Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রূপগঞ্জে গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারি

ভারতীয় গরু প্রবেশ আতঙ্ক ও সীমিত আকারে হাট

মো. খলিল শিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রতি বছরের মতো এ বছর পবিত্র ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে কুরবানী পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারীরা। একদিকে করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে সীমিত আকারের স্বাস্থ্য বিধি মেনে হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন উপায়ে ভারতীয় গরু প্রবেশের শঙ্কায় খামারীরা তাদের পালের পশু বিক্রি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। অনেকটা আতঙ্ক বিরাজ করছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামের গো খামারীদের মাঝে।
উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের মাঝিনা গ্রামের কৃষক তরুণ উদ্যোক্তা আরমান বাদশা‘র সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, তারা দুই ভাই মিলে ৭ বছর যাবৎ ঈদ উল আযহার কুরবানীর পশু লালন পালন করে থাকেন। প্রথমে ১০টি করে দেশী প্রজাতির ষাঁড় উৎপাদনের জন্য গো বাছুর দিয়ে শুরু করেন। এভাবে প্রতি বছর ১৫টির অধিক ষাঁড় পালন করে ঈদের প্রাক্কালে পশুর হাটে বিক্রি করেন। সারা বছর গরু পালন করে বছরে এ সময়টার অপেক্ষায় থাকেন তারা। বিগত বছরে ভারতীয় গরু প্রবেশ করায় উপযুক্ত মুল্য পাওয়া যায়নি। ফলে সে সময় বিদেশী গরু আতঙ্কে দেশী খামারিরা থাকতো। এখন নতুন করে করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে গরুর হাটের সংখ্যা কম। এ বছর তারা দুই ভাই মিলে ১৫টির গরুর মধ্যে একটি সিন্দি ক্রস নামের উন্নত জাতের প্রায় ২৪ মণ ওজনের গরু লালন পালন করেছেন। এবার তা উপযুক্ত হওয়ায় বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছেন তারা। ২ বছর পূর্বে গরুটি রৌমারী সীমান্ত এলাকা থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় ক্রয় করেছিলেন। তার নাম রেখেছেন নেইমার। এটা পালনে খাবার , চিকিৎসা ও অন্যান্যসহ এ পর্যন্ত ৪ লাখের অধিক ব্যয় হয়েছে। তাই গরুটির দাম হাকাচ্ছেন ৯ লাখ টাকা। তবে এবার তা বিক্রি করতে পারবে কি না এ নিয়ে পুরো পরিবার রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।

এদিকে পরিবহনের সমস্যা ও লোকবল বেশি করা সম্ভব না থাকার কারনে বেশি হাটে গরু নিয়ে যাতায়াত ভোগান্তিও বাড়ছে। স্থানীয় নারী খামারী সাহারা বানু বলেন, পুরো বছর আমরা গরু পালন করি একটি ঈদের হাটের আশায়। আমাদের মাঝিনা কুটাপাড়া এলাকার রাস্তা ঘাট ভালো না। গাড়ীও প্রবেশ করতে পারবে না। তাই খামারের সব গরু বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ আমীর হোসেন বলেন, মাঝিনা এলাকায় বেশ কিছু ক্ষ’ূদ্র খামারী রয়েছেন। যাদের গরু লালন পালন ছাড়া অন্যকোন পেশা নেই। তাদের জীবিকার মাধ্যম এটিই। এ বছর আর্থিক অবস্থা প্রায় সকল শ্রেণি পেশার লোকজনেরই সংকটে।তাই বেশি মুল্য বা উপযুক্ত মুল্য দিয়ে এমন পশু ক্রয় করতে পারবে কি না তা চিন্তার বিষয়।
এদিকে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ অনলাইনে কুরবানীর পশু ক্রয় বিক্রয়ের তাগিদ দিলেও দরিদ্র কৃষক ও খামারীরা এতে যুক্ত হতে পারছেন না। তাছাড়া অনলাইনে বিক্রি বিষয়ে অজ্ঞতা থাকায় তাদের পালিত পশু বিক্রির সঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তবে উপজেলার তারাবো পৌরসভার যাত্রামুড়া এলাকার নাবিল এগ্রো নামীয় প্রতিষ্ঠান তাদের খামার থেকেই সরাসরি বিক্রির ব্যবস্থা রেখেছেন। এ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র খামারীরা বিক্রির ব্যবস্থা নিয়ে পিছিয়ে রয়েছেন।
এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খান বলেন, রূপগঞ্জে গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নাই। রাজধানীতে অনলাইনে কেনা কাটার কথা বললেও নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের রূপগঞ্জ উপজেলায় ইতোমধ্যে ১০টি পশুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফলে স্বাধীনভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে গুরুসহ কুরবানীর পশু বিক্রি করতে পারবেন খামারীরা। এতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করবে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খামারি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ