বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে :ঢাকা, চট্টগ্রাম এমনকি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশে কে-৯ ডগ স্কোয়াড যোগ হচ্ছে। তবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে ডগ স্কোয়াড যোগের কোনো পরিকল্পনাই এখনো গ্রহণ করেনি পুলিশ সদর দফতর! আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, বিশ্বমানের হোটেল, বিদেশী ও দাতা গোষ্ঠীর আনাগোনা, সমুদ্র বন্দরের উপকণ্ঠের শিল্পনগরী খুলনায় অবৈধ অস্ত্র ও মাদক চোরাচালানের কমতি নেই। এ অবস্থায় নগরীতে তিনটি থানা বাড়ালেও কমেনি কেএমপির জনবল সংকট। র্যাব-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের নিয়মিত অভিযানে মাঝেমধ্যে কিছু অবৈধ অস্ত্র ও চোরাচালান জব্দ হলেও সিংহভাগ অপরাধ থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরেই। তাই অন্য মেট্রোপলিটন পুলিশের ন্যায় খুলনাতেও কে-৯ ডগ স্কোয়াড যোগ করা হলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার হবে বলে আশান্বিত নগরবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশে কে-৯ ডগ স্কোয়াড যোগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। উন্নত বিশ্বের আদলে অপরাধ দমনে দেশের মেট্রোপলিটন পুলিশে কে-৯ ডগ স্কোয়াড গঠন করার পরিকল্পনা নেয় পুলিশ সদর দফতর। এতে জার্মানির শেফার্ড ও বেলজিয়ামের মেলিনোস জাতের কুকুর কেনার নীতিগত সিদ্ধান্তও হয়। দীর্ঘ সময় পেরোলেও অজানা কারণে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল পুলিশ সদর দফতরে। তবে ইউনিট শুরু করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তা ছাড়া বিশেষ ধরনের কুকুরগুলোর প্রশিক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ করাও ব্যয়সাপেক্ষ। এ ধরনের ইউনিট পরিচালনার জন্য পুলিশকেও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এই বিশেষ বাহিনী হলে পুলিশি কাজে সহায়তা হবে। দেশে র্যাব ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো বাহিনীর কাছে এই ইউনিট নেই বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র শনাক্তের জন্য পুলিশের কাছে এক ধরনের স্ক্যানার ভেহিক্যাল থাকলেও তা বিভিন্ন স্থানে নিতে ঝামেলা পোহাতে হয়। এমনকি এই স্ক্যানার দিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে গাড়ি তল্লাশি চালানো হলেও অনেক সময় অত্যাধুনিক পন্থায় অস্ত্র বহনের কারণে তা উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের সহায়তা নিলে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারসহ নানা ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি বললেন, ‘গত বছর অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আমাদের ডাকেননি। কেএমপিতে ডগ স্কোয়াড ইউনিট খোলার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। তবে কে-৯ ডগ স্কোয়াড যোগ হলে ভালোই হতো।’
কেএমপির সূত্রমতে, ১৯৮৬ সালের ১ জুলাই তৎকালীন ৭ লাখ মানুষের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঁচ থানার সমন্বয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়। নগরীর খানজাহান আলী রোডে কেএমপির সদর দফতর। নগরীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ গুণ হয়ে অন্তত ২০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া দেশের ৩য় বৃহৎ বিভাগীয় শহর হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার ভাসমান লোক এখানে ভিড় করছেন। এসব বিষয় মাথায় রেখেই মহানগরীর ক্রমবর্ধিত জনগণ ও এলাকার পরিধি বাড়িয়ে আরো তিনটি থানা স্থাপন করে কেএমপি। থানার সংখ্যা বাড়লেও জনবল বাড়েনি কেএমপিতে। পূর্বের মঞ্জুরিকৃত ২ হাজার ৮৭৮ জনের জনবলই পুরোপুরি নেই। তার উপর চলছে মহানগরীতে ৮টি থানা। জনসংখ্যা ৩ গুণ বাড়লেও তাদের নিরাপত্তা বিধান ও সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য খুলনা মহানগর পুলিশে কোনো জনবল বৃদ্ধি করা হয়নি।
অপরদিকে, ২০০৬ সালের শেষের দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠন হলেও সময়ের আবর্তে মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে ২০১২ সালের মধ্যে জনবল বৃদ্ধিসহ অনেকগুলো পদের সৃষ্টি করা হয়েছে সেখানে। এখন সিলেটে চলছে কে-৯ ডগ স্কোয়াড ইউনিট খোলার প্রস্তুতি।
জনবল সংকট সম্পর্কে জানতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শেখ মনিরুজ্জামান মিঠুর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে (মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৩টায়) একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট ৪০টি হিং¯্র কুকুর নিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে যাত্রা শুরু করে ডগ স্কোয়াড। ভিআইপি নিরাপত্তা, নববর্ষ, বিশ্বকাপ ক্রিকেট, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নিরাপত্তা, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ডগ স্কোয়াড নামানো হয় মাঠে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।