Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নানা শর্তে সঞ্চয়পত্রে গ্রাহকের আগ্রহ কমছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

একদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সঙ্কট অন্যদিকে সরকারের নানা শর্তের কারণে কমছে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি। সদ্য সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) সঞ্চয়পত্র বিক্রির নিট পরিমাণ ১১ হাজার ১১ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সময়ে নিট বিক্রি ছিল ৪৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে। করোনার প্রার্দুভাবের কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম ছিল না ব্যাংকগুলোতে। করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ হওয়ায় অর্থ সঙ্কটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে বেকার হয়েছেন। আবার অনেকের কাজ আছে কিন্তু বেতন পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় সঞ্চয়তো পরের কথা উল্টো জমানো অর্থ ভেঙে খাচ্ছে মানুষ। এছাড়া অতিমাত্রায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে সুদহার না কমিয়ে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে সরকার। এসব কারণে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমে গেছে।

অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে সঞ্চয়পত্র অস্বাভাবিক বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকার এ খাতের ওপর বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আগে সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য কোনো ক্রেতাকে কর শনাক্ত নম্বর বা ই-টিআইএন জমা দিতে হত না। কিন্তু এখন এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দুর্নীতি কিংবা অপ্রদর্শিত আয়ে সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধ করতে ক্রেতার তথ্যের একটি ডাটাবেসে সংরক্ষণের লক্ষ্যে অভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়া সঞ্চয়পত্রে বড় বিনিয়োগে কঠোর হয়েছে সরকার। চাইলেই ভবিষ্যৎ তহবিল বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থে সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ নেই। একই সঙ্গে পুরো বিক্রি কার্যক্রমটি এখন অনলাইনের মাধ্যমে মনিটর করায় কেউ ইচ্ছে করলে, সীমা অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র বা একই নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনতে পারবে না। আর এসব কারণেই বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্র কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না বলে জানা গেছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের (জুলাই-মে) পর্যন্ত ১১ মাসে মোট ৫৭ হাজার ৮০৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে। এর বিপরীতে মূল পরিশোধ হয়েছে ৪৬ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রি হিসেবে গণ্য হয়। সেই হিসেবে আলোচিত সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ১১ হাজার ১১ কোটি টাকা।

আগের অর্থবছরের (২০১৮-১৯) একই সময়ে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা এবং নিট বিক্রি ছিল ৪৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত (২০১৯-২০) অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৭৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর একক মাস হিসেবে চলতি বছরের মে মাসে মোট ৩ হাজার ২২৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মূল ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ২ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকার। সুতরাং মাসটিতে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ৪৩০ কোটি টাকা।

এদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়ায় গত ৭ বছর পর সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ সরকার অর্ধেকের বেশি কমিয়ে আনে। গেল ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র খাতে ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৭ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ১১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ১৫ হাজার ৭৬ কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়।
এদিকে চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বিশাল ঘাটতি মেটাতে এবার সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।

 



 

Show all comments
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:২৪ এএম says : 0
    গ্রাহক এখন কোথাও ভরসা পাচ্ছেন না। ব্যাংক / ফাইন্যান্স গুলো দেবে ৬%, আর সঞ্চয় পত্র দেবে গড়ে ১০.৫০% । পার্থক্যটা অনেক বড়। ব্যাংক খাত তাহলে সব সময়ই সংকটে থাকবে মনে হচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Muklesur Rahman ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:২৪ এএম says : 0
    ব্যাংকে হিসাব থাকা সত্বেও কোন কোন ব্যাংক সঞ্চয় পএ বিক্রির ক্ষেত্রে অনিহা প্রকাশ করেন, সঞ্চয় পএ লেনদেনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কোন লাভ নেই বলে তারা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন। বিষয়টির উপর জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃস্টি আকর্ষণ করছি
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Naeem ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:২৫ এএম says : 0
    জাতীয় সঞ্চয়পত্রে সঞ্চিত অর্থ থেকে বেছে বেছে ঘুষখোর-দূর্নীতির টাকা বের করে দেয়া হোক। শুধু মাত্র প্রকৃত যাদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে রাস্ট্রের এই উদ্যোগ তাদের টাকা জমা থাক। ১০ বছরে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা সুদ বাবদ দেয়া হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।যেটা রাজস্ব আদায়, অর্থাৎ সাধারন মানুষের করের টাকা থেকেই দেয়া হয়। "ঘুষখোরেরা একবার ঘুষ খেয়ে সর্বনাশ করছে, আবার সেই টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে উচ্চহার সুদ নিচ্ছে"। অথচ ব্যাংকগুলি আমানত পাচ্ছেনা।তাই ব্যাংকগুলি সুদহার কমাতেও গড়িমসি করছে। ব্যাবসায়ীরা বেশি হার সুদে টাকা নিয়ে, সাধারন মানুষের কাছ থেকেই সুদের টাকা তুলে নেয়ার আপ্রান প্রচেষ্টা করছে। আলটিমেটলি ঐ সাধারন জনগনের উপরেই সব ভার যাচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • Shahadat Chowdhury ১৭ জুলাই, ২০২০, ১২:১১ পিএম says : 0
    Amount of limit & aged bar should not imposed for the both private & Govt. retired persons.But copy of retired documents & total benefit received by the Organazations to be produced .This also to be circulated for smooth running all retired peraons.
    Total Reply(0) Reply
  • A K M Ahmedul Hoq ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:৩৭ পিএম says : 0
    Mr Shahdat chy. give a very realistic proposal. Govt and Jatio Sanchoy poridaptar should think about it and take immediate decesion to implement this proposal. It will ultimately help our Government.
    Total Reply(0) Reply
  • ডালমিয়া ১৭ জুলাই, ২০২০, ২:১৮ পিএম says : 0
    কোনো সরকারি চাকুরীজীবি চাকুরি করা অবস্থায় সঞ্চয়পএ কিনতে পারবে না
    Total Reply(0) Reply
  • সাজিদ ১৭ জুলাই, ২০২০, ৩:১৪ পিএম says : 0
    আস্থার সংকট
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Abdus Salam ১৭ জুলাই, ২০২০, ৩:২৮ পিএম says : 0
    In case of investment by an individual, previous limit should be continued. For investment by a retired person from govt.or private job, there should not any investment limits subject to produce valid documents. For the biggest interest of the general peoples, government should consider it.
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Abdus Salam ১৭ জুলাই, ২০২০, ৩:২৯ পিএম says : 0
    In case of investment by an individual, previous limit should be continued. For investment by a retired person from govt.or private job, there should not any investment limits subject to produce valid documents. For the biggest interest of the general peoples, government should consider it.
    Total Reply(0) Reply
  • Syed Ansar Hossain ১৭ জুলাই, ২০২০, ৪:১৭ পিএম says : 0
    আমাকে দয়া করে জানাবেন কি, আমি ২০১৭ সালে ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কিনেছিলাম ৩০ লক্ষ টাকার। এখন আমি চাকরি থেকে অবসরে এসেছি। আমি ৫০ লক্ষ টাকার পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনিতে চাই। কেনা যাবে কিনা? আমি সরকারিক রপোরেশনে চাকরিজীবী ছিলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • Didarul Alam ১৭ জুলাই, ২০২০, ৫:১৫ পিএম says : 0
    ত্রৈমাসিকও পরিবার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর অনীহা একটা বড় কারন। পেনশনার ও পরিবার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে TIN বাধ্যবাধকতা শিথিল করা যেতে পারে
    Total Reply(0) Reply
  • Adv. Joy ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৬ এএম says : 0
    Dear, Syed Ansar Hossain, Apni Pension Sanchay Potro Kinte Parben. Kintu 50 Lac Taka Sorbo Mot. R Jodi apni 40 Lac pension pan tahole 40 Lac Taka kinte Parben. Amader jatio Sanchay Potro ase 4 ta. Apni j ta kine cen. Sudhu seta-e kinte Parben kroy sima porjunto. Ak sathe Parobarik, 3 bocor Meadi ettadi kinte Parben na. R akhon 10% interest korton kora haoy age jeta 5% Cilo. R o Jane Google amak search dite paren. Joy D. Biswas Dhonnobad.
    Total Reply(0) Reply
  • Adv. Joy ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৭ এএম says : 0
    Dear, Syed Ansar Hossain, Apni Pension Sanchay Potro Kinte Parben. Kintu 50 Lac Taka Sorbo Mot. R Jodi apni 40 Lac pension pan tahole 40 Lac Taka kinte Parben. Amader jatio Sanchay Potro ase 4 ta. Apni j ta kine cen. Sudhu seta-e kinte Parben kroy sima porjunto. Ak sathe Parobarik, 3 bocor Meadi ettadi kinte Parben na. R akhon 10% interest korton kora haoy age jeta 5% Cilo. R o Jane Google amak search dite paren. Joy D. Biswas Dhonnobad.
    Total Reply(0) Reply
  • Md.Shamsul Alam ১৮ জুলাই, ২০২০, ১১:৫৬ এএম says : 0
    If GOVT may be Tk- 10 Lac Purchase the Sanchay s.patra ,without TIN, for All the people's, through all the Commercial Bank Ltd in Bangladesh. Not for post office may be Suffering in the Jessore post Office. Most of the employees discourse for the FDR & Sanchay s.patra. Please take action against Jessore post office immediately. I am suffering from the Jessore post Office. Tnxs.
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Majed Hossain ১৮ জুলাই, ২০২০, ৬:২৩ পিএম says : 0
    Hassle-free Sanchoypatro purchase limit should be enhance.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Solaiman ১৮ জুলাই, ২০২০, ১১:৫১ পিএম says : 0
    সঞ্চয় অধিদপ্তর এর সাইট থেকে এবং মোবাইল অ্যাপ থেকে ঘরে বসে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র কেনার ব্যবস্থা চালু করা হোক। যেহেতু জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার ছাড়া কেনা যায় না, তাই অনলাইনে কেনার ব্যবস্থা চালু করা যেতে পার। আর কেউ যদি 6 মাসের পরে ভাঙিয়ে ফেলে, সেক্ষেত্রে 6 মাসের মুনাফা দেওয়া হোক। যেমন, 6 মাস থেকে 11 মাসের মধ্যে ভাঙালে 6 মাসের মুনাফা, 18 মাস থেকে 23 মাসের মধ্যে ভাঙালে দেড় বছরের মুনাফ। নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকলে, বয়স যাই হোক না কেন, অন্য আইডি দিয়ে নমিনি করার সুযোগ রাখা হোক। যেমন, জন্মনিবন্ধন পত্র, এস এস সির রেজিস্ট্রেশন পত্র , ড্রাইভিং লাইসেন্, পাসপোর্ট, ইত্যাদি।
    Total Reply(0) Reply
  • ঘুষের উৎপত্তি সরকারি কর্মচারী বা আইনে যাদেরকে সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী ষ্টেটাস দেওয়া হয়েছে তাদের থেকে। চাকুরির সময় তারা গাছেরটা উপরটা শতভাগ খেয়েছে অবসরে নীচেরটা শতভাগ খাবে এটা চিন্তা পরিহারকরে সাধারণ জনগণের প্রতি ভাবনা দেশ প্রেমিক কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা করা উচিত সঞ্চয়পত্র সহ সংশিষ্ট বিষয়ে। ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সঞ্চয়পত্র

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ