Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এশিয়ার সমুদ্রপথে জলদস্যুদের লুণ্ঠন চরমে পৌঁছেছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০২০, ৩:৪৮ পিএম

সম্প্রতি এশিয়ার সমুদ্রপথে জলদস্যুদের লুণ্ঠনের ঘটনা চরম গভীর উদ্বেগের বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসি।
২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসেই ৫০টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ২০১৯ সালে একই সময়ের মধ্যে ২৫টি ঘটনা ঘটেছিল।
জানুয়ারি থেকে গত ৬ মাসে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত সমুদ্রপথ সিঙ্গাপুর প্রণালির মধ্যে ১৬টি লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে বৈশ্বিক শ্লথগতির মধ্যে দস্যুতার ঘটনা বাড়ছে। রিজিওনাল কোঅপারেশন এগ্রিমেন্ট অন কমবেটিং পাইরেসি অ্যান্ড আর্মস রবারি অ্যাগেইনস্ট শিপন ইন এশিয়ার (রিক্যাপ) অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্যগুলো উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ চীন সাগরে জলদস্যুদের আক্রমণ বেড়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বৈশ্বিকভাবে সহিংস হামলার ঘটনা বেড়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ম্যারিটাইম ব্যুরোর (আইএমবি) প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত জলপথে ৭৭ জনকে জিম্মি বা অপহরণ করে বড় অংকের অর্থ দাবি করছে। পশ্চিম আফ্রিকার গিনি উপসাগরে জলপথের অপহরণের ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

যে কোনো দেশের নির্দিষ্ট দূরত্বে এমন ঘটনা ঘটলে এটাকে দস্যুতা বলে অভিহিত করা হয়। আর কোনো দেশের অভ্যন্তরে ঘটলে সেটাকে অস্ত্রধারী ডাকাতি বলা হয়।
রিক্যাপের নির্বাহী পরিচালক মাসাফুমি বলেন, দস্যুবৃত্তি বৃদ্ধির বিষয়টি উদ্বেগের বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ছোট্ট অপরাধের বিরুদ্ধে যদি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয় তাহলে অপরাধীরা আরো বড় অপরাধ করতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব টেনিসির জলদস্যুতাবিষয়ক গবেষক ব্র্যান্ডন প্রিন্স বলেন, এশিয়ার বেশির ভাগ দস্যুতা ও সশস্ত্র ডাকাতিগুলো সুযোগের সদ্ব্যবহার। মাঝে মাঝে জলদস্যুদের অনেকে স্থানীয় জেলে, যারা তাদের আয় বাড়াতে এ কাজ করে থাকে। এশিয়ার অন্যান্য অংশে বেকার যুবকরা ইন্দোনেশিয়ার বাতাম বা অন্যান্য জায়গায় কাজের সন্ধানে যায়। সুযোগসন্ধানী দস্যুতা অনেক সময় স্থলপথে সশস্ত্র ডাকাতির মতো। যদি আপনি কোনো কিছু সহজেই করায়ত্ত করতে পারেন তাহলে চেষ্টা চালাতে দোষ কী?
তিনি আরো বলেন, আমরা এমন ঘটনা দেখেছি, কখনো কখনো মাত্র তিন থেকে আটজন জলদস্যু বড় একটি নৌকায় উঠে সাধারণ ছুরি বা অস্ত্রের মুখে সেখান থেকে যতটুকু সম্ভব মালপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।
জলদস্যুদের কাছে জনপ্রিয় আইটেমগুলোর মধ্যে রয়েছে কোনো ধাতব খণ্ড, ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ, যোগাযোগের যন্ত্রপাতি এবং নাবিকদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত জিনিসপাতি। এগুলো সংগ্রহ করে তারা কালোবাজারে বিক্রি করত।
প্রিন্স মনে করেন, চলমান মহামারীর মধ্যে আরো অনেকেই সমুদ্রপথে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। আমার ভয় হচ্ছে যে কভিড-১৯ মহামারীর ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্য সংকুচিত হওয়ায় প্রবৃদ্ধি সংকুচিত হবে। এতে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বাড়ছে, যাতে সমুদ্রপথে জলদস্যুতা বাড়বে।

অল্প হলেও এশিয়ার জলপথেও অপহরণ হচ্ছে। রিক্যাপের প্রতিবেদনে গত জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ার লাহাদ দাতো উপকূলে একটি অপহরণের ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ঘটনায় মাছ ধরার একটি নৌকার পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়, যারা এখনো আটক রয়েছেন।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ