Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আসাম-নেপালে ৪০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, নিহত ১৮৯

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ৫:৫৭ পিএম

বর্ষার ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় শুধুমাত্র ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও পার্শ্ববর্তী নেপালেই প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। কয়েকজন নিখোঁজ এবং অন্তত ১৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সেখানকার সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা সহ বন্যা ও ভূমিধসের কারণে গত এক মাসে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে কমপক্ষে ২২১ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

কর্মকর্তারা বলেছেন, চীনের তিব্বত, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ উপচে পড়ায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে এবং ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আসামের একজন সরকারী কর্মকর্তা বলেছেন, ‘মে মাসের শেষের দিক তিনবারের বন্যায় আসামে ২৭ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অন্ত ৭৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে।’

আসামের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান এম এস মান্নিভানান বলছেন, বন্যায় প্লাবিত অঞ্চলগুলোতে আটকা পড়া আনুমানিক চার হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে গেছে এমন ৩৬ হাজার মানুষকে সরকার পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান তিনি। শুধু মানুষ নয় আসামের ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের ৯০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকার এখন পানির নিচে। এর ফলে এক সিংওয়ালা গন্ডারের জন্য বিখ্যাত এই অভয়ারণ্যে অনেক গন্ডার ও বন্য শূকর পানিতে ডুবে মারা গেছে। আসামের বনমন্ত্রী পরিমল শুকলাবাদিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমি বলতে চাই রাজ্যে যত ভয়াবহ বন্যা হয়েছে এই বন্যা তার মধ্যে অন্যতম। বিশেষ করে কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কটির জন্য সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে প্রলয়ংকারী বন্যা দেখা দিয়েছে এ বছর।’

নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারেও বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। নেপালে ভারী বর্ষণে কমপক্ষে নয়টি নদী ফুলে গেছে এবং সেসব নদীতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার উপর দিয়ে। বন্যার কারণে বহু গ্রাম ডুবে গেছে। প্রাদেশিক আবহাওয়া দফতর আগামী দুইদিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দক্ষিণের সমভ‚মি অঞ্চল প্লাবিত এবং পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের কারণে কমপক্ষে ১১৭ জন নিহত হয়েছে। কমপক্ষে ৪৭ জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া গুরতর আহত হয়েছেন কিংবা চোট পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা ১২৬ জন।

আল-জাজিরা বলছে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নদীর সংখ্যা ২৩০টি। এবারে দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদি বন্যার মূল কারণ, ভারী বৃষ্টি এবং উজানে (বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারত অংশে) ধাপে ধাপে ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়া। দেশের আবহাওয়া পূর্বাভাস ও সতর্কতা কেন্দ্র বৃহস্পতিবার জানায়, বহ্মপুত্র এবং তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় আগামী সপ্তাহ থেকে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। এছাড়া আগামী দুই সপ্তাহ বন্যার পরিস্থিতি উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে তাতে জানানো হয়েছে। সূত্র: ডন, আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা পরিস্থিতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ