বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে সর্বস্তরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও কোনো প্রভাব পড়েনি জনসাধারণের মাঝে। এমন অসচেতনতাকে অশনিসঙ্কেত বলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিনের।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনায় এক রিকশাওয়ালা বলেন, মাস্ক পকেটে আছে। সবাই পরা বাদ দিছে অনেক আগে। তাই আমিও পরি না। আরেকজন বলেন, মাস্ক পরলেই কি ভাইরাস রোধ করা সম্ভব? সবকিছু চলছে আগের মতোই। মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা ও দৈনন্দিন কাজ করছেন অনেকেই। বরং দিন দিন স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়ছেন বেশিরভাগ মানুষ। ফলে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি যেমন বাড়ছে, ঠিক তেমনি বাড়ছে সংক্রমণ ঝুঁকিও। করোনা মহামারীতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার পরও নগরবাসীর এমন অসচেতনতা চোখে পড়ার মতো। তবে মাস্ক না পরলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হলেও জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে নেই কোনো শাস্তির বিধান। তাই শাস্তির কথা উল্লেখ করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
তারা বলছেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। তাই যেভাবেই হোক সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে পরিপত্র জারি এবং তা বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হলেও অনেকেই বলছেন নির্দেশনা সম্পর্কে তারা জানেন না। জানলেও অনেকে মানছেন না। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা বলেন, মাস্ক নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা দরকার। এতেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে প্রশাসনের উচিত জেল-জরিমানা করা। তাহলে মানুষ ভয়ে নিয়মিত মাস্ক পরে চলাফেরা করবে। এ প্রসঙ্গে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মাস্ক পরা জরুরি। সবাই যদি মাস্ক পরে তাহলে কিন্তু ৯৯ ভাগ নিরাপদ থাকতে পারব। মনে করেন, আমি আক্রান্ত কিন্তু আপনি নন। এখন আমি যদি মাস্ক পরি তাহলে আপনি ৭০ ভাগ নিরাপদ। আর আমি যদি মাস্ক না পরি কিন্তু আপনি পরেছেন তাহলে ২৫ ভাগ নিরাপদ। আর আমরা যদি দুইজনই মাস্ক পরি তাহলে আপনি ৯৫-৯৭ ভাগ নিরাপদ। আমরা জানি না কে আক্রান্ত। তাই সকলকেই মাস্ক পরতে হবে। তাহলে সবাই নিরাপদ থাকতে পারব।
সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর, দাউদকান্দি, চান্দিনা এবং পদুয়ার বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাস্ক ছাড়া দেদারসে ঘুরছেন অনেকেই। কারো কারো মাস্ক থুতনিতে আটকানো। কেউ আবার নাকের নিচে মাস্ক নামিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। কেউ কেউ আবার মাস্ক খুলে ধূমপান করতে করতে রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। অধিকাংশ রিকশাচালক থেকে শুরু করে শপিংমলের বিক্রেতারাও মাস্ক না পরেই কাজ করছেন।
বিভিন্ন শপিংমল ও বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাস্কহীন ও শারীরিক দূরত্ব লঙ্ঘন করেই চলছে বেচাকেনা। ক্রেতাদের বেশিরভাগের থাকলেও বিক্রেতাদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। মাস্কের কথা তুলতেই তারা নানা অজুহাত দেন। মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে কান্দিরপাড় এলাকার চা দোকানি সাইফুল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বেশিক্ষণ মুখে মাস্ক রাখলে তার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তাই গরমের কারণে মাস্ক খুলে রেখেছি।
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা প্রসঙ্গে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ঘরের বাইরে ও অফিস-আদালতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ এ ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা পালন করবে। কোনো অবস্থায়ই মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না। মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে আরো কঠোর হতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।