকজন জেলেদের মারধর করে ৩৮ পিচ ইলিশ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। গত রোববার বিকেল ৫টায় দিক্ েবঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের বালুর খালে এ ঘটনা ঘটে। আহত জেলেরা সোমবার সকালে ফিরে এসে শরণখোলা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
উপজেলার সোনাতলা গ্রামের আঃ হক খানের পুত্র জেলে মামুন (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানান, তারা বন বিভাগ থেকে পারমিট নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে যান। প্রতিকুল আবহাওয়ার কারনে তারা ইলশ ধরে সাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের বালুর খালে অবস্থান করছিলেন। এসময় শরণখোলা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে জেলেদের উপর হামলা চালায়। তারা লাঠি সোটা নিয়ে জেলেদের মারপিট করে এবং দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এসময় জেলেদের ট্রলারে থাকা ৩৮ পিচ ইলিশ মাছ ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। মারপিটে আহত অন্য জেলেরা হচ্ছে, উপজেলার সোনাতলা গ্রামের হেমায়েত হাওলাদারের পুত্র রাসেল (২০), আনেছ হাওলাদারের পুত্র রাসেল (২২), নুর হোসেন ফরাজির পুত্র নান্টু (৪০), ছায়েব আলী মল্লিকের পুত্র নুর ইসলাম (৫০) ও দেলোয়ার হাওলাদারের পুত্র আনোয়ার (৪০)।
আহত জেলেরা জানায়, ভাইস চেয়ারম্যান পারভেজের দাবী বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকা তার দখলে। ওই স্থানগুলোতে মাছ ধরা বা আবস্থান করলে তার অনুমতি লাগবে। ২৫ হাজার টাকা দিয়ে তার অনুমতি না নিয়ে ওই স্থানে অবস্থান করায় তিনি জেলেদের উপর হামলা করেন।
জেলেরা জানান, এসময় ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে ছিল উপজেলার বকুলতলা গ্রামের সাবেক বনদস্যূ আলম হাওলাদার (৪৫), সাবেক বনদস্যূ বাহিনীর প্রধান ছাত্তারের ছোট ভাই নাছির হাওলাদার (৪০), একাদিক মাদক মামলার আসামী জাহিদ (৪৩), সোনাতলা গ্রামের আঃ মালেক হাওলাদারের পুত্র হত্যা মামলার আসামী জাকির (৪২)।
সংশ্লিষ্ট সোনাতলা গ্রামের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ডালিম জানান, তাদের গ্রামের মামুনসহ বেশ কিছু জেলে প্রায় ১০ বছর ধরে ওই এলাকায় মাছ ধরে আসছে। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান তার আধিপাত্য বিস্তার করতে জেলেদের মারপিট করে চরম অন্যায় করেছেন।
সুন্দরবনের মাছ ব্যাবসায়ী এমাদুল শরিফ, খলিলুর রহমান মৃধা, জাহাঙ্গির হোসেন হিরু, রহিম হাওলাদার, শাহআলম জানান, সুন্দরবনে ভাইস চেয়ারম্যান পারভেজ লোকজন নিয়ে জেলেদের উপর হামলা ও মাছ লুট করে নেওয়ার ঘটনার বিচার দাবী করেন।
সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান পারভেজ বন বিভাগরে অনুমতি না নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে আশ্রয় নেয়া জেলেদের মারপিট করেন।
বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, ইলিশের পারমিট নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া কিছু জেলেদের ভাইস চেয়ারম্যান পারভেজ মারপিট করছে বলে তাকে জানিয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান কিভাবে সেখানে গেল তা খোজ খবর নেয়া হচ্ছে।
শরণখোলা থানার অফিসার ইন চার্জ এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, মৌখিকভাবে এ অভিযোগ পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে আহত জেলেদের সাথে বলে ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন। এখন লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামানের সাথে কথা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ০১৭১৩৮৬৫৮০৫ মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুন্দরবন

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ