মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সম্প্রতি চীনের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তির পর চাবাহর রেলপ্রকল্প থেকে ভারতকে বাদ দিল ইরান। প্রকল্প শুরুর জন্য অর্থায়নে ভারত বিলম্ব করায় তারা নিজেরাই এটি নির্মাণ করবে বলে জানিয়েছে ইরান সরকার। গত সপ্তাহে একতরফা ভাবে উদ্বোধন করে লাইন পাতার কাজও শুরু করে দিয়েছে তারা। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোন প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হয়নি।
২০১৬ সালে চাবাহার সমুদ্রবন্দর থেকে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া ইরানি শহর জাহেদান পর্যন্ত ৬২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে রেল চালানোর জন্য ভারত, ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি ত্রিদেশীয় চুক্তি হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের একটি বিকল্প বাণিজ্য-পথ গড়ে তোলা।
কিন্তু গত সপ্তাহে ওই রেলপ্রকল্পের একাংশে লাইন পাতার কাজ একতরফা ভাবেই উদ্বোধন করেন ইরানের পরিবহণ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মহম্মদ এসলামি। তিনি জানান, ওই রেলপথটি আরও বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে আফগানিস্তান সীমান্তের আরও একটি শহর জারাঞ্জে। ইরান সরকারের এক পদস্থ কর্মকর্তা পরে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভারতের কোনও সহায়তা ছাড়া তেহরানের রেল কর্তৃপক্ষ একাই ওই প্রকল্পটি করবে। কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের মধ্যে। প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ৪০ কোটি ডলার দেবে ইরানের জাতীয় উন্নয়ন তহবিল।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্প থেকে ভারতের বাদ পড়ার সম্ভাব্য কারণ হতে পারে দু’টি। চীন আর আমেরিকা। তেহরানের সঙ্গে সম্প্রতি ২৫ বছর মেয়াদের ৪০ হাজার কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বেইজিং। জঙ্গিদের অর্থ ও অস্ত্রে মদত দেয়ার অভিযোগে আমেরিকা একতরফাভাবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির পর যা খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল তেহরানের। অন্য দিকে, একই ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দিল্লির উপর বছরদু’য়েক ধরেই চাপ বাড়াচ্ছিল ওয়াশিংটন। যার পরিণতিতে ইরান থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয় মোদি সরকারকে। আমেরিকা অবশ্য চাবাহার সমুদ্রবন্দর ও সংশ্লিষ্ট রেলপ্রকল্প নির্মাণ থেকে ভারতকে সরে আসার জন্য সরাসরি কোনও চাপ দেয়নি।
তবে এটাও ঠিক, ২০১৬-য় প্রধানমন্ত্রী মোদি তেহরান সফরে গিয়ে ইরান ও আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করার পর রেলপ্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ভারতের তরফে ততটা আগ্রহ দেখা যায়নি। তাদের পক্ষে কাজটা করার কথা ছিল ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ কনস্ট্রাকশান লিমিটেড (আইআরসিওএন)’-এর। প্রকল্পে আইআরসিওএন-এর ১৬০ কোটি ডলার খরচ করার কথা ছিল। ভারতের উদ্বেগ ছিল, কাজটা শুরু করলে আমেরিকা ভারতের বিরুদ্ধেও জারি করতে পারে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা।
এদিকে, পরিস্থিতি আরও জটিল করে দিয়ে ২৫ বছরের জন্য কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে ইরান আর চীন। এর মধ্যে চাবাহারের শুল্কমুক্ত জোন, কাছের একটি তেল শোধনাগারে চীনের প্রবেশাধিকারের পাশাপাশি চাবাহার বন্দরেও হয়তো চীনের বড় ভূমিকা থাকবে।
চুক্তির খসড়ার যে ১৮ পাতা ফাঁস হয়েছে, সেটার তথ্য অনুযায়ী তেহরান আর বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা এই চুক্তির খসড়াটি চুড়ান্ত করেছেন। সহযোগিতার মধ্যে থাকবে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ, উৎপাদন ও জ্বালানি ও পরিবহন ফ্যাসিলিটিগুলোর উন্নয়ন, বন্দর, শোধনাগার এবং অন্যান্য স্থাপনাগুলোর আধুনিকীকরণ। এই সময়টাতে চীনে তেল আর গ্যাসও সরবরাহ করবে ইরান। সূত্র: দ্য হিন্দু, এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।