পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে বিশালাকৃতির গরুর নানান নাম দেয়া হয়। প্রতিবছর পশুর হাটে বড় গরুর নাম দেয়া হয় ‘কালো মানিক, সাদা পাহাড়, টাইগার, লাল বাহাদুর, বীর বাহাদুর সোনামণি- লক্ষ্মীসোনাসহ এমন নানান কিসিমের নাম। রাজধানীর পশুর হাটে বিশালাকৃতির গরুগুলো ক্রেতা ও দর্শকদের কাছে কদর বেশি। কেউ দেখেন চোখ জুড়ান কেউ ক্রয় করেন। কিন্তু এবার কোরবানির পশুর হাটে বিশালাকৃতির গরুর তেমন কদর নেই। তবে বিক্রেতারা জানান, মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আগের তিন চার দিন বেচাবিক্রি না হলেও গতকাল প্রচুর গরু বিক্রি হয়েছে।
কয়েকদিন বেচাকেনা না থাকলেও গতকাল থেকে জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে অন্যবারের তুলনায় এবার হাটে ক্রেতা কম এলেও, পশু বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু থাকলেও ক্রেতারা বলছেন, ব্যাপারীরা দাম ছাড়ছেন না। দাম বেশি চেয়ে বসে থাকছেন। আবার ব্যাপারীরা বলছেন, বড় গরুর তুলনায় ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরুর ক্রেতা কম আসছে। তবে গতকাল রাজধানীর হাটগুলোতে প্রচুর গরু বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের ভাষায় বিক্রির ধুম।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় রাজধানীর শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী কোরবানির গরুর হাটে বীর বাহাদুর ও সোনামণি-ল²ীসোনা নামের বিশালাকৃতির গরু উঠেছে। কিন্তু আগের বছরগুলোর মতো এবার তাদের কদর নেই। শাহজাহানপুরে কোরবানির হাট চালুর প্রথম দিন থেকেই এই হাটের সবচেয়ে বড় গরু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ‘বীর বাহাদুর’ ও ‘সোনামণি-ল²ীসোনা’ নামের বিশালাকার দুটি গরু। কয়েকদিন ধরে গরু দুটি দেখতে মানুষ ভিড় করলেও দাম বেশি হওয়ায় কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কোনো ক্রেতা। এই নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন কুষ্টিয়া বীর বাহাদুদের মালিক মান্নান ব্যাপারি ও সোনামণি-ল²ীসোনার মালিক মো. মজনু শেখ।
রাজধানীর শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী মৈত্রী সংঘের মাঠে বসা কোরবানির গরু হাটে গিয়ে দেখা যায় বিশালাকৃতির গরু খুব কম বিক্রি হচ্ছে। কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলা থেকে বিশাল আকৃতির বীর বাহাদুর নামের গরু নিয়ে এসেছেন আবদুল মান্নান ব্যাপারি। তিনি বীর বাহাদুর সম্পর্কে বলেন, বীর বাহাদুরের বয়স সাড়ে তিন বছর। শখ করে একে সন্তানের মতো লালন পালন করেছি। আদর করে বীর বাহাদুর নাম দিয়েছি। একে নিয়মিত গম, খেসারী, ভ‚ট্টা ভাঙার পাশাপাশি ভাত খাওয়ানো হয়।
গরুটির পেছনে গত তিন বছরে ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে দাবি করে মান্নান ব্যাপারি বলেন, এটি ওরিজিনাল দেশি সিদ্ধি জাতের গরু। আমার নিজের গাভি থেকে বীর বাহাদুরের জন্ম। ২০ মণ ওজনের গরুটি আমি ৮ লাখ টাকা বিক্রি করার জন্য দাম চাচ্ছি। তবে ৬ লাখ টাকা হলেও বিক্রি করব। কিন্তু আড়াই লাখ টাকার বেশি এখনো কেউ দাম বলছে না। মাঝে মাঝে দু’একজন ক্রেতা গরুটির দাম জিজ্ঞাসা করলেও ৮ লাখ টাকার কথা শুনে তারা কোনো দাম না বলেই চলে যাচ্ছেন। শখ করে পালা এই বীর বাহাদুরকে ঢাকায় এনে আমি হতাশ। কারণ কোনো ক্রেতা পাচ্ছি না।
কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলা থেকে সোনামণি-ল²ীসোনা শাহজাহানপুর কোবানির হাটে নিয়ে এসেছেন মো. মজনু শেখ। তিনি চার বছর বয়সী সোনামণি-ল²ীসোনার দাম চাচ্ছেন ৭ লাখ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। ৫ লাখ টাকার কম হলে বিক্রি করবেন না বলে তিনি জানান।
এদিকে শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী কোরবানির হাটে প্রচুর গরু উঠলেও সে তুলনায় ক্রেতা নেই বললেই চলে। অধিকাংশ ক্রেতা এসে গরুর দাম জিজ্ঞাসা করলেও নিজেরা কোনো দাম বলছেন না। ফলে গত গরু বিক্রির পরিমাণ খুবই কম বলে জানিয়েছেন আয়োজক ও গরু ব্যাপারিরা। তাদের অভিমত রাজধানীতে সাধারণ ঈদের আগের দুদিনে মোট গরুর ৮০ শতাংশ বিক্রি হয়। কচুক্ষেত থেকে হাটে গরু কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী মো. সারোয়ার। তিনি বলেন, আজকে গরুর দাম একটু বেশি। মনে হচ্ছে এবার ঈদের আগের রাতে দাম কমে যাবে। পোস্তগোলা থেকে গাবতলী হাটে এসেছেন ব্যবসায়ী মো. আলম। তিনি বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাটে গরুর দাম বাড়ছে।
মেহেরপুর থেকে হাটে এসেছেন মো. আমিনুল ব্যাপারী। তিনি বলেন, আমি এবার হাটে দশটি গরু নিয়ে এসেছি। আমার সবগুলো গরু ছিল গৃহস্থের। সব গরু বিক্রি করে ফেলেছি। গতবারও হাটে গরু এনেছিলাম, কিন্তু লাভ করতে পারিনি। এবার যে দাম পেয়েছি কোনোমতে অল্প লাভে বিক্রি করে দিয়েছি সব গরু। ক্ষতির ভয়ে দুইদিন আগে বিক্রি করে ফেলেছি। আমার দশটা গরু ১৭ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। হাটে বড় গরুর চেয়ে মাঝারি আর ছোট গরুর চাহিদা অনেক বেশি। কাস্টমাররা খালি মাঝারি আর ছোট গরু খোঁজেন।
গাবতলী পশুর হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে। ঈদের আগের রাতে কী হবে আগে থেকে কিছু বলা যাচ্ছে না। করোনাভাইরাস আর বৃষ্টির কারণে শেষ দিন বেচা-কেনা কম হতে পারে। শনিরআখড়া হাটে দেখা গেল বেশ গরু বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার প্রচুর গরু বিক্রি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।