করোনার কারণে এবার কোরবানি ও চামড়ার পরিমাণ নিয়ে শঙ্কায় রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা। করোনার প্রভাব ও ট্যানারী মালিকদের কাছে বকেয়া টাকা দুইয়ে মিলে চামড়া ব্যবসায়ীরা শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। চামড়া কেনাবেচা নিয়েও তারা শঙ্কিত তাছাড়াও রয়েছে আর্থিক সঙ্কট।

রাজশাহী অঞ্চলের চামড়া ব্যবসায়ীদের ট্যানারী মালিকদের কাছে পড়ে আছে পাওনা প্রায় ২০ কোটি টাকা। নতুন করে বিনিয়োগ করবে তারও কোনো উপায় নেই। ব্যাংকে আবেদন করেও পাওয়া যাচ্ছে না ঋণ। সবমিলিয়ে চামড়া কিনতে আগ্রহ হারাচ্ছেন এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহী চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির অধীনে প্রায় দেড়শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছে। বকেয়া টাকা তারা পাবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ছোট ব্যবসায়ীদেরও মূলধন আটকা পড়ে আছে ঢাকার ট্যানারী মালিকদের কাছে। রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান মাসুদ জানান, টাকা বকেয়া থাকার কারণে গত বছর চামড়া কিনতে না পেরে নষ্ট হয়েছে। যারা চামড়া কিনে ট্যানারীতে দিয়েছেন তাদের টাকা পড়ে আছে। যাদের টাকা আটকে আছে তারা এবার চামড়া কিনতে পারবে না। তার উপর করোনার প্রভাব। মূলধন হারিয়ে অনেক ছোট ব্যবসায়ী উপায় না পেয়ে সংসার চালানোর তাগিদে অটোরিকশা চালানো শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংকে কাছে ধর্ণা দিয়েও ঋণ পাননি। এবার রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা কিভাবে চামড়া কিনবেন তার নিশ্চয়তা নেই। তিনি জানান, করোনার সাথে যোগ হয়েছে বন্যা। দুই দুর্যোগের মধ্যে কিভাবে ব্যবসা হবে তা নিয়ে শঙ্কা তৈরী হচ্ছে। গত বছরের মত এবারো ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে না পারলে কোরবানি পশুর চামড়া নষ্ট হবে। প্রতিবছর চামড়া পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার হতো। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে এবার বাইরের দেশে চামড়া রফতানি করা যাবে না দেশেই থেকে যাবে। তাদের হিসাব অনুযায়ী গত বছরের চেয়ে এবার অর্ধেক মানুষ কোরবানি দিতে পারবে। গত বছর রাজশাহী মহানগরীতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার চামড়া উৎপাদন হয়েছিল। এবার তা অর্ধেকে নেমে আসবে। এবার নগরীতে ১৫ থেকে ২০ হাজারের মধ্যে চামড়া পাওয়া যেতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। উৎপাদন কম হলেও এবার চামড়া নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে এমন আশঙ্কা করছে।