প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
এক তুর্কি সিরিয়ালে বদলে গেছে পাকিস্তানের বিনোদন পাড়ার চিত্র। যেমনটি হয়েছিলো বাংলাদেশেও। সুলতান সোলাইমান প্রচারের পর পর বিপুল সাড়া পড়ে যায় তেমন পাকিস্তানে এরতুগ্রুলের পুনরুত্থান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
তুরস্কের জনপ্রিয় ঐতিহাসিক টিভি নাটক ডিরিলিস এরতুগ্রুল (এরতুগ্রুলের পুনরুত্থান) পাকিস্তানের টিভি দর্শকদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এপ্রিল মাস থেকে নাটকটি ডাব করে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো শুরু হওয়ার পর থেকে এই নাটক দর্শকদের মধ্যে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছে।
পাকিস্তানে এই প্রথম, যে কোন তুর্কি নাটক জনপ্রিয় হল তা নয়। কিন্তু এরতুগ্রুল - যাকে অনেকেই অভিহিত করে থাকে 'মুসলিম গেম অফ থ্রোনস্' নামে - এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী।
এই নাটকের পেছনে সরাসরি সমর্থন রয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। ধারণা করা হচ্ছে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক কারণে তিনি এই নাটকটির সম্প্রচারে বিশেষ উৎসাহ দিচ্ছেন।
'ইসলামভীতি'র বিরুদ্ধে অস্ত্র?
এই সিরিয়াল পাকিস্তানে যে জনপ্রিয়তার জোয়ার এনেছে সম্ভবত তার পেছনে মূল কারণ মি. খানের ব্যক্তিগত উৎসাহ।
তিনি নিজে যে শুধু এই নাটকটি দেখানোর সুপারিশ করেছেন এবং পিটিভিকে এটা সম্প্রচার করতে বলেছেন তাই নয়, তিনি বলেছেন ইসলামী সভ্যতার গুরুত্ব বুঝতে পাকিস্তানের মানুষকে সাহায্য করবে এই নাটক।
তার এই মন্তব্যের পর থেকেই পাকিস্তানে এই নাটক দেখতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছে এবং এটা ভিউয়ারশিপের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। ঊর্দুতে ভাষান্তর করা সিরিয়াল নাটকের নাম দেয়া হয়েছে এরতুগ্রুল ঘাজি - যোদ্ধা এরতুগ্রুল।
ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করার পর থেকে বলে আসছেন যে, "আমি এমন একটা পাকিস্তান গড়ে তুলতে চাই, যেটা হবে মদিনায় নবীর সৃষ্ট প্রথম মুসলিম সমাজের আদর্শে অনুপ্রাণিত।"
দেশটির শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক ডন লিখছে "এর মূল কারণ সম্ভবত নিহিত রয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান ও সেসময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের আলাদা এক বৈঠকের মধ্যে।"
সেপ্টেম্বর ২০১৯এর ওই বৈঠকে মি. খান, মি. এরদোয়ান আর মি. মাহাথির যৌথ উদ্যোগে একটি টিভি চ্যানেল চালু করার আইডিয়া নিয়ে কথাবার্তা বলেন, যে চ্যানেল তারা চাইছিলেন ক্রমশ বেড়ে ওঠা ইসলামভীতি ও ইসলাম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে মত তৈরি করবে।
নভেম্বর ২০১৬য় মি. এরদোয়ান তুরস্কে এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এই সিরিয়াল নাটকের প্রশংসা করে বলেছিলেন এটি "জাতির হৃদয় জয় করেছে"। পাকিস্তানে এই সিরিয়ালের বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জনের মাধ্যমে "মি. খানও সম্ভবত তুরস্কে রাজনৈতিক পয়েন্ট অর্জন করতে চাইছেন। পাকিস্তান তুরস্কের সাথে তাদের সম্পর্ক আরো জোরদার করতে চাইছে,"এক নিবন্ধে লিখছে পাকিস্তানের দ্য ডিপ্লোম্যাট সাময়িকী।
মুসলিম মূল্যবোধ 'সঠিকভাবে জাগ্রত'
এই সিরিয়াল নাটকে ১৩শ শতকের মুসলিম ওঘাজ তুর্কি শাসক এরতুগ্রুলের জীবন কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। মনে করা হয় তার পুত্র ওসমান ঘাজি ছিলেন অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।
এতে মোঙ্গল দখলদার, ক্রিশ্চান, বাইজেন্টাইন এবং আনাতোলিয়ার নাইট টেম্পলারের বিরুদ্ধে মুসলিম ওঘাজ তুর্কি বীরদের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
পাকিস্তানে নয়া দাউর-এর মত কিছু মিডিয়া ওয়েবসাইট বলছে এই নাটক "অটোমান সাম্রাজ্য এবং মুসলিম মূল্যবোধকে উজ্জীবিত করেছে"
স্থানীয় একটি জনপ্রিয় দৈনিক দ্য নেশন-এর এক নিবন্ধেও লেখা হয়েছে এই নাটক "মুসলিম বীর, ইসলামের ইতিহাস এবং আদর্শকে সঠিক আলোকে তুলে ধরেছে"।
টিভি সিরিয়াল এবং চলচ্চিত্রগুলোতে মুসলিমদের একটা "নেতিবাচক আলোকে দেখানো হয়", আর সে কারণে এই সিরিয়াল একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছে যেটা মানুষ পছন্দ করছে বলে বিশ্লেষকরা বলছেন।
"মুসলিমরা সবসময় চেয়েছে বিশ্বের মিডিয়াতে মুসলমানদের একটা ইতিবাচক ও শক্তিশালী দিকগুলো সামনে আনা হোক। ডিরিলিস এরতুগ্রুল তাদের সেই দীর্ঘদিনের চাওয়াকে মিটিয়েছে- মুসলিমদের বীরত্বের জয়গান এই সিরিয়াল," এক নিবন্ধে লিখেছে ইংরেজি ভাষার ওয়েবসাইট দ্য গ্লোবাল ভিলেজ স্পেস।
সাংবাদিক আমনা হায়দার ইশানি, দ্য নিউজ ডেইলিতে লিখেছেন- এই টিভি অনুষ্ঠান "বিশ্বে ইসলামভীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে"।
বিবিসি বাংলা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।