Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাপুল কেলেঙ্কারি: কুয়েতি রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জুলাই, ২০২০, ১২:১৪ পিএম

অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি শহিদ ইসলাম পাপুল কেলেঙ্কারিতে কুয়েতী মদদদাতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে কুয়েতের বিচার বিভাগ। পাবলিক প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে আরবি দৈনিক আল-রাই জানায়, এখন পর্যন্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের একজন কুয়েতের শ্রম বিভাগের পরিচালক এবং অন্যজন গত পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া রাজনীতিবিদ।

পাবলিক প্রসিকিউটরদের বরাতে আরবি দৈনিক আল-রাই জানিয়েছে, ওই দুজনকে ২১ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে কুয়েতের যে দুই এমপির বিরুদ্ধে পাপুলকে বেআইনি কাজে সহযোগিতা এবং অর্থ পাচারে জড়িত থাকার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে ’সংসদীয় ইমিউনিটি’ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সালাহ খুরশিদ ও সাদুন হাম্মাদ নামের ওই দুই এমপির বিরুদ্ধে গত ২৭ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছিল পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিস। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি করতে পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে যে দায়মুক্তি তারা পান, তা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছিল সে সময়।
আরবি পত্রিকা আল-কাবাস বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ওই দুই এমপির ’সংসদীয় ইমিউনিটি’ প্রত্যাহার করার আবেদন অনুমোদন করেছে কুয়েতের সংসদীয় বিচার বিষয়ক কমিটি। এ সিদ্ধান্তের ফলে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশন এখন তাদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এই সংসদ সদস্যকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে। পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশি পাপুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। কুয়েতি প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ আনে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে ১৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এখন তাকে রাখা হয়েছে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে।

বাংলাদেশের এই এমপি কুয়েতি কর্মকর্তাদের কীভাবে কত টাকা ঘুষ দিয়েছেন, সে বিষয়ে রিমান্ডে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন তিনি, যা প্রসিকিউটরদের বরাতে প্রকাশ করছে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
এর আগে নাগরিকত্ব, পাসপোর্ট ও বসবাসের অনুমতি বিষয়ক দপ্তরের অ্যাসিসট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মাজেন আল-জারাহকে বরখাস্ত করেছে কুয়েত সরকার।

মানব ও অর্থপাচারের মাধ্যমে পাপুল তার অর্থ ও ক্ষমতার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। একটা সময় সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েতে গিয়েছিলেন। পরে ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, নিজের স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করে আনেন তিনি। প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পাপুল। সেখানে তার বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে। এসব অভিযোগ ওঠার পর পাপুলকে এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের পরিচালক পদে থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান ও এনআরবিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান পদ থেকেও বাদ পড়েন তিনি।
এর আগে পাপুল ও তার কম্পানির প্রায় ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) জব্দ করা হয়। কুয়েতের আদালতের নির্দেশনা ছাড়া তার সম্পদ অন্যত্র স্থানান্তর করতে না পারেন তা নিশ্চিত করার আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সম্পদ জব্দ করা হয়। এছাড়া তদন্তকারীরা কুয়েতে পাপুলের ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নগদ অর্থ, সব কাগজপত্র, যোগাযোগসংক্রান্ত নথি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সম্ভাব্য প্রমাণ হিসেবে নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ