মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন-মদতে ভারত কার্যত অনানুষ্ঠানিকভাবে চীনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ব্রিকস ও এসসিও সঙ্গী ও অংশীদার চীনের বিরুদ্ধে ভারতের এই সিদ্ধান্ত হবে বিপজ্জনক। কারণ এ ধরনের নাটকীয় পদক্ষেপের পরিণামে ভারত তার ঘরোয়া আর্থ-সামাজিক ও আঞ্চলিকভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী পরিণাম থেকে রক্ষা পাবে না।
ভারত অবশেষে গালওয়ান ঘটনার প্রেক্ষাপটে চীনকে সংযত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মহাদেশীয় প্রক্সির যে ভূমিকা দীর্ঘ দিন ধরে পালন করছিল, সেটিই আরো প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীনের সাথে ভারতের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে অবনতি হয়েছে যে রাশিয়া আর চীন-ভারত শান্তির মধ্যস্ততা করবে না। সর্বোচ্চ যা করতে পারে তা হলো এই সঙ্কটের মধ্যে একটি ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা।
ভারত প্রথম যে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তা হলো চীনা পণ্য বেসরকারিভাবে বয়কট করা। এর মাধ্যমে ভারত চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে এটা দেখাতে যে তারা অর্থনৈতিকভাবে চীনের কাছ থেকে খুবই দূরে সরে এসেছে। আর এর মাধ্যমে ভারতের সাথে সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি করতে চাচ্ছে আসন্ন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সভায়।
এটি চরমভাবে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল। এটি ভারতের সক্ষমতার ওপর মারাত্মক আঘাত হানতে পারে, যদি সে এ ধরনের নাটকীয় উদ্যোগের আর্থ-সামাজিক বিপর্যয়কর পরিণতি যথাযথভাবে সামাল দিতে না পারে। ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি আমলে না নেয়া হলে, চীন হলো ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। তাছাড়া ভারতে শীর্ষ বিনিয়োগকারীও চীন। ফলে চীনের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট করে স্বাভাবিক থাকা ভারতের পক্ষে সম্ভব হবে না।
ভারতের প্রথম টার্গেট হলো, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের চাপে পড়ে চীন থেকে সরে আসা বিদেশী কোম্পানিগুলোকে ভারতে ডেকে নেয়া। কাজটি আরো সহজভাবে করার জন্য ভারতের কোনো কোনো রাজ্য তার শ্রমআইন স্থগিত করেছে বলে মে মাসে হিন্দুস্তান টাইমস খবর প্রকাশ করেছে। এসব কোম্পানিগুলোকে নিয়ে আসতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু বিদ্যমান জাতিগত ও ধর্মীয় বৈষম্যের কারণে সরকারের পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
ভারত তার স্বার্থে চীনকে বৃত্তাবদ্ধ করতে চায়। কিন্তু তা হিতে বিপরীতও হতে পারে। কারণ চীন অনেক দিন ধরেই ভারতের প্রতিবেশীদের প্রলুব্ধ করে যাচ্ছে। এর একটি উদাহরণ সাম্প্রতিক কালে ঘটেছে। বাংলাদেশকে ৯৭ ভাগ করমুক্তভাবে রফতানির সুযোগ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে চীন। এতে করে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে বলেই ধারণা করা যায়।
ভারত তার আঞ্চলিক আগ্রাসন আড়াল করে রেখেছিল দীর্ঘ দিন ধরে। আন্তর্জাতিকভাবে দেশটি নিজেকে শান্তিপূর্ণ হিসেবে প্রদর্শন করার চেষ্টা করেছিল। অনেক দেশ বিষয়টি ধরতে পারছিল না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ঘুরতে শুরু করেছে। অনেক দেশই এখন প্রকৃত সত্য জানতে পেরেছে। ভারত যে একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র, তা অনেকেই এখন বুঝতে পারছে। কিন্তু তবুও তাদের পক্ষে ভারতকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এই বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, চীনের কাছ থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা চালানোর মাধ্যমে ভারত তার ঘরোয়া ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ব্যাপারে বড় ধরনের ঝুঁকি গ্রহণ করছে। আর যা ঘটছে, তা যাই হোক না কেন, তাতে যুক্তরাষ্ট্র লাভবান হবে বলেই সে ভারতকে উৎসাহিত করছে।
ভারতের শ্রম বিধিবিধান অপসারণ করার ধারা অব্যাহত থাকলে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বিপুল লাভের ব্যবস্থা করা হবে। তবে ব্যাপক মাত্রায় শ্রম শোষণ হলে যে অসন্তোষের সৃষ্টি হবে তার দায় চীনের ভারতবিরোধী প্রচারণাকে দায়ী করা হবে এবং আমেরিকান সামরিক বাহিনী তখন চীনকে সংযত করার জন্য ভারতের কাছে আরো অস্ত্র বিক্রি করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের জন্য যে ব্যবস্থা করে দিচ্ছে, তা ব্যর্থ হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের যেকোনো স্থানে তার বিশাল কৌশলগত উচ্চাভিলাষ পূরণ করার জন্য গঠনমূলক বিশৃঙ্খলা মোতায়েন করতে পারে। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।