Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষের পিটুনিতে দুই ছাত্র হাসপাতালে

প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

শাহরাস্তির রাজাপুরা ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল (উপাধ্যক্ষ) মিয়া মোহাম্মদ এমদাদ হোসেনের বেদম পিটুনিতে ২ ছাত্র গুরুতর আহত হয়ে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত শিক্ষার্থীরা হচ্ছে- দাখিল ৮ম শ্রেণির ছাত্র হাফেজ মো. মাহমুদুল হাসান (ক্লাস রোল-১৪) ও মো. আবদুল্লাহ আল মামুন (ক্লাস রোল-০৮)। আহত শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন থেকে রাজাপুরা ফাজিল মাদ্রাসায় শ্রেণি কক্ষে ব্লাক বোর্ড সংকট রয়েছে। এবতেদায়ী থেকে ফাজিল (ডিগ্রি) পর্যন্ত হাতেগোনা ৪/৫টি ব্লাক বোর্ড রয়েছে। ক্লাস শেষ হলেই ১ শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে ব্লাক বোর্ড এনে শিক্ষকরা ক্লাস নিয়ে থাকেন। গত মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় ৮ম শ্রেণির ১ম ঘণ্টা শেষে ২য় ঘণ্টার সময় শ্রেণি শিক্ষকের নির্দেশে ৯ম শ্রেণি থেকে মাহমুদুল হাসান ও আব্দুল্লাহ আল মামুন একটি ব্লাক বোর্ড নিয়ে শ্রেণি কক্ষে আসে। ২য় ঘণ্টা শেষে ৯ম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র এ বিষয়ে ভাইস প্রিন্সিপাল হুজুরকে (উপাধ্যক্ষ) বিষয়টি অবহিত করলে তিনি জোড় বেত নিয়ে এসে ৮ম শ্রেণির ক্লাস কক্ষে এসে মাহমুদুল হাসান ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পাঞ্জাবীর কলার চেপে ধরে এলোপাতাড়ি বেত দিয়ে পেটাতে থাকেন। দুটো বেত ভেঙে গেলে আরও দুটো বেত এনে বেদম প্রহার করে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দেন। এক পর্যায়ে দু’শিক্ষার্থীকে কানে ধরিয়ে খোলা আকাশের নীচে (মাদ্রাসা মাঠে) রোদের মধ্যে প্রায় ২ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখেন। দু’শিক্ষার্থীর এ শাস্তি দেখে মাদ্রাসার বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। তারা এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা দু’ছাত্রকে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে। এ বিষয়ে আহত শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, মাদ্রাসায় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করার কোন নিয়ম নেই। অথচ উপাধ্যক্ষ মিয়া মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন অন্যায়ভাবে তাদেরকে এভাবে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছেন। এছাড়াও তিনি পূর্বেও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে এভাবে বেদম প্রহার করেছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক বটে। আমি এ ঘটনায় জড়িত উপধ্যক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। মাদ্রাসা উপাধ্যক্ষ মিয়া মো. এমদাদ হোসেন জানান, শিক্ষার্থীরা আমার কথা না শুনায় আমি তাদের মারধর করেছি। এতে অন্যায়ের কি আছে? তারা নবম শ্রেণি থেকে ব্লাক বোর্ড নিয়ে এসেছে। তাদেরকে কেউ ব্লাক বোর্ডের জন্য বলেনি। কেন তারা ব্লাক বোর্ড এনেছে, সেজন্যই তাদের শাস্তি দিয়েছি। এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসায় কাজে আমি ঢাকায় আছি। মাদ্রাসা থেকে ফোনে আমাকে দু’ছাত্রকে বেদম মারধর ও রোদে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। পরে জানতে পারলাম ওই ২ ছাত্রের মধ্যে আমার ছেলে আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে তিনি বেদম মারধর করেছেন। আমি উপাধ্যক্ষকে ঘটনার কারণ জানতে বার বার মুঠোফোনে কল দিয়েও পাইনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষের পিটুনিতে দুই ছাত্র হাসপাতালে
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ