পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, যেটা চলতি বছরের মধ্যভাগে প্রকাশিত, বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৬ লাখ ৮৯ হাজার ৩৮৩ জন। যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ১১ শতাংশ। জনসংখ্যার বিচারে তাই বিশ্বের ৮ম জনবহুল দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু, এই চিত্র অনেকটাই পাল্টে যাবে চলতি শতাব্দীর শেষভাগে। ২১০০ সালে দেশের জনসংখ্যা নেমে আসতে পারে ৮ কোটি ১০ লাখে। বৈশ্বিক জনসংখ্যা নিয়ে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণা মডেল অনুসারে এসব তথ্য জানা গেছে।– সাউথ এশিয়ান মনিটর, টিবিএস
গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) যুক্তরাজ্যের শীর্ষ চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাময়িকী ল্যানসেটে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। গবেষণায় ২০১৭ সালের তথ্যানুসারে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ৭০ লাখ, যা ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ কমবে ২১০০ সালে। আর সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এটা হবে জনসংখ্যার সর্বোচ্চ পতন। উল্লেখিত গবেষণা অনুসারে, ২১০০ সালে ভারতই হবে বিশ্বের বৃহত্তম জনবহুল দেশ। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশটির জনসংখ্যা হবে ১০০ কোটি ৯০ লাখ।
বর্তমানে ১৩০ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে চীনের (১৪০ কোটি) পরই অবস্থান ভারতের। অন্যদিকে, পাকিস্তানের বর্তমান জনসংখ্যা ২৪ কোটি ৮০ লাখ।
শুধুমাত্র পাকিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সকল দেশই ২১০০ সালে তাদের জনসংখ্যার বিপুল পতন লক্ষ্য করবে। ২১ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে পাকিস্তান অবশ্য বর্তমানের পঞ্চম অবস্থানেই থাকবে। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ ভুটানে সবচেয়ে কম জনসংখ্যা পতন ঘটবে। ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ কমে যা বর্তমানের ৯ লাখ ৬৬ হাজার থেকে ৭ লাখ ৭০ হাজারে নামবে। বাংলাদেশের পর দক্ষিণ এশিয়ায় জনসংখ্যা কমার দিক থেকে দ্বিতীয় প্রভাবিত দেশ হবে হিমালয় কন্যা নেপাল। দেশটির ২ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজারের জনসংখ্যা নামবে ১ কোটি ৮০ লাখ ৯ হাজারে।
বৈশ্বিক জনসংখ্যা আগামী ৪৪ বছরে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছাবে: একই গবেষণার আওতায় আগামী ৪৪ বছর পর বৈশ্বিক জনসংখ্যা বেড়ে ৯৭০ কোটিতে উন্নীত হওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়। যা ২১০০ সাল নাগাদ সংকুচিত হয়ে নেমে আসবে ৮৭৯ কোটিতে। ২০৬৪ সালের পর গর্ভধারণ এবং শিশু জন্মহার কমে যাওয়ার কারণেই মূলত এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
বাংলাদেশে শিশু জন্মহার ২০১৭ সালের পরিসংখ্যানের ২ শতাংশ থেকে নেমে আসবে ১ দশমিক ১৯ শতাংশে। তবে তারপরও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তা শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বেশি হবে। অন্যদিকে, বৈশ্বিক শিশু জন্মহার বর্তমানের ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ থেকে ২১০০ সালে নেমে আসবে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশে। জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিবাসনের হিসাব বাদ দিলে নারীরা মাথাপিছু ২ দশমিক ১টি সন্তানের জন্ম দিলেই কেবল একটি দেশের জনসংখ্যা বাড়ে বা স্থির থাকে। তবে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার, ঘরের বাইরে কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং গর্ভনিরোধ পদ্ধতির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় গর্ভধারণের সংখ্যাও কমে যাবে।
সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে দেখা যায়, ২০৫০ সাল নাগাদ ১৫১টি দেশের মোট মাতৃত্বহার আলোচিত ২ দশমিক ১ শতাংশের নিচে থাকবে। আর ২১০০ সাল নাগাদ ১৮৩টি দেশের ক্ষেত্রে এই হার হবে আরও কম। এরফলে স্পেন, জাপান এবং থাইল্যান্ডের মতো কিছু দেশের জনসংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি কমে যেতে পারে ২০১৭ সালের পরিসংখ্যানের তুলনায়।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী গবেষক ডক্টর ক্রিস্টোফার মুরে বলেন, বিশ্বের জনসংখ্যা বর্তমানে যেভাবে বাড়ছে; আগামীদিনে সে প্রবণতা অব্যাহত থাকার কোনো সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি আরও জানান, তাদের গবেষণা জাতিসংঘের পূর্বের একটি গবেষণাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। জাতিসংঘ ওই গবেষণার আওতায় চলতি শতাব্দী জুড়ে বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকার অনুমান করেছিল। তবে আগামী ৪০ বছরে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের বিষয়টি তারা মেনে নিয়েছেন। ওই সময়ে ২০১৭ সালের তুলনায় বৈশ্বিক জনসংখ্যা দুইশ' কোটি বাড়বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।