Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন পূরণ হলো না রত্নার

রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশের কেওক্রাডংয়ের চুড়া স্পর্শ করার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল রেশমা নাহার রত্নার পাহাড়ে অভিযান। স্বপ্ন ছিলো এভারেস্ট জয় করা। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। গতকাল সকালে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় ভেঙে গেছে রতœার সেই স্বপ্ন। সাইকেল চালানো অবস্থায় গতকাল সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন পর্বতারোহী রতœা। পুলিশ গাড়ি আটক বা চালককে গ্রেফতার করতে পারেনি।

পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে হাতিরঝিলে বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়ানোর পর মিরপুরের বাসায় সাইকেল চালিয়ে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন রতœা। শেরেবাংলা নগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষিকা রতœা বাইসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস তাকে চাপা দেয়। নিহত রতœা ধানমন্ডি এলাকার আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। মিরপুর এলাকায় থাকতেন।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক মেসবাহ সুমন জানান, জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন লেক রোড দিয়ে সাইক্লিং করার সময় একটি প্রাইভেটকার তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে তিনি মাথায় বাজেভাবে আঘাত পান। পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরো জানান, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে রতœার লাশ নড়াইলে গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়েছে। সেখানে দাফন সম্পন্ন করা হবে।

সংসদ ভবন এলাকার সিসি টিভির ফুটেজ দেখার অনুরোধ জানিয়ে মেসবাহ সুমন বলেন, এটি যেহেতু ভিআইপি এলাকা, নিশ্চয় সিসি ক্যামেরা আছে। আমরা আশা করব, পুলিশ সিসি ক্যামেরা দেখে বের করবেন, দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে। রতœা কি অসাবধান হয়ে সাইকেল চালাচ্ছিলেন, নাকি বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে অন্য কেউ তাকে চাপা দিয়েছে। সাড়ে ৯টায় রতœা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আলোর ইশকুলের জুম ক্লাসে উপস্থিত থাকার কথা ছিল, আগের দিনও আমাদের সঙ্গে ছিল। তার এমন মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। রতœার গ্রামের বাড়ি নড়াইল শহরের চিত্রাপাড়ে। পেশাগত জীবনে তিনি সরকারী প্রাইমারিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি পর্বতারোহণসহ বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন তিনি। তার বাবা এস আফজাল হোসেন একজন বীরবিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। গত বছর নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে উচ্চতর পর্বতারোহণ কোর্স সম্পন্ন করেন তিনি।

এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেওক্রাডংয়ের চুড়া স্পর্শ করার মাধ্যমে শুরু হয় রতœার পাহাড়ে অভিযান। এ পর্বতারোহী ২০১৯ সালে ২৪ আগস্ট ভারতের লাদাখে অবস্থিত স্টক কাঙ্গরি পর্বত (৬১৫৩ মিটার) এবং ৩০ আগস্ট কাং ইয়াতসে-২ পর্বত (৬২৫০ মিটার) সফলভাবে আরোহণ করেন। এছাড়া ২০১৮ সালে আফ্রিকার উচ্চতম পর্বত মাউন্ট কিলিমানজারো ও দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বত মাউন্ট কেনিয়া অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। পর্বতারোহী ও সাইক্লিস্ট উদ্যমী এই তরুণী বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের লাইব্রেরি, আলোর ইশকুলের কর্মসূচি, পাঠচক্রসহ নানা উদ্যোগে যুক্ত ছিলেন।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ