মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জনপ্রিয়তার কারণেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের মধ্যে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগান মার্কেল। সম্প্রতি তাদেরকে নিয়ে লেখা ‘ফাইন্ডিং ফ্রিডম’ নামের একটি বইয়ে এই দাবি করা হয়েছে। ক্যারোলিন ডুরান্ড এবং ওমিড স্কবির লেখা বইটি ধারাবাহিক হিসেবে প্রকাশিত হতে চলেছে এক জনপ্রিয় ব্রিটিশ দৈনিকের রোববারের বিশেষ সংস্করণে।
বইটিতে ব্রিটিশ রাজপরিবারকে নিয়ে বিভিন্ন বিষ্ফোরক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে দাবি করা হয়েছে, হ্যারি-মেগানের আলাদা হওয়ার পিছনের কারণ হচ্ছে তাদের জনপ্রিয়তা। তারা সাধারণের ‘কাছের’ মানুষ ছিলেন। জনপ্রিয়তার নিরীক্ষে একে একে টপকে যাচ্ছিলেন বয়ঃজ্যেষ্ঠদেরও। সেই কারণেই তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন বাকিংহাম প্যালেসে। তার জেরেই শেষ পর্যন্ত রাজপরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে বাধ্য হন ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স। ব্রিটিশ রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এই তথ্যগুলিকে ‘গুজব’ হিসেবে উড়িয়ে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা হলেও হ্যারি-মেগানের আলাদা হওয়ার পিছনে বাস্তব চিত্র নাকি এটাই।
২০১৮ সালে উইনসর কাসেলে হ্যারি এবং মেগানের বিয়ের মধ্যে দিয়ে রাজপরিবারের ইতিহাসে শুরু হয়েছিল এক নতুন অধ্যায়। রূপকথার মতো সেই বিয়ের চাকচিক্য অবশ্য খুব বেশিদিন আড়াল করে রাখতে পারেনি হ্যারি-মেগানের ‘জীবনধারার’ প্রতি রাজপরিবারের অসহিষ্ণুতার কথা। যদিও যত বারই সে-সব কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, তত বারই সেগুলিকে ‘সাজানো ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে রাজপরিবারের তরফে। আর হ্যারি-মেগানও তেমন ভাবে তা নিয়ে মুখ খোলেননি কখনই। তবে বইটিতে নাকি আলোকপাত করা হয়েছে সেই-সব ঘটনার উপরেই। যার জন্য তারা শেষ পর্যন্ত রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন।
বইটিতে বলা হয়েছে, বড় ভাই এবং ভাবী, প্রিন্স উইলিয়াম এবং কেটের (ডিউক এবং ডাচেস অব কেমব্রিজ) সঙ্গেও হ্যারিদের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছিল এবং তাদের মধ্যে যে কথা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তা অবশ্য ক্যামেরাকে ফাঁকি দিতে পারেনি। যেমন কমনওয়েলথ ডে-র দিনই রাজপরিবারের কোনও অনুষ্ঠানে শেষ বারের মতো জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল হ্যারি-মেগানকে। এসেছিলেন উইলিয়াম এবং কেটও। তবে একে অপরের জন্য জনসমক্ষে অন্তত একটিও বাক্য ব্যয় করতে দেখা যায়নি তাদের। এসেছিলেনও আলাদা। অনুষ্ঠানে বসেওছিলেন দূরত্ব বজায় রেখে। বইটিতে সে দিনের ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘মেগান দু’একবার কেটের সঙ্গে চোখাচোখি করার চেষ্টা করলেও তা সন্তর্পণে এড়িয়ে গিয়েছেন ডাচেস অব কেমব্রিজ।’ তবে জনপ্রিয়তায় যে এগিয়ে ছিলেন হ্যারি-মেগানই। বইটিতে একটি সংবাদমাধ্যমের করা পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে তার প্রমাণ দেয়া হয়েছে। নভেম্বর ২০১৭ থেকে জানুয়ারি ২০২০-র মধ্যে করা ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, হ্যারি-মেগানকে নিয়ে মানুষের উৎসাহ উইলিয়াম-কেটের তুলনায় ৮৩ শতাংশ বেশি।
বইটির আরও দাবি, বিয়ের পর পর নাকি উইনসরে নিজেদের মতো করে সংসার গুছিয়ে নিতে চেয়েছিলেন হ্যারি-মেগান। তাতে ভুরু কুঁচকেছিলেন রাজপরিবারের বাকি সদস্যরা। ধীরে ‘মাটির কাছাকাছি’ চলে আসছিলেন এই দম্পতি। পরিস্থিতির চাপে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি। স্ত্রী-সন্তানকে এই পরিবেশ থেকে উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। কানাডা থেকে ফিরে তাই রানির সঙ্গে দেখা করার তোড়জোড়ও করেছিলেন। কিন্তু তাকে সরাসরি জানিয়ে দেয়া হয়, রানির সঙ্গে দেখা করতে মাসের শেষ অবধি অপেক্ষা করতে হবে।
শেষমেশ প্রিন্স উইলিয়াম এবং প্রিন্স চার্লসের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়, সব ছেড়ে আলাদা হতে চাইলে রাজপরিবারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্কে ইতি টানতে হবে এই দম্পতিকে। তাদের বাসভবন ফ্রগমোর কাসেলে সারাইয়ে খরচ হওয়া অর্থ ফিরিয়ে দিতে হবে। এমনকি ফেরাতে হবে সব উপাধিও। শেষ পর্যন্ত সেই পথেই হেঁটেছেন হ্যারি-মেগান। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তার পরিচয় দেয়ার সময়ে তার নামের আগে ‘প্রিন্স’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানাতে দেখা গিয়েছিল হ্যারিকে। এখন ১৪ মাসের পুত্র আর্চিকে নিয়ে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাস করছেন হ্যারি-মেগান।
তবে এই বইয়ের বিষয়ে হ্যারি–মেগান দম্পতির পক্ষে একজন মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেন, ‘বইটিতে হ্যারি ও মেগান সাক্ষাৎকার দেননি, অবদানও রাখেননি। রাজকীয় গণমাধ্যমের কর্মী হিসেবে নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও স্বাধীন প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এটি লেখা হয়েছে।’ সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।