বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বিপুল পরিমাণ চোরাই তামার তার নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক কোটি টাকার এই তারের মালিকানা স্বীকার করছে না কেউ। স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, উদ্ধার হওয়া তার আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের। একটি প্রকল্পের কাজের জন্যে এই তার মজুদ ছিলো। ওই প্রকল্পের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে যোগসাজশে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি দুর্বৃত্ত চক্র ২৪ জুলাই গভীর রাতে তার চুরি করে বাইরে বিক্রি করে দেয়। পরদিন ২৫ জুলাই আশুগঞ্জের জগদীশপুর থেকে পুলিশ এসব তার উদ্ধার করে। সহিদ মিয়া নামে এক ভাংগারী ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে এসব তার উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। সহিদ মিয়ার স্ত্রী চর চারতলা গ্রামের রমজান ও সোহেলের নাম জানালেও পুলিশ এখন পর্যন্ত তাদের আটক করেনি। এ ব্যাপারে পরিত্যক্ত অবস্থায় তার উদ্ধার ও কোন আসামীর নাম উলেখ না করে একটি মামলা দেয় আশুগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনার এক সপ্তাহ হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমির হোসেন জানান, জগদীশপুরের সহিদ মিয়ার বাড়িতে মজুদকৃত চোরাই তার অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে তারুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বাদল সাদিরকে সঙ্গে নিয়ে যাই। আশুগঞ্জ থানার এসআই মানিক ও সাইফুল ঘটনাস্থলে দীর্ঘ সময় অবস্থান করার পর আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ফোন পেয়ে তার উদ্ধার না করেই অভিযান বন্ধ করে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। আমি বিষয়টি পুলিশ সুপার ও এএসপি সার্কেলকে অবহিত করি। এরপর পুলিশ ভোররাতে তার উদ্ধার করে। তারের পরিমাণ নিয়ে ওসি সঠিক তথ্য না দিয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রথমে জানান, ২০/২৫ কেজি। পরে এএসপি সার্কেল আসার পর সেটি হয় ১টন। আসলে তারের পরিমান হবে ৩/৪ টন। ১৪টি বস্তায় তার ভরা ছিলো। এক কেজি তামার তারের মূল্য ১২শ’ টাকা। সহিদ মিয়ার স্ত্রী আমাদের জানিয়েছে, তারের মালিক তারুয়ার সোহেল ও চরচারতলার রমজান। ফোনে রমজান ভাইস চেয়ারম্যান আমির হোসেনকে জানান, তার চুরি করে আনার সময় পুলিশ গাড়ি আটক করলে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়। ভাইস চেয়ারম্যান জানান, তারের খোসা এখনো সহিদ মিয়ার বাড়ির একটি ঘরে রয়েছে। কিন্তু তারা পরিত্যক্ত অবস্থায় তার পাওয়ার কথা বলছে। ঘটনাস্থল সহিদ মিয়ার বাড়ি থেকে যে গাড়িতে করে তার অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছিল সেই গাড়ির চালককেও ছেড়ে দেয় পুলিশ। আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, তারের মালিক খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা অনুসন্ধান করছি। বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে আশুগঞ্জের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোনো প্রতিষ্ঠানই চুরি হওয়া বিপুল পরিমাণ তারের মালিকানা দাবি করেনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শাহরিয়ার আল মামুন বলেন, উদ্ধার হওয়া এই তামার তার আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বা রেলওয়ের হতে পারে। তবে তারগুলো সরকারি কোনো কার্যালয় থেকে চুরি হয়েছিল। তবে আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বা রেলওয়ের বিদ্যুৎ সামগ্রী চুরির ঘটনা ঘটে আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওই প্রকল্পটিতে। এদিকে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে থানা পুলিশের সঙ্গে মোটা অংকের টাকা রফাদফা হয়েছে বলেও আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।