পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মেরামতে ২৫০ কোটি টাকা চেয়েছে স্থানীয় সড়ক বিভাগ
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চারটিসহ কয়েকটি জেলার সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো এলাকার সড়ক জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আবার কোনো কোনো এলাকার সড়কের উপর দিয়ে এখনও বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সব এলাকার মানুষ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের হিসাবে এসব জেলায় ৭০ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কগুলো মেরামতে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্থানীয় সড়ক বিভাগ। এর মধ্যে ২৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে সড়ক মেরামতের জন্য। দীর্ঘমেয়াদি মেরামতের জন্য আরো প্রায় ২২১ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায় থেকে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তথ্য সংগ্রহ করেছে সওজ অধিদপ্তর। অন্যদিকে, এলজিইডি আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক মেরামতে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। করোনার মধ্যেও চলছে সড়ক সংস্কারের কাজ।
সড়ক অধিদপ্তরের তথ্য মতে, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও ভোলা জেলায় ৭০ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে তিন কিলোমিটারের বেশি সড়ক ওয়াশআউট হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এ চার জেলার ২৩টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সড়কের ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরা জেলায়। জেলার প্রায় ২৮ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একইভাবে বাগেরহাটে ২০ কিলোমিটার, ভোলায় ১৫ কিলোমিটার ও খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়ক।
সওজ সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলায়ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক, সেতু ও কালভার্ট। সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ এলাকায়। বাগেরহাটের মোংলা, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ এলাকায়ও ভেঙে পড়েছে সড়ক অবকাঠামো। আম্পানে রক্ষা পায়নি পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার উপক‚লবর্তী অঞ্চলের সড়ক-সেতুও। সুন্দরবনের কাছের কলাঘোলা ও ত্রিমোহনী এলাকায় মানুষের সদর উপজেলায় যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম আশাশুনি-কলাঘোলা-ত্রিমোহনী সড়ক। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সড়কটির প্রতাপনগর, দয়ারঘাট, কুরিকাউনিয়া, শ্রীওনাসহ ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক ভেঙে প্রবাহিত হয়েছে জোয়ারের পানি। এতে যাতায়াত নিয়ে বেশ বিপদে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সওজ অধিদপ্তরের যেসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার বেশির ভাগ পড়েছে সংস্থাটির খুলনা সার্কেল অফিসের মধ্যে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের বিষয়ে খুলনা সার্কেলের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী তাপসী দাস বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা অঞ্চলের সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানিতে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে গেছে। কোথাও সড়ক ওয়াশআউট হয়েছে। সেতু-কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের একটি তালিকা দিয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে একটি আবেদন আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের অনেকগুলো এখনো নিয়মিত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। বাঁধ মেরামত না হওয়া পর্যন্ত এসব সড়কে কোনো কাজ করা সম্ভব হবে না। এর বাইরে যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয় মেরামত এরই মধ্যে করা হয়েছে।
আম্পানে সওজ অধিদপ্তরের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগেরও (এলজিইডি) বিপুল পরিমাণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু খুলনা জেলাতেই সংস্থাটির ২৭২ কিলোমিটার সড়ক ও ২০০-এর বেশি সেতু-কালভার্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলজিইডি সূত্র জানায়, খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংখ্যা ১৩৮, যার দৈর্ঘ্য ২৭২ কিলোমিটার। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে কয়রা উপজেলায় ২৩ কোটি টাকা, ডুমুরিয়ায় ১৫ কোটি ৪৫ লাখ, তেরখাদায় ৭ কোটি ৩০ লাখ, রূপসায় ৬ কোটি ৮২ লাখ, দাকোপে ৫ কোটি ৯০ লাখ, পাইকগাছায় ৬ কোটি ৮৪ লাখ, দিঘলিয়ায় ৪ কোটি ৭০ লাখ, বটিয়াঘাটায় ৪ কোটি ৬৫ লাখ ও ফুলতলায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার সড়ক, সেতু ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলজিইডির সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্য জেলাগুলোতেও। এলজিইডি ঢাকা অফিসের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক মেরামতের জন্য ইতোমধ্যেই প্রকল্প নেয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণের মধ্যেও এগিয়ে চলেছে সড়ক সংস্কারের কাজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।