কোনো গ্রাহকেই ব্যবহারের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ সচিব ড. সুলতান আহমেদ। গতকাল দুপুরে ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বিদ্যুৎ সচিব এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কোনো গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কাউকেই ব্যবহারের অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করতে হবে না। যেসব অভিযোগ এসেছে তাদের বিল সমন্বয় করা হচ্ছে। আরও অভিযোগ এলে সেগুলোও সমন্বয় করা হবে। সচিব বলেন, সামাজিক দূরত্ব রাখতে গিয়ে মিটার না দেখে আগের বিলের সঙ্গে গড় করে বিল করায় কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে, শাস্তির আওতায়ও এসেছেন অনেকে। কোনো অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, করোনাকালে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে ৬০১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, ১২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ অবস্থায় (লকডাউন) আমাদের কর্মীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গ্রাহকের পূর্বের বিলের সঙ্গে সমন্বয় করে বিল তৈরি করেছে। এতে অনাকাক্সিক্ষতভাবে কোনো কোনো গ্রাহকের বিল দুই বা তিন গুণ বেশি চলে এসেছে। ইতোমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে সেসব বিল চলতি বা পরের মাসের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। আরও অভিযোগ এলে সেগুলোও সমন্বয় করা হবে। গ্রাহকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এক দিনের জন্য না, বছরের পর বছর তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। অনাকাক্সিক্ষত সমস্যার কারণে গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।

বিদ্যুৎ সচিব বলেন, ৬টি সংস্থা বিদ্যুৎ বিতরণে কাজ করে। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ২ কোটি ৯০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে অভিযোগ এসেছে ৩৪ হাজার ৬৮১টি। অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে। ডিপিডিসির ৯ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৯ গ্রাহকের মধ্যে ১৫ হাজার ২৬৬ জনের অভিযোগ এসেছে। এখানে ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্তসহ আরও ১৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ডেসকোর ১০ লাখ গ্রাহকদের মধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নেসকোর ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৮ জন গ্রাহকের মধ্যে ২ হাজার ৫২৪ জনের অভিযোগ এসেছে। ইতোমধ্যে নেসকোর ২২৩ জনকে তলব করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পিডিবির ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৫১৫ জন গ্রাহকের মধ্যে অভিযোগ এসেছে ২ হাজার ৫৮২ জনের। যার সবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল করার অভিযোগ ও গাফলতি নিয়ে তিনি বলেন, গ্রাহকের পূর্বের রেকর্ড দেখে বিল করা হয়েছে, যেটা এখন থেকে রিডিং দেখে হবে। রেকর্ড দেখে ম্যানুয়ালি করতে গিয়ে কারো অতিরিক্ত বিল এসেছে। এতে কারো কোনো গাফলতি থাকলে দেখা হবে। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে, অনেকে শাস্তির আওতায় এসেছেন, অনেকের অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায় এটা ভালোভাবে দেখতে হবে কোম্পানিগুলোকে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের চার প্রকৌশলীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৩৬ প্রকৌশলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। অভিযোগ তদন্তে কোম্পানির নির্বাহী পরিচালককে (আইসিটি) প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এখন থেকে রিডিং দেখে বিল করা হবে।