Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অচলাবস্থার শেষ কবে

চট্টগ্রামের পোর্ট কানেকটিং রোড সংস্কারে ধীরগতি পণ্যপরিবহন স্থবির জনদুর্ভোগ

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২০, ১২:০৩ এএম

টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর কাজ শুরু হতেই বৃষ্টির বাগড়া। গতকাল সোমবার সকাল থেকে অপেক্ষা করেও শুরু করা যায়নি ঢালাইয়ের কাজ। সড়কের এক অংশে কার্পেটিংয়ের আয়োজন চলছে। অপর অংশে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানিতে ডোবার আকার ধারণ করেছে। প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে এখনও কাদামাটির স্তুপ। দেখে মনে হবে গ্রামের কোন পরিত্যক্ত ডোবা। তাতে আটকা পড়ছে ট্রাক, লরি, কার্ভাডভ্যানসহ আমদানি-রফতানি পণ্যবাহি ভারী যানবাহন।
এমন বেহাল চিত্র দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অংশ চট্টগ্রাম নগরীর পোর্ট কানেকটিং (পিসি) সড়কের। সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে দেশের প্রধান মহাসড়কের সংযোগ তৈরি করা এই সাড়ে ৫ কিলোমিটার সড়কের সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। এই বর্ষার আগেই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও প্রায় ৩০ ভাগ কাজ বাকি। জাইকার অর্থায়নে ১৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে এক বছর আগে। তবে কাজ কবে শেষ হবে, কবে এ অচলাবস্থা এবং দুর্ভোগের অবসান হবে তা কেউ জানে না।

চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি অচল থাকায় বন্দরমুখী ভারী যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এসব যানবাহন সুবিধাজনক যেকোন সড়কে চলাচল করতে গিয়ে পৌনে এককোটি মানুষের এই মহানগরী পড়ে আছে যানজটের আবর্তে। কাজের ধীরগতিতে সরকারের মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে চিটাগাং চেম্বার, ব্যবসায়ী নেতারা বহুবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী অনেকবার রাস্তায় নেমেছেন। তবুও কাজে গতি আসেনি। এই দুর্ভোগের শেষ কবে, এমন প্রশ্ন এখন নগরবাসীর।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক ইনকিলাবকে বলেন, করোনার কারণে টানা ছুটিতে তিনমাস কাজ করা যায়নি। রোববার থেকে একাংশে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বৃষ্টির কারণে করা যাচ্ছে না। তবে বৃষ্টি থামলে নিমতলা থেকে বড়পুল পর্যন্ত অংশে কার্পেটিং করা হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই অংশের কাজ শেষ করা যাবে।

কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব বলেন, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আনন্দিপুর থেকে সাগরিকা হয়ে অলংকার মোড় পর্যন্ত। ওই অংশের ঠিকাদারকে বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও কাজে গতি আসেনি। তবে এখন থেকে দ্রুত কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছেন ঠিকাদার।

তবে এই বর্ষায় কাজ আদৌ শেষ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, করোনার অজুহাতে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারের লোকজন চলে যায়। সড়কের ওই অংশে বড় বড় ডোবার সৃষ্টি হয়েছে। তাতে আটকা পড়ছে ভারী যানবাহন। এতে তীব্র যানজট হচ্ছে। ভারসাম্য হারিয়ে উল্টে যাচ্ছে যানবাহন। কোন কোন অংশে ইট, বালিসহ নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে।

বৃষ্টিতে কাদায় পুরো এলাকা সয়লাব হয়ে গেছে। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কের দুই পাশের দোকান পাটের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ বছরের পর বছর থেকে। এই ভোগান্তি শুধু ওই এলাকাতেই সীমাবদ্ধ নেই। যানবাহনের চাপ পড়েছে অন্য সড়কগুলোতেও। এই অচল সড়ক এড়িয়ে যাচ্ছেন চালকেরা। এতে অলংকার থেকে দেওয়ানহাট হয়ে কদমতলী পর্যন্ত ডিটি রোড, বন্দর থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত টোল রোড, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, জাকির হোসেন রোড় এবং পাহাড়তলী হয়ে টাইগারপাস সড়কেও ভারী যানবাহন চলাচল করছে। ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, একটি সড়কের জন্য মহানগরীর বিরাট অংশে তীব্র যানজট হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ