Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল্লাহর হুকুম ছাড়া কিছুই হয় না

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

কোরআন মাজীদ বলে, পৃথিবী, আকাশ এবং সমগ্র জগৎসংসার শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার হুকুমের আওতাভুক্ত। সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা ও রিজিকদাতা যেমন আল্লাহ, তেমনিভাবে সবার ওপর শুধু তারই হুকুম চলে। বলা হয়েছে, ‘লাহুল খালকু ওয়াল আমরু’। অর্থাৎ, সৃষ্টিও তারই এবং হুকুম তারই’ (সূরা আরাফ : আয়াত-৫৪)।

আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ওয়ালাহুল হুকমু ওয়া ইলাইহি তুরজাউন’। অর্থাৎ, একমাত্র তারই হুকুম চলে এবং তোমরা সবাই তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে’ (সূরা কাসাস : আয়াত-৭০)। তিনি যা করতে চান তাই করেন। তাকে ছাড়া কারো অধিকারের কিছুই নেই। না কেউ কাউকে অস্তিত্ব দান করতে পারে, না কেউ কারো কাছ থেকে অস্তিত্ব হরণ করতে পারে। না জীবন ও মৃত্যুর ওপর কারো হাত আছে, না কেউ কারো লাভ-ক্ষতির মালিক।

মূর্খ, অজ্ঞ ও পথভ্রষ্ট লোকেরা নিজেদের অজ্ঞতার দরুন যেসব সত্তা সম্পর্কে মনে করে, বিশ্ব-ব্যবস্থায় তাদেরও কোনো দখল রয়েছে এবং তারাও যাকে ইচ্ছা লাভ ক্ষতি পৌঁছাতে পারে, কোরআন মাজীদ জায়গায় জায়গায় বলে, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তাদের ক্ষমতায় কিছুই নেই। তারা সবাই সমবেত হয়েও নিজ ক্ষমতায় কিছুই করতে পারে না। এমনকি একটি মাছি কিংবা একটি পিঁপড়াও বানাতে পারে না। কারো ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করতে পারে না। কারো সাহায্য-সহায়তা করতে পারে না।

কোরআনের এ বক্তব্য তারই ভাষায় শুনুন, ‘ভূমন্ডল ও নভোমন্ডলের সাম্রাজ্য আল্লাহ তায়ালার জন্যই নির্ধারিত। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। আর আল্লাহ তায়ালা ছাড়া তোমাদের আর কোনো কর্ম সম্পাদক ও সাহায্যকারী নেই’ (সূরা তওবাহ : আয়াত-১১৬)। সূরা ফাতিরে বলা হয়েছে, ‘এ আল্লাহই তোমাদের পরওয়ারদেগার ও মালিক। সাম্রাজ্য তারই আর আল্লাহকে ছাড়া যেসব সত্তাকে তোমরা ডাকো, তারা তো খেজুরের বীচির হালকা ঝিল্লিরও (মতো কোনো মূল্যহীন ও নিকৃষ্ট বস্তুর) মালিক নয়’ (সূরা ফাতির : আয়াত-১৩)।

এ সম্পর্কে সূরা হজ্জে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ছাড়া যেসব সত্তাকে তোমরা ডাকো, তারা একটি মাছিও বানাতে পারে না, যদি সবাই মিলেও সে চেষ্টা করে’ (সূরা হজ্জ : আয়াত-৭৩)। সূরা সাবায় বলা হয়েছে, ‘হে নবী, আপনি তাদেরকে বলে দিন যে, আল্লাহকে বাদে তোমরা যাদেরকে নিজেদের কর্মনির্বাহী ও অভাব মোচনকারী মনে করো, তাদেরকে ডেকেই দেখো, ভূ-মন্ডল ও নভোমন্ডলে তাদের অণু পরিমাণ ক্ষমতাও নেই। না তাতে তাদের কোনোরকম অংশীদারিত্ব রয়েছে, না তাদের কেউ তার সাহায্যকারী আছে। (অর্থাৎ, না কোনো কিছু তাদের মালিকানায় আছে, না তার সমকক্ষ আছে। আর নাই বা তাদের সাহায্যের কোনো প্রয়োজন আল্লাহ তায়ালার রয়েছে)’ (সূরা সাবা : আয়াত-২১)।

সূরা যুমারে বলা হয়েছে, ‘হে নবী আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, বলো দেখি আল্লাহকে ছাড়া যাদেরকে তোমরা ডাকো, যদি আল্লাহ আমাকে কোনো কষ্ট দিতে চান, তা হলে কি তারা তা অপসারিত করতে পারবে? অথবা আল্লাহ যদি আমাকে নিজের রহমতে সিক্ত করতে চান, তা হলে কি তারা আল্লাহ তায়ালার রহমতকে আমার কাছ থেকে বারণ করতে পারে? (কখনো নয়) আপনি বলে দিন, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট। ভরসাকারীরা তারই ওপর ভরসা করে থাকে’ (সূরা যুমার, আয়াত-৩৮)। সূরা শূরায় বলা হয়েছে, ‘তারা কি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কোনো কর্মনির্বাহী বানিয়েছে? বস্তুত আল্লাহই হলেন সবার কর্মনির্বাহী’ (সূরা শূরা : আয়াত-৯)।



 

Show all comments
  • কাজী হাফিজ ২৫ জুন, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    তাকদির হচ্ছে, সর্বজ্ঞানী হিসাবে আল্লাহ তা’আলার পূর্ব জ্ঞান ও হিকমতের দাবি অনুযায়ী সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য সব কিছু নির্ধারণ। আল-কুরআন আমাদেরকে জানাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সব কিছুর ব্যাপারে জানেন।
    Total Reply(0) Reply
  • কামাল রাহী ২৫ জুন, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    ‘আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।’ (দাহর ৭৬/৩)।
    Total Reply(0) Reply
  • বাতি ঘর ২৫ জুন, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    আল্লাহ বলেন ,أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ ‘যেখানেই তোমরা থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদের পাকড়াও করবেই। এমনকি যদি তোমরা সুদৃঢ় দুর্গেও অবস্থান কর’ (নিসা ৪/৭৮)।
    Total Reply(0) Reply
  • তাসফিয়া আসিফা ২৫ জুন, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    আসুন! আমরা মৃত্যুর আগেই সাবধান হই। আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর জান্নাতী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন- আমীন!
    Total Reply(0) Reply
  • কে এম শাকীর ২৫ জুন, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    আল্লাহ যা চান তাই করেন এই বিশ্বাস রাখার নাম হলো ইমানের পরিচয়
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ খান ২৫ জুন, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
    আল্লাহ জীবন এবং মৃত্যুর মালিক।তিনিই সকল ক্ষমতার উত্‍স। তিনি চাইলেই সব পারেন,কোন উছিলা লাগেনা।হযরত ইব্রাহীম (আ)কে ৪০দিন পর্যন্ত জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে লালন পালন করেছিলেন,আগুন তাঁর একটা পশমও পুড়ে নি।ইউনুস (আ)কে বিশাল সামুদ্রিক মাছের পেটের মধ্যেও জীবিতরেখেছিলেন।আল্লাহ অনাদি অনন্ত।তিনিতখনও ছিলেন এখনও আছেন।আল্লাহর এরকম ক্ষমতা যে বিশ্বাস করে না,সে নাস্তিকএবং কাফের।
    Total Reply(0) Reply
  • ahmed hossain khan ২৫ জুন, ২০২০, ৮:৪৮ এএম says : 0
    sahan sahi somrater sadde e sob, doradom a tar droto doyar akkoni huk udbob, vob o bemar a tar bandara aj nistob, ojana ocena cuache korce aj lokko jan jobd, jate jahan aj jimey a, sudu mabuder maya e dite par a mohamari komy a, kandu kandu hee khudar insan, khudar karimi karismae hobe coronar obosan,
    Total Reply(0) Reply
  • Joynul Abedin ২৫ জুন, ২০২০, ৫:২৬ পিএম says : 0
    Allah is almighty
    Total Reply(0) Reply
  • MD JOYEL MIAH ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৯:৫৯ পিএম says : 0
    আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন_আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আল্লাহ তাআলা মহান,তিনি এক ও অদিত্বীয়, আল্লাহ তায়ালা যা চান তাই করতে পারেন_এটা আমার বিশ্বাস এবং এটাই সত্যি আল-কুরআনের বাণী। আল্লাহ তায়ালা রহমতে_বান্দাদের সুখ শান্তি, জগৎসংসার, আল্লাহ চাইলে সব করতে পারেন_আল্লাহ চাইলে এই মূহুর্তে আমার মৃত্যু হতে পারে, আল্লাহ তাআলা চাইলে আমাকে আরো ৫০ বছর বাচিয়ে রাখতে পারেন।তিনিই সর্বক্ষমতাবান। আপনরা সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ তাআলা যেনো আমাকে ইসলামের অনুসারে চলার তৌফিক দান করে, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, আপনারাও ভালো থাকবেন,আল্লাহ হাফেজ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন