Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেকো ওগুরা’র কাছে হিরোশিমার অভিজ্ঞতা শরীর থেকে চামড়া খসে পড়ার মতো বীভৎস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ৭:৪০ পিএম

কেকো ওগুরা’র কাছে হিরোশিমার অভিজ্ঞতা শরীর থেকে চামড়া খসে পড়ার মতো বীভৎস ছিল। তিরাশি বছর বয়স্কা জাপানের কেকো ওগুরা’র এখন নিরাপদ অবসর জীবন কাটানোর কথা। কিন্তু তিনি এখনও এ্যাকটিভিস্ট।

বৃহস্পতিবার হিরোসিমা দিবস উপলক্ষ্যে জাপানের মোতোয়েসু নদীতে হাজার হাজার প্রদীপ ভাসিয়ে পারমানবিক বোমায় হিরোশিমা শহরের নিহতদের স্মরণ করার সময় গুগুরার নাতনি সুৎজি জানান, তার নানি পারমানবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া একজন সারভাইভর ।
জাপানের হিরোশিমা শহরে আমেরিকার আনবিক বোমা হামলা চালানোর পঁচাত্তর বছর পূর্তি হলো বৃহস্পতিবার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত হবার পর থেকেই আমেরিকানরা বলে আসছে যুদ্ধের সমাপ্তি টানার জন্য হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমানবিক বোমা হামলা চালানো জরুরী হয়ে পড়েছিল।

অথচ জাপানের ওই দুই শহরে বোমার বিস্ফোরণ এবং পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এক লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কেকো ওগুরা বিবিসিকে বলেন, যখন প্রথম পারমানবিক বোমাটি বিস্ফোরিত হয়, তখন হিরোশিমার শহরতলীতে নিজের বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন কেকো। তিনি বলেন, অবর্ণনীয় শব্দ আর তীব্র আলোকচ্ছটা ঘিরে ধরে আমাকে। আমি ছিটকে রাস্তায় পড়ে যাই। তারপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আরো পরের দিকে আহত ভয়ার্ত মানুষেরা কেকোর বাড়ির আশপাশে জড়ো হতে থাকে।মনে হচ্ছিল চামড়া খুলে খুলে পড়ছিল।

তিনি বলেন, আমেরিকার এ বর্বরতা আমি জীবনেও ভুলব না। তাই আমাদের জাতি এখন বিশ্বরাজনীতি নিয়ে কোনো দ্বন্ধে লিপ্ত হয় না কারো সাথে। আমরা যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। আমি যেসব দেশে গিয়েছি একজন সারভাইভর হিসেবে সেখানে শান্তির কথাই বলেছি।

তিনি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ১৯৪৫ সালের ৫ আগস্ট তারিখে বিমান হামলার সতর্কতার সাইরেন অনেকবার বেজে উঠেছিল, তবে কোনো রকম বোমা হামলা সেদিন হয়নি। আমরা সবাই বাড়িতে ছিলাম এবং পরদিন সকালে আমার স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবা বলেছিলেন, তাঁর মনে হচ্ছে কিছু একটা যেন ঘটে যেতে পারে, তাই আমি যেন স্কুলে না যাই। তবে আমার তেমন মনে হয়নি। সকাল সোয়া আটটার একটু আগে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ ও সেই সঙ্গে উজ্জ্বল আলো আমাকে দিশেহারা করে ফেলে। এর ঠিক পরপর চারদিক অন্ধকার হয়ে অদ্ভুত এক নীরবতা নেমে আসে। বুঝতে পারছিলাম না আমার কী করা উচিত। আর ঠিক তখনই আমি কান্নার শব্দ শুনতে পাই। বুঝতে পারছিলাম এটা আমার ছোট ভাইয়ের কান্নার শব্দ। সেই শব্দ আমাকে অবচেতন অবস্থা থেকে জাগিয়ে তোলে এবং আমি দৌড়ে বাড়ি ফিরে যাই। ঘরে সবকিছু লন্ডভন্ড অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ