বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মহামারি করোনা সঙ্কটে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এবারের ঈদুল আজহায় চির চেনা চিত্র আর নেই। সর্বত্রই হতাশা আর অজানা অনিশ্চয়তার চিত্র। ঈদকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলে ঘরমুখি জনশ্রোত নেই। কোরবানির পশুর হাটগুলোতে গতকাল বৃহস্পতিবার কিছুটা ক্রেতা সমাগম ঘটলেও তা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। তৈরি কাপড়, প্রসাধন সামগ্রী আর মুদি-মনিহারি দোকানেও স্বাভাবিক ভিড় নেই। দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে রমজানের ঈদের মত ঈদুল আজহার খুশিও মিলিয়ে যেতে বসেছে করোনা সঙ্কটে।
প্রতিবছর দু’টি ঈদের আগে-পরে রাজধানী ছাড়াও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে নূন্যতম দশ লাখ করে মানুষ নাড়ির টানে প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করতেন। শুধু ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা নৌপথেই ৩০টি নৌযান ঈদের আগের ৫ দিন ও পরের এক সপ্তাহ ডবল ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করত। এবার তা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে কিছু বাড়তি যাত্রী দক্ষিনাঞ্চলে যাত্রা করেছে নিয়মিত ট্রিপের নৌযানে। কোন বিশেষ সার্ভিস এবার নেই। বেসরকারি নৌযান মালিক-শ্রমিকদের অভিমত, ‘অন্য বছরের তুলনায় অন্তত ৭০ ভাগ যাত্রী এবার কম চলাচল করছে ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে’। সড়ক পথেও একই চিত্র।
কোরবানির পশুহাটে গতকাল বৃহস্পতিবার কিছু ক্রেতা সমাগম হলেও বেশিরভাগ হাটেই পশুর চেয়ে ক্রেতা কম। তবে দুপুর পর্যন্ত দামে ছাড় দেয়নি বিক্রেতারা। করোনার অর্থনৈতিক সঙ্কটে দক্ষিণাঞ্চলে এবার গত বছরের তুলনায় অন্তত ৪০ ভাগ কম মানুষ পশু কোরবানি করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। ফলে এ অঞ্চলের পশুতেই কোরবানির চাহিদা মিটছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মতে গত বছর দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলাতে ৪ লাখ ৩৪ হাজার পশু কোরবানি হয়েছিল। যা আগের বছরের চেয়ে অন্তত ১৫% বেশি হলেও এবার করোনা সঙ্কটে সম্পূর্ণ বিপরিত চিত্র। অধিদফতরের পরিসংখ্যানে দক্ষিণাঞ্চলে এবার প্রায় ২০ হাজার খামারির কাছে ১ লাখ ১৩ হাজার ১১২টি ষাঁড়, প্রায় ২১ হাজার ৫শ’ বলদ, ১৭ হাজার গাভি, ৫ হাজার ৮শ’ মহিষ, ৩০ হাজার ছাগল ও খাশি এবং প্রায় ৬শ’ ভেড়া কোরবানির জন্য মজুদ রয়েছে।
পারিবারিক পর্যায়ে আরো প্রায় ১০ হাজার বিভিন্ন ধরনের কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। কিন্তু অর্থনৈতিক দূরবস্থায় কোরবানিদাতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় বেশিরভাগ বিক্রেতার মুখেই হাসি নেই। একই চিত্র টেইলারিং সপ, তৈরি কাপড়, থান কাপড় বিক্রেতাসহ প্রায় প্রতিটি ব্যবসার ক্ষেত্রেও। বরিশাল মহানগরীর রেডিমেট গার্মেন্টসের ব্রান্ডসপ থেকে শুরু করে বনেদি টেইলরিং সপগুলো গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্রেতা শূণ্যই ছিল।
মুদি-মনিহারি আর মসলার দোকানেও একই চিত্র। কোথাও ঈদের বেচা কেনা নেই।
গত তিন মাসে বরিশাল মহানগরী থেকে বিপুল সংখ্যক পরিবার গ্রামে ফিরে গেছেন। নিম্নবিত্ত থেকে নিম্ন-মধ্যবিত্ত বহু পরিবারেই নেমে এসেছে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট। ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাই যেখানে সঙ্কটে, সেখানে ঈদের আনন্দ কল্পনা বিলাস বলেই মনে করছেন ঐসব পরিবারগুলো। তাদের সামনে শুধুই হতাশা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।