বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনার বিরূপ অর্থনৈতিক প্রভাব ক্রমশ প্রলম্বিত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে এবারে ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাবার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল। ফলে এ অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছাড়াও অর্ধলক্ষাধিক এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং ও মাদরাসাসমূহে এবারো একটি বড় ধরনের দান-অনুদান থেকে বঞ্চিত হবার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। গতবছর চামড়া সিন্ডিকেটের কারসাজিতে এ অঞ্চলের কোরবানিদাতাগণ পশুর চামড়া বিনা মূল্যেই দিতে বাধ্য হন। এমনকি ঐ সিন্ডিকেটের কারসাজিতে মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোও কোন পশুর চামড়া সংগ্রহ করতে পারেনি। ফলে বছরের একটি বড় আয় থেকে বঞ্চিত হয় ঐসব দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। একই সাথে খামারিদেরও দুঃশ্চিন্তা বাড়ছে। বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে কোরবানিযোগ্য পশুর জরিপ সম্পন্ন করে সদর দপ্তরসহ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগীয় সদরে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলা ও ৪২টি উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে নিয়ে পশুর হাটসহ কোরবানির পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এমনকি এবার দক্ষিণাঞ্চলের পশুর হাটগুলোতে দেড় শতাধিক মেডিক্যাল টিমও নিয়োগ করছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।
কিন্তু এবার করোনা মহামারি দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতেও বিরূপ থাবা বসিয়েছে। যার প্রভাবে সাধারণ মানুষের কোরবানির সাধ্য অনেকটাই সীমিত হয়ে পড়েছে। এতে পশু কোরবানির সংখ্যাটা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৪০ ভাগ হ্রাস পাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতবছর এ অঞ্চলে প্রায় ৩শ’ অস্থায়ী পশুহাট বসেছিল, এবার কোন ইজারাদারের আগ্রহ নেই। খোদ বরিশাল মহানগরীতে পশু হাটের ইজারা নিয়ে আগ্রহ নেই কারো। অথচ বিগত দিনে এসব হাটের অনুমোদন ও ইজারা নিয়ে রীতিমত কাড়াকাড়ি পড়ে যেত। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মতে, গত বছর ঈদুল আজহায় দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলাতে ৪ লাখ ৩৪ হাজার পশু কোরবানি হয়েছিল। যা ছিল আশাতিত এবং আগের বছরের চেয়ে অন্তত ১৫% বেশি।
চলতি বছর বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে সাম্প্রতিক এক জরিপে দক্ষিণাঞ্চলে কোরবানিযোগ্য প্রায় পৌনে ৩ লাখ পশুর হিসাব দেয়া হয়েছে। গত বছর ছিল প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। কিন্তু এবার কোরবানির সংখ্যা হ্রাস পাবার শঙ্কায় বেপারিরা পশ্চিমাঞ্চল থেকে গরু সংগ্রহের চিন্তা করছেন না এখনো। অধিদফতরের সদর দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে ঐ পরিসংখানে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় প্রায় ২০ হাজার খামারির কাছে ১ লাখ ১৩ হাজার ১১২টি ষাড়, প্রায় ২১ হাজার ৫শ’ বলদ, ১৭ হাজার গাভী, ৫ হাজার ৮শ’ মহিষ, ৩০ হাজার ছাগল ও খাশি এবং প্রায় ৬শ’ ভেড়া মজুদের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও পারিবারিক পর্যায়ে আরো প্রায় ১০ হাজার বিভিন্ন ধরনের কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।
প্রতিবছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার আগে-পরে অন্তত দশ লাখ মানুষ সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করতেন। বিগত ঈদুল ফেতরে সে সংখ্যাটা ছিল এক লাখেরও কম। আসন্ন ঈদুল আজহায় সংখ্যাটা আর বাড়বে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান পরিবহন সেক্টরের সংশ্লিষ্টগণ। অর্থনৈতিক সঙ্কটের সাথে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী বেশিরভাগ পরিবারই কোরবানি করতে বাড়িতে আসছেন না। ফলে দক্ষিণাঞ্চলে এবার পশু কোরবানির সংখ্যাটা হ্রাস পাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।