Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তার নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিঃ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত

নিন্মাঞ্চল প্লাবিত, ৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি

লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২০, ১২:২৮ পিএম

কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খুলে দেয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো জলকপাট। প্লাবিত হয়েছে নি¤œাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, ১০ জুলাই শুক্রবার রাত থেকে বাড়তে থাকে তিস্তার পানি প্রবাহ। পরে শনিবার ১১জুলাই সকাল ৬টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান, ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে ধরলার পানি লালমনিরহাটর কুলাঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে জানান পাউবো লালমনিরহাট।
স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৩ দিনের টানা বর্ষন ও উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলের কারনে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেঃ মিঃ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নি¤œাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকু-া, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি দেখে তিস্তাপাড়ের মানুষ বড় ধরনের বন্যার আশংকা করছেন। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে বলে তারাও শংকা প্রকাশ করছেন।। বৃষ্টির আর উজানের পাহাড়ী ঢলের ফলে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানে ভারতের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের বন্যার আশংকা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া শাখা।
তবে তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদাম ও ভুট্টাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। অনেক মৎস খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। অনেকের ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। তিস্তার তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক শামছুল হক জানান, শুক্রবার দিনভর হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পেয়ে তারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মাচাং বানিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তি বাংলা বাজার এলাকার মেঅ আঃ বাতেন জানান,শুক্রবার দিনভর একটু একটু করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু রাতে শনিবার প্রচন্ড গতিতে পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তারা পনিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম বলেন, এ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তি ছয়টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা করতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদকে বলা হয়েছে। তালিকা পেলে বরাদ্দ নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ৩ দিনের ভারী বর্ষন ও ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ শুক্রবার রাত থেকে বাড়তে থাকে। শনিবার (১১জুলাই) সকাল ৬টার দিকে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি আরো ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকায় ব্যারাজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সব সময় পানি বৃদ্ধির বিষয়টি মনিটরিং করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ