প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
উসমানি বা অটোমান খিলাফতের অনুষঙ্গে তুরস্কে নির্মিত হয়েছে সিরিয়ার ‘আর্তুগ্রুল’। এই ‘আর্তুগ্রুল’ কাশ্মীরি ও ভারতীয়দের তো বটেই, ইতোমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সব মুসলিম সম্প্রদায়ের মন জয় করে নিয়েছে। আর পাকিস্তানে তো উর্দু ডাবিংয়ের সঙ্গে এই সিরিয়ালটি সুপারহিট। ছেলে-মেয়ে-স্বামী-স্ত্রী-বাবা-দাদু-দিদিমা--- সকলেই এই সিরিয়ালটিকে আপন করে নিয়েছেন। আর সিরিয়ালটির একের পর এক এপিসোড নেশার মতন দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে। বাংলাদেশেও এর বাংলা ডাবিং প্রচারিত হচ্ছে।
অনেকে বলছেন, ‘আর্তুগ্রুল’-এর প্রভাব খানিকটা ড্রাগ এডিকশনের মতো। একটি এপিসোড দেখলে তাকে ড্রাগ আসক্তির মতোই পরর্বতী এপিসোড দেখার জন্য অধীর করে তুলবেই। অবশ্য, আর্তুগ্রুল শুধু পাকিস্তান, ভারত ও কাশ্মীরে নয়, আরব দুনিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সুদান, নাইজেরিয়া এবং ইউরোপে বসবাসকারী মুসলিম, বলকানের বসনিয়া, কসোভো, রাশিয়ার আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান, দাঘেস্তান এবং চেচনিয়াতেও সাধারণ মানুষের মন কেড়েছে। বলা পুরো বিশ্বের মিডিয়াকে তোলপাড় করে চলছে এই সিরিয়ালটি।
অনেক ভারতীয় প্রশ্ন তুলেছেন ভারতে এর এত জনপ্রিয়তার কারণ কি। ভারতে অনেক অমুসলিমও এই সিরিজটি দেখেন।
‘আর্তুগ্রুল’ হচ্ছে ত্রয়োদশ শতাব্দীর ইতিহাস-নির্ভর একটি নাটকীয় সিরিয়াল। এতে রয়েছে প্রেম, পারিবারিক ঘটনাপ্রবাহ, অ্যাডভেঞ্চার এবং আর্তুগ্রুলের ছোট-বড় নানা যুদ্ধের কাহিনি, যার ঐতিহাসিক প্রভাব অনস্বীকার্য। এই আর্তুগ্রুলই হচ্ছেন তুরস্কের প্রথম অটোমান সুলতান ওসমান জ্জ-এর বাবা। নেটফিক্স এবং ইউটিউবেও দেখা যাচ্ছে এর ডাবিং করা বাংলা ও উর্দু ভার্সনটি। ‘আর্তুগ্রুল গাজি’ বলে ইউটিউবেও তা সম্প্রচার হচ্ছে। আর উপমহাদেশের বাইরে এই সিরিয়ালটি সম্প্রচার হচ্ছে ইংরেজি সাব-টাইটেলসহ। উর্দু ভার্সনটি ইতিমধ্যেই ২১০ মিলিয়ন মানুষ দেখেছেন। আর ৬১ মিলিয়ন দর্শক দেখেছেন ইউটিউব চ্যানেলে।
মুসলিমদের মধ্যে আর্তুগ্রুলের জনপ্রিয়তার কারণ হচ্ছে, এই ঐতিহাসিক সিরিয়ালে মুসলিমদের হিরো এবং বিজয়ী হিসেবে দেখানো হয়েছে। নইলে অনেক ক্ষেত্রেই রূপালি পর্দা বা টিভি সিরিয়ালে দেখা যায়, মুসলিমরা অশিক্ষিত, ক্রিমিনাল এবং দরিদ্র। তাদের সংস্কৃতি বলতে কিছু নেই। আর আর্তুগ্রুল গাজিতে যে চিত্র ফুটে উঠেছে তাতে মুসলিম সংস্কৃতি, পারিবারিক জীবন ফুটে উঠেছে। আর্তুগ্রুলে এমন অনেক শব্দ রয়েছে যা উর্দু বা বাংলাভাষী মুসলিমদের পরিচিত। যেমন, মাসুম (নির্দোষ), জুল্ম (অত্যাচার), লেকীন (কিন্তু), জান্নাত (স্বর্গ) ইত্যাদি। আর ৬০০-রও বেশি বছর এই অটোমানরা একরকম পৃথিবী শাসন করেছেন। তাঁদের সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার একটা বিরাট অংশে। তাদের সেই বিজয় এবং জুলুমহীন শাসনের কথাও বিভিন্নভাবে ভারতের মুসলমানদেরও কানে পৌঁছেছে এবং উদ্বুদ্ধ করেছে।
ইংরেজ ও পাশ্চাত্য শক্তি যখন এই ১৯২০ সাল নাগাদ অটোমান বা ওসমানীয় খিলাফতকে উচ্ছেদ করতে চাইছিল, তখন ভারতীয় মুসলিমরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন করে এবং অর্থ প্রেরণ করে এই খিলাফতকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। যদিও পাশ্চাত্য দুনিয়া কামাল আতাতুর্কের মাধ্যমে খিলাফতকে উচ্ছেদ করে এবং তুরস্ককে ইসলাম মুক্ত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তুরস্ক পুনরায় এরদোগানের নেতৃত্বে জনজীবনে ইসলামি মূল্যবোধকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মুসলমানরা দুনিয়া জুড়ে প্রশ্ন তুলেছে, যদি খ্রিস্টান দুনিয়ার জন্য পোপ থাকতে পারে, তাহলে কেন মুসলমানদের খলিফা থাকবেন না?
যাইহোক, ইতিহাস, সংস্কৃতি, মানবাধিকার--- সবকিছু মিলিয়ে এখন ভারতেও চলছে এক নয়া লড়াই ‘আর্তুগ্রুল’। পুবের কলম
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।