বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিভিন্ন অপকর্মের মহানায়ক বলা হয়ে থাকে সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের মজনু চেয়ারম্যানকে। ডাকাত ও ছিঁচকে চোর থেকে তিনি এখন সদরের সবচেয়ে প্রভাবশালী ডাকাত চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিত। গত ৭ জুলাই জেলা পুলিশি অভিযানের পর থেকে সুযোগ বুঝে তিনি এখন পলাতক অবস্থায় রয়েছেন। গত ভোটে তিনি একপ্রকার জোর করে ভোট ছিনতাই করে চেয়ারম্যান বনে যান তিনি। এলাকায় একটি কথা প্রচার রয়েছে মজনুর নিজ ওয়ার্ডে ইউপি মেম্বার দাড়াঁলে যিনি হতে পারেন না তিনি হয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। শহরের ফুয়াদ, বরকত ও রুবেলের হাতুরি বাহিনীর ভয় ও টাকার জোরে তাকে চেয়ারম্যান বানিয়ে নেয়া হয়। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে এপিএস ফুয়াদ মুনিবের কথা পালন শুরু করেন তিনি। শুরু হয় ষ্টিমরোলার দলের ত্যাগী নেতাদের উপর। এক এক করে দলের সকল নেতাকে সড়িয়ে তিনি হয়ে পড়েন ইউনিয়নের একচ্ছত্র অধিপতি। এরই ভিতর ইউনিয়নের গঠন করেন শহরের সাথে মিল রেখে হাতুরি বাহিনী। আর তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই শুরু হয় হাতুরি বাহিনী দিয়ে নির্মম অত্যাচার। এদিকে বর্তমান সিআইডির করা দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলার সাথে তার নাম জরিত বলে জানা যায় বিভিন্নসূত্র থেকে।
ইউনিয়নের প্রায় সকলেই জানান, এই হাতুরির বাহিনীর কাছে রয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্র সহ দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র। আর এই অস্ত্রের ভান্ডার তিনি বাগিয়ে নিয়েছেন পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত নায়েব আলীর কাছ থেকে। লোকমুখে শোনাযায় এই নায়েব আলির এক সময়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন মজনু। এক পর্যায়ে সেখান থেকে তিনি বেড়িয়ে এসে গঠন করেন আরেকটি বাহিনী।
এই বাহিনী দিয়ে তিনি ইউনিয়নের রাস্তার কোটি কোটি টাকা মূল্যর গাছ কেটে নিয়ে যান। এছ্ড়াা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জনের জমি দখল শুরু করে তার বাহিনী দিয়ে। আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান হয়ে তার পাশে ডেকে নেন সব বিএনপি ও জামাতপন্থি মেম্বার ও সেই সকল মতাদর্শি লোকজনকে।
আর তার ভয়ের কারনে এলাকা ছাড়েন এলাকার অনেক পুরনো আওয়ামীলীগ নেতাকর্মি। শহরের এপিএস ফুয়াদের আর্শিবাদে তিনি দিনকে দিন হয়ে উঠেন আরো বেপরোয়া। তার বেপোরায় এতটাই যা হার মানায় দেশের সকল ত্রাস কৃত মস্তানদেরও। তিনি ঠিকাদারি ও ইউনিয়ন থেকে যে অবৈধ টাকা আয় করেন তার ভাগ মুনিবকে দিয়ে মিলে মিশে বিরাট স¤্রাজ্য গড়েছেন।
নারী আসক্তকারী মজনু চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার নারী আসক্তি আরো বেড়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় তিনি ধরা পড়তে থাকেন নারীদের সাথে নষ্টামি করার সময় হাতেনাতে। সুন্দরি নারী দেখলেই তিনি তাদেরকে জোর করে ভোগ বিলাস করতেন। কয়েকবার তার বর্তমান স্ত্রীর হাতে দূর্গাপুর এলাকার প্রবাসির স্ত্রীর ঘরে হাতেনাতে ধরা পড়েন। যে বিষয়টি তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে বলে ইউনিয়নবাসি সংবাদকর্মিদের জানান।
বিচার শালিস করতে তিনি গঠন করেন একটি টিম সেই টিমের নেতৃত্ব দেন ইউপি বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শালিস সেকেনদ্বার মেম্বার ওরপে লিটন, শহিদুল মেম্বার, শহিদ, মামা চুন্ন, লিটন, রানা, শামিম, ইমাম, মান্না সহ অনেক বাজে স্বভাবের লোক। তাদের ধার্য্য করা শালিস থেকে আসা দালালি টাকার ভাগ সর্বোচ্চ নেন তিনি। এক্ষেত্রে অনেক সময় টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের সাথে মতের মিলও অনেক ক্ষেত্রে দেখা দেয় বলে জানান অনেকে।
লক্ষিদাসের হাটের বাবুদের জমি সেকেন মেম্বারকে দিয়ে কৌশলে বাগিয়ে তিনি দখল করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাবু পরিবারের সন্তান মানিক বাবু ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি। এছাড়াও ঈশানগোপালপুর জমিদার টোকনদের জমি তিনি আত্মসাতের চেষ্টা চালান এবং তাদেরকে ব্যাপক নাজেহাল করে শহরের এক নেতার নির্দেশে।
তার বাহিনী দিনে দুপুরে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নজনকে কুপিয়ে মৃত্যর মুখে ঠেলে দিলেও মামলা করতে অনেকে পারেনি। যদিও কেউ বা মামলা করতো তবে তিনি পাল্টা মামলা দিয়ে তাদেরকে উল্টো নাজেহাল করে বাড়ি ছাড়া করে দেওয়া হতো।
আরিফ বাজারে একজনের জমি দখল নেওয়ার পায়তারা করে তার বাহিনী। এসময় তারা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে উল্টো গ্রাম্য পুলিশ দিয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে তাদের নামে বানোয়াট মামলা দেন চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে ভুক্তিভোগিরা জানান আমরা কিছু করেছি কিনা তা বর্তমান পুলিশ প্রশাসন গ্রাম্য পুলিশদের জেরা করলে সত্যি ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
সরোজমিনে এলাকাবাসি আরো জানান, তার বাহিনী এর আগে শিবরামপুর, বারোখাদা ব্রীজ ও ঈশানগোপালপুর এলাকায় যতো ডাকাতি ও ছিনতাই এর ঘটনা ঘটেছে তার সব কিছুর সাথে মজনু চেয়ারম্যান জরিত। তারা বলেন ইউনিয়নের লক্ষ লক্ষ টাকা দামের গাছ কেটে তিনি তার ঠিকাদারি কাজ করেছেন। তারা বলেন ঈশানগোপালপুর স্কুলের যত কাঠের কাজ হয়েছে তার সবটাই চুরি করা ইউনিয়নের রাস্তার গাছ দিয়ে করা হয়েছে। এছাড়া তিনি বাইরে যত কাজ তিনি করেছেন সব তিনি রাতের আধারে রাস্তার গাছ কেটে তিনি করেছেন তার বাহিনী দিয়ে।
গত কদিন আগে দূর্গাপুরের পান্নুর উপর লক্ষি দাসের উপর হামলা করে তার হাতুরি বাহিনী। সেই বাহিনীর নির্মম হামলায় একটি মামলা করা হয়। উপরের নেতার তদবিরে দেয়া হয় উল্টো মিথ্যা ডাকাতির পাল্টা মামলা। এরপর মারামারির মামলা তাদেরকে দিয়ে আবার উঠিয়ে নিয়ে আসে ভয়ে দেখিয়ে। এরপর আবার সেই মামলা পুলিশ জানতে পারায় আর ধামা চাপা দিতে পারে নাই। এখন সেই মামলায় আসামীদের আটক করা হচ্ছে বলে জানাগেছে। এই ঘটনার হুকুম দাতা মজুন চেয়ারম্যান বলে স্থানীয়রা জানান। তার নিদের্শে এই হামালার কথা স্বীকার করেছেন অনেকে।
সরোজমিনে আরো জানা যায়, তার একটি টর্চার সেল রয়েছে ঈশানগোপালপুর পরিষদের পাশে হাসপাতালে সেখানে নিয়ে গিয়ে তিনি তার বিরোধী মতালম্বিদের উপর টর্চার করতো বলে লোক মুখে শোনা যায়। তার ত্রাসের রাজত্বে এলাকা ছাড়া নেতাকর্মিরা এখন এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে। তার তৈরি জামাত বিএনপির লোক দিয়ে তৈরি পকেট কমিটি গুলো ভেঙ্গে নুতুন করে ইউনিয়ন কমিটি করা ও তার মতো একজন ডাকাত চেয়াম্যানকে তার পদ থেকে বিতারিত করতে পারলেই কেবল ইউনিয়নের সাধারন অসহায় মানুষ খুশি হবে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে জানাতে মজনুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিতে চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে গত কদিনে সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের কয়েকজন নাম করা সন্ত্রাসীকে আটক করে পুলিশ। হাতুরী বাহিনী সন্ত্রাসীদের আটকের খবরে এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। সেই সাথে তারা দাবী জানিয়েছে যে চেয়ারম্যান মজনু সহ তার বাহিনীর অন্য সব সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হইক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।