যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু ও মিজানুর রহমান মিল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য পদে যুক্ত হলেন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিন নেতাকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রাপ্তরা হলেন
সাইয়িদ শায়খ ফাদি জুবা ইবনে আলি আল হাসানি একজন জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার। সিরিয়ান বংশোদ্ভূত এই স্কলার বর্তমানে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অবস্থিত বৃহৎ ইসলামি মারকাজ সিরাজাম মুনিরা অ্যাডুকেশন সেন্টারের প্রিন্সিপাল ও খতিব। তাফসির, হাদিস, ফিকহ ও ইলমে কিরাতে পারদর্শি বিদ্ধান এ আলেম যুক্তরাজ্য থেকে অনলাইন ও অফলাইনে বিশে^র বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে দ্বীনি শিক্ষা প্রদান করছেন। শিশু, যুবক, মধ্যবয়সী ও বৃদ্ধদের কাছেও তিনি সমান গুরুত্বপূর্ণ। সিরাজাম মুনিরার প্রিন্সিপাল হিসাবে যোগদানের মাত্র ২ বছর সময়ের মধ্যেই তিনি মানুষের মাঝে দ্বীনি জ্ঞানের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
সাইয়িদ শায়খ ফাদি এখন যুক্তরাজ্যের ইলমি দুনিয়ায় এক আলোচিত ও আলোকিত নাম। প্রতিদিন শত শত মানুষ তাঁর সহবতে আসছেন। তাঁর সংস্পর্শে এসে তারা দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের বিধান সম্পর্কে জ্ঞাত হচ্ছেন। প্রিয়নবী (সা.) এর জীবনী শুনছেন এবং নিজেদের মধ্যে আমল করছেন। শুক্রবারে তাঁর পেছনে জুমার নামাজ আদায় করতে ও খুতবা শুনতে দূর-দুরান্ত থেকে হাজারও মুসল্লি আসেন। শুধু ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষই নন সাধারণ মুসল্লিরাও তার নিকট বুখারি শরিফের হাদিস শ্রবন করছেন। একদম প্রথম থেকে পবিত্র কুরআন তারতিলের সাথে তেলাওয়াত শিখছেন। দিনের নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও প্রতি ওয়াক্ত সালাত শেষে মুসল্লিদের জরুরি মাসয়ালা-মাসায়েল শিক্ষা দিচ্ছেন। তাঁর অগাধ পান্ডিত্যে মুগ্ধ বিশে^র বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা। করোনার সময়েও এই শায়খ অনলাইনে দরস দিচ্ছেন বুখারি শরিফের। ওয়াজ ও নসিহত করছেন। আল্লাহর পথে মানুষকে ধাবিত করছেন। ব্যবসায়ী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা তার সংস্পর্শে এসে কুরআন শিখতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ইতোমধ্যে অনেকেই কুরআন শরিফ পড়া সম্পন্ন করেছেন। তাঁর বুখারি শরীফের দরসে উপস্থিত হচ্ছেনÑ ইয়েমেন, সুমালিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, তুরস্ক, সিরিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা।
সাইয়িদ শায়খ ফাদি তাঁর বক্তব্যে বলে থাকেনÑ মানুষ আল্লাহকে চিনতে হলে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। জ্ঞান অর্জনের জন্য শায়খদের নিকট যেতে হবে। শুধু বারাকাহ’র জন্য শায়খ নন। শায়খরা মানুষের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করেন ও তাকওয়ার শিক্ষা দিয়ে ব্যক্তিকে আল্লাহ পর্যন্ত েেপৗছিয়ে দেন। পবিত্র কুরআন হচ্ছে জ্ঞানের আধার। সকলকে কুরআন পড়তে হবে ও বুঝার চেষ্টা করতে হবে। মাজহাবের ইমামদের সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা মাজহাবের ইমামরা হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ ইসলামি স্কলার। মানুষকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসতে হবে।
শায়খ ফাদি সিরিয়ার বড় আলেম পরিবারের সন্তান। তাঁর দাদা মরহুম আল্লামা শায়খ বদর উদ্দিন আল হাসানি ছিলেন তৎকালিন সিরিয়ার বড় বুযুর্গ ও মুজাদ্দিদ। হাজার হাজার আলেম-উলামার মহান উস্তাদ। তাঁর বাবা ছিলেন ওলি আউলিয়া ও বিদ্ধান ব্যক্তিদের সহবতপ্রাপ্ত। তিনি তাঁদের খেদমত করেছেন। এসব বুযুর্গদের মধ্যে শায়খ মাহমুদ রংকৌসি, শায়খ সাইয়্যিদ মক্কি আল কাত্তানী (রহ.)’র মতো ওলিদের সংস্পর্শ গ্রহণ করেছেন। শায়খ ফাদি জুবার মা একজন মহান ধার্মিক মহিলা। শতবছর বয়সী এই বৃদ্ধা এখনো বেঁচে আছেন।
সিরিয়ায় রাজনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়ে তিনি দেশ ত্যাগ করেন। সিরিয়ার জনগণের উপর শায়খ ফাদির বড় প্রভাব ছিল। সেখানে তার দরসে প্রতিদিন ৪/৫ হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকত এবং উপকৃত হত। দামেস্কের মুফতিরাও ফিকহের জটিল বিষয় নিয়ে তাঁর স্মরণাপন্ন হতেন। আলেম-উলামারা তার নিকট থেকে ইলিম অর্জন করতেন।
শায়খ ফাদি জুবা খুব অল্প বয়সেই পবিত্র কুরআন মুখস্থ করেন। তার বাল্যকালের শিক্ষক ছিলেন শায়খ উমার সাববাগ। তিনি দামেস্কের বিখ্যাত আবু নুর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি হাদিস মুখস্থ করেন শায়খ নূর উদ্দিন ইতর (রাহি.) এর নিকট। শায়খ ফাদি হাদিসের বর্ণনাকারীদের সনদ ও জীবনীসহ নবীজির প্রায় ১০ হাজার হাদিস মুখস্থ করেছেন।
এছাড়া তিনি শায়খ রজব দীপ (র.) শায়খ মোস্তফা আলকিন (হাফি.), শায়খ বাশির আলবানি, শায়খ রতিব নাবুলসি (হাফি.) শায়খ রামাদ্বান আল বুতি (রহ.) এর নিকট আলাদাভাবে চার মজহাবের ফিকহ চর্চা করেন এবং ফিকহ শাস্ত্রে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। শায়খ ফাদির কেরাতের শিক্ষক ছিলেন দামেস্কের বিখ্যাত মধ ফাদ বিশবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্কলার শায়খ আব্দুর রাজ্জাক হালাবি (রহ.)। তিনি তাকে ইমাম হাফসের কিরাতের ইজাযত প্রদান করেন।
শায়খ ফাদির বয়স যখন ১৭ বছর তখন আধ্যাত্মিক ইলম অর্জনের জন্য তিনি সিরিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি ও আধ্যাত্মিক শায়খ আহমদ কাফতারুর সাহচার্যে চলে যান এবং সেখানে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রায় ৮ বছর তালিম-তরবিয়ত গ্রহণ করেন। সেখানে তিনি শায়খ কাফতারু ছাহেব ও শায়খ রজব দীপ (রাহি.) এর সহবতে থেকে নকশেবন্দি, মুজাদ্দেদি ও খালিদি তরিকার সবক গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, সাইয়িদ শায়খ ফাদি জুরা ২০০৯ সালে আলহাজ মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফর করেন। এসময় হযরত শাহজালাল (র.), শাহ পরান (র.), শাহ মোস্তফা (র.) ও ফুলতলী ছাহেবের মাজার জিয়ারত করেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তিনি যোগ দেন।
প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।