Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চেন্নাইয়ে বিনা বিচারে ২৯ বাংলাদেশিসহ ১২৯ তাবলীগ সদস্য বন্দী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০২০, ৩:৪৫ পিএম

দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলীগ জামাতের সমাবেশে যোগ দিতে আসা ৯ দেশের ১২৯ জন বিদেশী তাবলীগ সদস্যকে চেন্নাইয়ের একটি বন্দী শিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ জন বাংলাদেশিও রয়েছেন।

চেন্নাইয়ের পুল্লাল কারাগারের ভেতরেই একটি ভবনকে বন্দী শিবির নাম বানিয়ে সেখানে তাদেরকে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় তামিলনাডুর ১৫টি জায়গা থেকে মার্চ আর এপ্রিলের শুরুতে। এদের মধ্যে ১২ জন নারীও আছেন। ভারতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিদেশী তবলীগ সদস্য আটক আছেন, কিন্তু চেন্নাইয়ের মতো বন্দী শিবিরে তাদের রাখা হয়নি কোথাও। অভিযোগ উঠেছে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে ছাড়া হয় নি।

সেখানে বন্দী বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা এ কে সামসুল হকের ছেলে এহতেশাম ইবনে শামস জানান, প্রায় দুই বাবার খোঁজই পাননি তারা। তিনি বলেন, ‘বাবা ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দিল্লি গিয়েছিলেন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে লকডাউন হয়ে যায় ওখানে। অনেক চেষ্টা করেও খোঁজ পাচ্ছিলাম না। মাস দুয়েক পরে জানতে পারি যে বাবাকে চেন্নাইতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধরার সময়েই তো টাকা পয়সা, মোবাইল সব নিয়ে নিয়েছিল। তাই কোনও যোগাযোগই করা যায়নি।’

ওই বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে সক্রিয় তামিলনাডুর এক রাজনৈতিক নেতা এম এইচ জাওয়াহিরউল্লা। তিনি বলেন, ‘পুলিশ এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তামিলনাডু গণস্বাস্থ্য আইন অনুযায়ী। বলা হয়েছে এরা রোগ ছড়াচ্ছিলেন। তাছাড়াও বিদেশী আইনের দুটি ধারা অনুযায়ী এদের বিরুদ্ধে ভিসার নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগও আনা হয়েছে।’

তিনি জানান, ‘আইন অনুযায়ী বিদেশী নাগরিকদের শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ৫টি বন্দীশালাতেই আটক রাখা যায়। যে কোনও জেলে তাদের রাখার নিয়ম নেই। এখন আবার তাদের চেন্নাই জেলের সেই শিশু-কিশোর বন্দীদের ভবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, কিন্তু জেলের ভেতরে হলেও বিশেষ আদেশ বলে সেটিকে বন্দী শিবির বা ডিটেনশান ক্যাম্প নাম দেয়া হয়েছে। সেখানেও আইন ভাঙ্গা হয়েছে।’

৮ জন নারী সহ ৯৮ জন তাবলীগ সদস্যকে জামিন দিয়েছে বিভিন্ন আদালত। জামিন পাওয়ার পরেও তাদের বন্দী শিবির থেকে ছাড়া হয়নি। আর বাকি ৩১ জন তাবলীগ সদস্যকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ। কিন্তু তাদেরও পুলাল জেলের আরেকটি ভবনে রাখা হয়েছে, যেটিকে বিশেষ নাম দিয়ে বন্দী শিবির বানানো হয়েছে।

এম এইচ জাওয়াহিরউল্লা বলছিলেন, ‘একটি ভবনে বড়জোর ৩০ কি ৪০ জন থাকতে পারে। কিন্তু সেখানে ৯৮ জনকে রাখা হয়েছে। আইন অনুযায়ী নারীদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা করার কথা, সেটা মানা হয় নি। পানীয় জলের সমস্যা আছে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের ঐ শিবিরে। জেলের অন্য বন্দীদের যে খাবার দেওয়া হয়, সেই একই খাবার তাবলীগ সদস্যদেরও দেয়া হয়। বাকি যে ৩১ জন, তাদেরকে এই ভবনটিতে আর রাখা হয় নি - সেটা সম্ভব হত না। তাই অন্য একটি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতিটা ব্যাপারেই তামিলনাডু সরকার আইন ভঙ্গ করেছে।’

চেষ্টা করেও এ নিয়ে তামিলনাডু সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া জোগাড় করা যায়নি। বিদেশি তাবলীগ জামাতের সদস্যদের বিষয়টি এখন সুপ্রীম কোর্টে পৌঁছেছে। শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তুলেছে, ওই বিদেশি নাগরিকদের যদি কালো তালিকাভুক্ত করে ভিসা বাতিল করে দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে তাদের কেন এখনও ভারতে রেখে দেওয়া হয়েছে? কেন তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হয় নি! সূত্র: বিবিসি বাংলা।



 

Show all comments
  • Jack Ali ১ জুলাই, ২০২০, ৬:৪৬ পিএম says : 0
    May Allah destroy Barbarian Modi and his government. Ameen
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ