Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সীমান্তে গুলিতে হত্যা-বন্যার পানিতে সর্বস্বান্ত করছে ভারত -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২০, ৩:০৮ পিএম | আপডেট : ৭:৩৯ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২০

সীমান্তে প্রতিদিন গুলি করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশী হত্যা করছে, অন্যদিকে অভিন্ন নদীর পানি ছেড়ে দিয়ে দেশকে সর্বশান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ভারত অভিন্ন নদীগুলোর সকল বাঁধ-ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে ৩৪টি জেলা ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। তিস্তার চুক্তির কথা ফলা করে এই সরকার প্রচার করলেও গত এক দশকে কোন চুক্তিই করতে সক্ষম হয়নি অথচ একের পর এক ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার, বিদ্যুৎ ক্রয়সহ অসংখ্য অসমচুক্তি স্বাক্ষর করেছে। অন্যদিকে সীমান্তে প্রায় প্রতিদিন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশীদের গুলি করে হত্যা করছে। সে ব্যাপারেও সরকার কোন কার্যকরী প্রতিবাদ জানাতে সাহস পায়নি। এই সরকারের নতজানু পরারাষ্ট্রনীতি কারনে প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষেরা এই বন্যায় আক্রান্ত হয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন প্রায় নিষ্ক্রীয় হয়েছে।

সোমবার (২৭ জুলাই) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, একদিকে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমাগত বাংলাদেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে। একদিকে করোনা মোকাবেলায় সরকারের চরম ব্যর্থতা মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে তুলেছে। অন্যদিকে ভারতের উজান থেকে বন্যার পানি নেমে আসাতে মানুষের সম্পদ, বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে যাওয়া, গোবাদী পুশু মৃত্যু, ফসলহানি দেশের মানুষ সীমাহীন কষ্ট ও অর্থনৈতিক অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলেছে। ভারত অভিন্ন নদী গুলোর সকল বাঁধ ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি, বাংলাদেশে ব্রক্ষ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, মহানন্দ, পদ্মা, তিস্তা ও ধরলা নদীর অববাহিকায় ৩৪টি জেলা ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি জেলা ১ মাসের মধ্যে ২/৩ বার বন্যার পানি উজান থেকে এসে বাড়ি-ঘর, ফসলের ক্ষেত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যে অভিন্ন নদী প্রায় ১৫৪টি একমাত্র পদ্মার ফারাক্কা বাঁধ ব্যতীত কোনটারই কোন পানি বণ্টন চুক্তি ভারতের অনীহার কারনে সম্পূণ হয়নি। করোনা মোকাবেলায় সরকার যেমন একবারেই ব্যর্থ, চরম উদাসীনতা, অবহেলা ও দুর্নীতির কারনে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, ঠিক তেমনি বন্যার বিষয়েও সরকারের নীরবতা, নিষ্ক্রীয়তা, মানুষকে আতংক গ্রস্থ করেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, একজন মন্ত্রী বলেছেন ‘বন্যার বিষয় এতটুকুও চিন্তিত নই’। ভালো কথা। প্রতিদিন গণমাধ্যমে আসছে বন্যার্ত মানুষের আহাজারি, তার অসহায়ত্বের কথা, সহায় সম্বল হারিয়ে সড়কের অথবা বাঁধের ওপরে আশ্রয় নেওয়া, শিশু-সন্তান, বৃদ্ধ পিতা-মাতা নিয়ে খোলা আকাশের নীচে অভুক্ত থাকা - এই বিষয়গুলো তাদের চিন্তিত করে না? তারা তো ধরা-ছোয়ার বাইরে। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা করতে হয় না। করোনা-বন্যা এই সব দুর্যোগ এলে বরঞ্চ তার খুশি হয়। দুর্নীতির নতুন সুযোগ সৃষ্টি হলো বলে।

মির্জা ফখরুল সরকারের এই অবহেলা উদাসীনতার এবং নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে বন্যা প্রয়োজনীয় ত্রাণের যথাযথ ব্যবস্থার গ্রহণের দাবী জানান। তিনি বলেন, বিএনপি সব সময়ই যে কোন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায় Ñ সর্বশেষ করোনা দুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক করে একটি জাতীয় ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা অবিলম্বে কাজ শুরু করবেন। দুর্গত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপি, অঙ্গ-সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সীমান্ত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ