Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় জাল টাকার কারবারিরা

জাল টাকা-ভারতীয় রুপিসহ ছয়জন গ্রেফতার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

কোরবানির পশুর হাট ও ঈদ বাজারকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল টাকা কারবারিরা। জাল টাকা ও ভারতীয় রুপি তৈরি করে মজুদ রাখা এবং রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে সরবরাহ করছে একাধিক চক্র। এসব চক্রের সাথে ভারতীয় একাধিক জাল নোট প্রস্তুত কারক চক্রের যোগাযোগ থাকার তথ্য পেয়ে গোয়েন্দারা। এরই মধ্যে গত রোববার ভোর রাতে রাজধানীর মিরপুর ও বসুন্ধরা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও ভারতীয় রুপিসহ সংঘবদ্ধ চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-২। এসময় এক হাজার টাকা নোটের পৌনে চার কোটি জাল টাকা এবং ৫০০ ও দুই হাজার রুপির নোটের আনুমানিক ৪৪ লাখ ভারতীয় রুপি জব্দ করা হয়। মিরপুর থানাধীন ১২/ই বøক বাসা নম্বর ৬২ এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা জি বøক বাসা নম্বর ১৬১ থেকে মূল হোতা মো. সেলিম (৪০), মো. মনির (৪৫), মো. মঈন (৪০), মোছা. রমিজা বেগম (৪০), মোছা. খাদেজা বেগম (৪০) ও শাহীনুর ইসলাম (১৫) নামে ছয় জাল টাকা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিপুল পরিমাণ জাল টাকা আসন্ন কোরবানি ঈদে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল গ্রেফতারকৃতদের। এদের নেটওয়ার্ক শনাক্ত এবং জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে কাজ করছে র‌্যাব। করোনাকালীন এ সময়ে জাল টাকার এ ছড়াছড়ি দেশের আর্থসামাজিক অবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। জাল টাকার একটি বিশাল সিন্ডিকেট দেশের অভ্যন্তরে কাজ করছে। ওই চক্রের হোতা সেলিম ২০১৮ সালে ৫৪ লাখ ভারতীয় মুদ্রা ও ৫ লাখ টাকা দেশি মুদ্রাসহ র‌্যাবের কাছে ধরা পড়েছিল। কিছুদিন জেলে থাকার পর আবার বেরিয়ে এসে একইভাবে জাল টাকার কারবার শুরু করে। আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সেলিম ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকার জাল নোট ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলো।

র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, দুই বাসা থেকেই জব্দ করা হয় জাল টাকা বানানোর জন্য ব্যবহৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ডাইস, কাটারসহ প্রায় ৩০ কোটি টাকার সমপরিমাণ জাল টাকা বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল (কাগজ, কালি, জলছাপ দেয়ার সমাগ্রী) উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের ব্যাপকতা এবং ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর অসাধু চক্র দেশব্যাপী জাল টাকা ছড়িয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বিশেষ করে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটের ব্যাপক লেনদেনকে কেন্দ্র করে জাল টাকা ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এক শ্রেণীর অসাধু চক্র আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে জাল টাকা তৈরি করে বাজারে ছাড়ছে। বিশেষ করে ১০০ টাকার নোটকে সিদ্ধ করে ৫০০ টাকার ছাপ দিয়ে এবং বিশেষ রং, কাগজ ও প্রিন্টার ব্যবহার করে তৈরিকৃত ১ হাজার টাকার জাল নোটগুলো তৈরি করছে। যা দেখে আসল না নকল চেনা সাধারণ জনগণের পক্ষে প্রায় অসম্ভব।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, তারা জাল টাকা তৈরির সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। গ্রেফতার মঈন মো. মনিরকে জাল টাকা ছাপানোর সহযোগিতা করতো এবং প্রিন্ট করা টাকা কাটিং করার পরিকল্পনা করেছিল। রমিজা বেগম সেলিমকে কাগজে আঠা লাগানোর কাজে সহয়তা করত এবং প্রয়োজনীয় ফুটফরমাশ খাটত। মোছা. খাদিজা বেগম এবং শাহীনুর সাদা কাগজে নিরাপত্তা সুতার জলছাপ দেয়ার কাজ করত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাল টাকা

২০ অক্টোবর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ