মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অলির অহংকার এবং দাহালের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেপাল কম্যুনিস্ট পার্টিকে এতটাই দুর্বল বরে ফেলেছে যে, দলটি ভাঙ্গনের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। দলের সিনিয়র সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই কথা বলেছেন।
নেপালের দুই বাম দল, কেপি শর্মা অলির সিপিএন-ইউএমএল এবং পুষ্প কামাল দাহালের মাওবাদী কেন্দ্র যখন ২০১৭ সালের অক্টোবরে নির্বাচনী জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা টিকবে না বলেই অনেকে মনে করেছিলেন। তবে, নভেম্বর এবং ডিসেম্বরের নির্বাচন সমস্ত আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়। নির্বাচনে জয়ের পরে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেন অলি। এর দুই মাস পরে ২০১৮ সালের মে মাসে তারা একীভূত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম হয়, যা নেপালি ইতিহাসের বৃহত্তম কমিউনিস্ট শক্তি। অলি ও দাহাল দুজনেই এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তবে একীভূত হওয়ার মাত্র দু’বছর পরে গত বৃহস্পতিবার, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি) বিভাজনের মুখে চলে আসে। দলের চেয়ারপারসন দাহাল ও প্রধানমন্ত্রী অলি একটি স্থবিরতার মধ্যে রয়েছেন। দাহাল দলের চেয়ারপারসন এবং প্রধানমন্ত্রী উভয় পদ থেকেই ইস্তফার আহ্বান জানিয়েছিলেন অলির প্রতি। সচিবালয় এবং স্থায়ী কমিটির সমর্থন হারিয়ে অলিও কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।
জোট গঠনের পরে প্রথমে ২০১৮ সালে দাহাল ও অলির মধ্যে সমঝোতা হয়েছিল যে, প্রথম ২ বছর ৬ মাস প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবেন অলি। তারপরে ২ বছর ৬ মাস প্রধানমন্ত্রী হবেন দাহাল। এর পরে ২০১৯ সালে আবার নতুন করে সমঝোতা হয় যে, অলি ৫ বছরই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন এবং দাহাল দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে, এখন অলির বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে দাহাল আবার ২০১৮ সালের চুক্তিতে ফিরে যেতে চাচ্ছেন।
অলি বৃহস্পতিবার সংসদ স্থগিত করেছেন, একটি নতুন অধ্যাদেশ আনার কথা বলেছেন, যার ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েও তার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা সম্ভব হবে। তিনি বিরোধী দলগুলোকেও পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন এবং পদত্যাগের পরিবর্তে নিজের পথে যেতে প্রস্তুত বলে মনে করছেন তিনি। এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং দলীয় অভ্যন্তরীণ নেতারা বলছেন, এই পরিস্থিতির পিছনে দলের দুই নেতার অনড় অবস্থানই দায়ী। অলি হচ্ছেন অহংকারি ও জেদি। এদিকে, দহাল হচ্ছেন প্রচণ্ড উচ্চাকাঙ্ক্ষী।
ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক কৃষ্ণ পোখরেল বলেন, ‘দলটি সরকার পরিচালনার জন্য অলিকে প্রায় দুই বছরের জন্য অকুন্ঠ সমর্থণ দিয়েছে। কিন্তু, অলি একা চলার পথই বেছে নিয়েছেন। তিনি একটি পা দলে এবং অন্যটি সরকারে রেখেছিলেন এবং তিনি উভয় ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছেন।
দলটি যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তখন সচিবালয়, স্থায়ী কমিটি এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাবেক ইউএমএলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও অলি সকল ফ্রন্টের সমর্থন হারিয়ে ফেলেছেন। আড়াই দশকেরও বেশি সময়কালে দেশের সর্বাধিক শক্তিশালী সরকারের নেতৃত্বে আসার পর, অলি দলীয় সদস্যদের উদ্বেগে রেখে একটি কর্তৃত্ববাদী ধারা প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন। তিনি শুধুমাত্র তার উপদেষ্টাদের কথাই শুনতেন এবং দলের কমিটি থেকে পাশ কাটাতে শুরু করেছিলেন।
এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘তিনি ভুলে যেতে শুরু করলেন যে, তিনি দাহালের সাথে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।’
তিন দশকেরও বেশি সময় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাওবাদী দল চালিয়ে যাওয়া দহাল ওলির অধীনে কাজ করেছেন। সহ-সভাপতির দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও, দাহাল সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অন্যদের সাথে খুব কমই পরামর্শ করেছেন। তবে দাহাল একমাত্র নেতা নন যে ওলির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন। সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপাল এবং ঝাল নাথ খানাল, যারা দুজনই অতীতে ইউএমএলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তারা কিছুটা হলেও বিরত বোধ করতে শুরু করেছিলেন।
এই প্রেক্ষিতে, দলের ভাঙ্গন ঠেকাতে দুই নেতা বৈঠকে বসলেও তাতে কোন সমাধান আসেনি। এর পর, শনিবার সকাল এগারোটায় নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। অলির ভাগ্য সেখানেই নির্ধারিত হত। কিন্তু সেই বৈঠক শেষপর্ন্ত স্থগিত হয়ে গিয়েছে। বৈঠকটি দুই একদিনের মধ্যেই আবার হওয়ার কথা। তার উপরেই নির্ভর করছে দলটির ভবিষ্যত। সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।