Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেনো গেল ২০ প্রাণ : সর্বদলীয় বৈঠকে বিরোধীদের এমন প্রশ্নের মুখে মোদি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২০, ৭:৫৪ পিএম | আপডেট : ৭:৫৪ পিএম, ১৯ জুন, ২০২০

সরকার ঘুমিয়ে না থাকলে কি লাদাখে এমন ঘটনা ঘটতে পারত? প্রশ্ন তুলছে ভারতের বিরোধী শিবির। সেই আবহেই শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গলওয়ান উপত্যকায় ঠিক কী ঘটেছিল, এখন কী পরিস্থিতি সীমান্তের, এর পরে কী করতে চাইছে সরকার, এই সব বিষয়ই দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্বকে আজকের বৈঠকে জানানোর কথা প্রধানমন্ত্রীর।-আনন্দবাজার

তবে বৈঠক শুরুর আগেই দেশের বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধীর তোপ, সরকারের অসতর্কতার মূল্য জীবন দিয়ে চোকাতে হল জওয়ানদের। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলবেন? সাফাই দেবেন, নাকি ত্রুটি স্বীকার করবেন? নাকি একেবারেই এড়িয়ে যাবেন বিরোধীদের প্রশ্নগুলো? রাজনৈতিক শিবির তাকিয়ে সে দিকেই। বিকেল ৫টায় সর্বদলীয় বৈঠক শুরু হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সেই হচ্ছে বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠকে রয়েছেন সরকারের তরফ থেকে। বিজেপির তরফ থেকে যোগ দিয়েছেন সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা। কংগ্রেসের তরফে থাকবেন সভানেত্রী সনিয়া গাঁন্ধী।

প্রতিনিধি না পাঠিয়ে সব দলের শীর্ষ পদাধিকারীরাই যেন যোগ দেন বৈঠকে, এমনই অনুরোধ করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে। সে অনুরোধে সাড়া দিয়ে তৃণমূলের তরফেও বৈঠকে যোগ দিয়েছেন দলের চেয়ারপার্সন তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। এ ছাড়া বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি সভাপতি নবীন পট্টনায়ক, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরে, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার, সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব, বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। আমন্ত্রণ পেয়েছেন সিপিআই-এর ডি রাজা, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিও।

বিতর্ক তৈরি হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল আমন্ত্রণ না পাওয়ায়। আমন্ত্রণ পায়নি লালুপ্রসাদের আরজেডি, আসাদউদ্দিন ওয়াইসির এআইএমআইএম-ও। দেশের সীমান্তে যখন বিপজ্জনক সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি, তখন প্রধানমন্ত্রীর সর্বদল বৈঠকে এই দলগুলোকে কেন ডাকা হল না? এখানেও কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চাওয়া হল? এমন প্রশ্ন তোলা শুরু হয়েছে ওই দলগুলির তরফে। কিন্তু সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে মাপকাঠির ভিত্তিতে সর্বদল বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দলকে, আরজেডি, আপ বা এআইএমআইএম সেই মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হতে পারছে না।

তবে বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর উপরে চাপও কিন্তু তৈরি হয়েছে যথেষ্টই। ২০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে সীমান্তে। তার প্রেক্ষিতে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। আর বৈঠকের কিছুটা আগে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা ওয়েনাডের সাংসদ রাহুল গাঁধী আরও তীক্ষ্ণ আক্রমণে গিয়ে টুইট করেছেন, ‘‘এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, ১) আগে থেকে পরিকল্পনা করেই গলওয়ানে হামলা চালিয়েছে চিন, ২) ভারত সরকার ঘুমোচ্ছিল এবং সমস্যার মানতেই চায়নি, ৩) জীবন দিয়ে তার মূল্য চোকাতে হয়েছে জওয়ানদের।’’

আজকের বৈঠকে এই প্রশ্নগুলোর মুখে প্রধানমন্ত্রীকে পড়তে হতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গলওয়ান উপত্যকায় ঠিক কী ঘটল, সে কথা বিশদে তো জানাতেই হবে। কেন ভারতীয় বাহিনীর ২০ জনকে শহিদ হতে হল, তার জবাবও দিতে হতে পারে। বিদেশ মন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়েছে, চীন সুপরিকল্পিত ভাবেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রশ্নও তৈরি হয়েছে সেখান থেকেই। হামলা যদি সুপরিকল্পিতই হয়ে থাকে, তা হলে ভারত সরকার কী করছিল? চীন যে এই রকম পরিকল্পনা করেছে, তা আগে থেকে আঁচ করা গেল না কেন? তা হলে কি গোয়েন্দা ব্যর্থতা? নাকি যথেষ্ট সতর্কতার অভাব? এই সব প্রশ্নের মোকাবিলা প্রধানমন্ত্রী তথা সরকার কী ভাবে করেন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ। সীমান্তে গত কয়েক দিন ধরে সামরিক প্রস্তুতি দ্রুত বাড়িয়েছে ভারত। কিন্তু কী পদক্ষেপ করা হতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। এ দিনের বৈঠকের পরে সরকারের সিদ্ধান্ত অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।



 

Show all comments
  • প্রবাসী-একজন ১৯ জুন, ২০২০, ৯:২৭ পিএম says : 0
    "কেন ভারতীয় বাহিনীর ২০ জনকে শহিদ হতে হল, …" ...অমুসলিমরাও এযুগে শহীদ আখ্যা পায়??? তার মানে শহীদ শব্দ শুনলে ভালো করে খোঁজ-খবর না নিয়ে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করা যাবেনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ