Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপসর্গে মৃত্যু ২০

কোয়ারেন্টিনে ৫৮ হাজার ৯৯৯

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনার উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়েছে সারা দেশে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নতুন করে ৬৭১ জনকে রাখা হয়েছে। মুক্ত হয়েছেন ১৫৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন আট হাজার ৭৬৪ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন তিন হাজার ১৬১ জন, ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৮৭৩ জন। এখন পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টিন করা হয় তিন লাখ ১২ হাজার ৩৪৪ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৮ হাজার ৯৯৯ জন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন বেসরকারি ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে মারা গেছেন। চমেক হাসপাতালে মারা গেছেন নগরীর খুলশী এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন চৌধুরী। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান নালা পাড়ার প্রীতি বিকাশ দত্ত। এছাড়া ফৌজদারহাটে বিআইটিআইডিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
যশোর ব্যুরো জানায়, যশোর ২৫ বেড হাসপাতালের সুপার ডা. দীলিপ কুমারসহ ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন গতকাল নতুন করে। এই নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো যশোরে মোট ১৭২। এর মধ্যে রয়েছেন একজন এমপি, ৫জন ডাক্তার, দুইজন নার্স।
আক্রান্ত এমপি রণজিত কুমার রায় সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা ভালো। তবে চৌগাছার ডাঃ নাহিদের অবস্থা এখনো সংকটমুক্ত নয়। তাকে হেলিকপ্টারে ঢাকা নেওয়া হয়েছিল। যশোরের সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ আবু শাহীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আক্রান্ত হাসপাতালের সুপার ডা. দীলিপ কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ও তার স্ত্রী ও মেয়ের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া মণিরামপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেণ্টারে গতকাল ঘোষিত করোনার টেস্টের ফলাফলে ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যবিপ্রবি’র এনএফটি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শিরিন নিগার এই তথ্য প্রকাশ করেন।
যবিপ্রবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ অর্ণব সাংবাদিকদের জানান, যশোরের ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০ জনের, নড়াইলের ১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ জনের, মাগুরার ৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে। আর সাতক্ষীরা ৫ জন ও বাগেরহাটের ৮ জনের নমুনা পরীক্ষার সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। অর্থাৎ যবিপ্রবির ল্যাবে মোট ১৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৩৮ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে একশো ছাড়াল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত বুধবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্হিবিভাগের ল্যাবে আরও আটজনের নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্তের মধ্যদিয়ে রাজশাহীতে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৪ জনে।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক বলেন, হাসপাতালের বর্হিবিভাগের করোনা ল্যাবে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আটজনের নমুনায় করোনা পজিটিভ এসেছে। যাদের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নগরীর দুইজন, তানোরের একজন, বাঘার দুইজন ও বাগমারার তিনজন। নগরে আক্রান্তদের মধ্যে দুইজনই নারী। এরা হলেন, নগরের ১২ নং ওয়ার্ডে লিয়া (২২) ও ৩ নং ওয়ার্ডে শামসুনাহার (৮০)। এছাড়াও বাগমারার সুফিয়া (৩৫), খালেক (৪৫), সাইফুল ইসলাম (৩৫), তানোরের আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৩), বাঘার ছন্দা (৩৮), বাহরটি (২৬)।
রামেকের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ও ল্যাব ইনচার্জ প্রফেসর ডা. সাবেরা গুলনাহার বলেন, এর আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পর আরও ১৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ১৭ জন পাবনার ও একজন নাটোরের। সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান ।
তিনি জানান, বুধবার দুই দফায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৮৮ জনের। এর মধ্যে ফলাফল এসেছে ১৪১ জনের নমুনার। যার মধে ১৮ জনের নমুনায় করোনা পজেটিভ। এর মধ্যে পাবনার ১৭ জন ও নাটোরের একজন। এ নিয়ে পাবনায় আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ জন। আর নাটোরে আক্রান্ত সংখ্যা ৬৪ জন।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগে নতুন করে আরো ১৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর প্রাণ গেছে ৪জনের। এনিয়ে বিভাগটিতে মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাড়ালো ২৪জন। বিভাগে গতকাল সকাল পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ১হাজার ৯৯১জন। গতকাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য এ তথ্য জানান। এই বিভাগে মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১হাজার ৯৯১জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৪ জন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ২৬ জনসহ মোট সুস্থ ৪৩৯ জন রোগী। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ৩৫৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮টি জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ বগুড়ায় ৮২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগের ৫টি ল্যাবে করোনা আক্রান্তদের শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় দুইটি, বগুড়া জেলায় দুইটি ও সিরাজগেঞ্জে একটি। এই ৫টি ল্যাবে বিভাগের ৮টি জেলার সন্দেভাজন করোনা আক্রান্তদের শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। পাবনার ল্যবটি চালুর পর্যায়ে রয়েছে।
জানা গেছে, বিভাগের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগী বগুড়া জেলায়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০৩৩ জন। পরের অবস্থানে রয়েছে বিভাগের জয়পুরহাট জেলা। সেখানে সংখ্যা ২১৪ জন। ১৬৩ জন আক্রান্ত নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে নওগাঁ। এছাড়া রাজশাহী জেলায় ১০৪ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৮ জন, নাটোরে ৭৬ জন, সিরাজগঞ্জ ১৬২ ও পাবনা ১৬১ জন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, আশঙ্কাজনকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমন বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় রোগীর সংখ্যা অত্যধিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর আগে বরিশাল মহানগরীকে লকডাউন করার স্বাস্থ্য বিভাগের সুপারিশও আমলে নেয়নি প্রশাসন। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলে নতুন আক্রান্ত এযাবতকালের সর্বোচ্চ ৯৮ জনের মধ্যে বরিশাল জেলায় সংক্রমন ৫৮ জনের। যার মধ্যে মহানগরীতেই আক্রান্তর সংখ্যা প্রায় ৫০। বরিশাল জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৭৫৯। মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
গত ৮ মার্চ থেকে ১০ মে লক ডাউন প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে মোট করোনা সংক্রমন ছিল ১৫৬। যার মধ্যে বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ছিল ৫০। মহানগরীতে ২৫। কিন্তু গত একমাসে বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ৭০৯ বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৭৫৯ এবং মহানগরীতে তা সাড়ে ৬শ’ অতিক্রম করেছে।
বিভাগের ৬ জেলায় মোট আক্রান্ত প্রায় ১১শ বেড়ে ১২শ ১৭’তে উন্নীত হয়েছে। বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। মহানগরীতে পুলিশ, চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীর পরে ব্যাংক কর্মীদের আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। গৌরনদীতে ৪টি ব্যাংক ইতোমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে। মহানগরীতে অগ্রনী ব্যাংকের প্রধান শাখা লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি বেসরকারী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরীর ভাাটিখানায় ৭০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যুর মধ্যে এ নগরীতে মৃতের সংখ্যা ৩ এবং জেলায় ৯-এ উন্নীত হল। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৫ জন সহ দক্ষিণাঞ্চলে মোট ৩৩৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডগুলোতে এ পর্যন্ত ৯৩০ জনকে ভর্তি করা হলেও ছাড়পত্র পেয়েছেন করেছেন ৪৪২ জন। যার মধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনেই ভর্তি করা হয় ২১৯জনকে। ছাড় পেয়েছেন ১৩৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয়েছে ২০ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালের আইসোলেশনে ১ জনের মৃত্যু ও ৪ জন নতুন রোগী ভর্তি করা হলেও ১ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পজেটিভ রোগী ভর্তি হয়েছে ১২২জন। সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন করেছে ৬৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ১জন সহ হাসপাতালটিতে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩৪জন করোনা পজেটিভ রোগী।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, নোয়াখালীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আনোয়ার হোসেন (৪০) নামের একজন কাউন্সিলরসহ আরও ২ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একজন সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া মোট আক্রান্ত ১ হাজার ১৭৪, যার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২৫৭জন। গতকাল দুপুরে নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয় ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফজলুল হক বাকের বলেন, গত ২৪ঘণ্টায় উপজেলায় নতুন করে তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে কবিরহাট পৌরসভার বাসিন্দা ও কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ছিলেন। তিনি গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। গত বুধবারের রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে। গতকাল সকালে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার লাশ দাফন করা হবে। কবিরহাট উপজেলায় করোনায় এটি প্রথম মৃত্যু।
বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস বলেন, গত ৮জুন সোমবার চৌমুহনী চৌরাস্তার আপন নিবাসের বাসিন্দা আবুল কাশেম (৬৫)এর করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তাকে পরিবারের লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। উপজেলায় মোট মারা গেছেন ১৯ জন।
জেলায় করোনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা হলো, সোনাইমুড়ীতে মোরশেদ আলম (৪৫) নামে এক ইতালি প্রবাসী, সেনবাগে এক রাজমিস্ত্রী মো. আক্কাস (৪৮), বেগমগঞ্জে তারেক হোসেন (৩০) ও আমিনুল ইসলাম মিন্টু (৪৭) নামের দুই ব্যবসায়ী, সোনাইমুড়ীতে ফখরুল ইসলাম বাচ্চু (৫৯) নামের এক কৃষক, বেগমগঞ্জের কুতুবপুরে শহিদুর রহমান (৬৬), চৌমুহনী পৌরসভা করিমপুরের বেলাল উদ্দিন (৫৭), চৌমুহনী পৌরসভার পশ্চিম গণিপুর হাজী আবুল খায়ের পাটোয়ারী (৭৪), নরোত্তমপুরে জতন লাল সাহা (৬৫), সূবর্ণচর উপজেলার চরবাটার মাঈন উদ্দিন মানিক (৬৫), নোয়াখালী পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ড জয়কৃষ্ণপুরের আব্দুর রাজ্জাক ফারুক (৫৫), সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়নে আব্দুল মান্নান মনু (৬১), বেগমগঞ্জের একলাশপুরের সাখায়েত উল্যাহ (৮০), সেনবাগের কাবিলপুর ইউনিয়নের মহিদীপুর গ্রামের আহসান উল্যাহ (৫৩), কাবিলপুর ইউনিয়নের উত্তর সাহপুর মসজিদের মুয়াজ্জেন মোজাম্মেল হোসেন (৪৪), চৌমুহনী পৌরসভার কাজী মো. সোলায়মান (৬৪), বেগমগঞ্জ একলাশপুরের ন‚রুল হক (৬২), দ‚র্গাপুরের নবীর হোসেন (৬৫), শরীফপুর ইউনিয়নের মধ্য খানপুর গ্রামের মো হানিফ (৬০), বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ন‚র মোহাম্মদ (৫২), চৌমুহনী পৌরসভার কলেজ রোড এলাকার বিপ্লব রায় (৬৫) ও আলাইয়পুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মাহমুদুল হাসান (৩০) একই এলাকার আবুল কালাম আজাদ (৬৫), সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের ঠক্কর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম আবু (৫৭), চাটখিল পৌরসভার ছয়ানী টগবা এলাকার বুলবুলের নাহার (৫৫), জেলা শহরের সুলতান কলোনীর বাসিন্দা প্রদীপ দাস (৫৮), বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুরের গোলাম হায়দার (৭৫), মিরওয়ারিশপুরের বিবি ফাতেমা (৩৭), উত্তর সাহপুর গ্রামের আবু তাহের (৭৫), বেগমগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের মফিজ উল্যাহ (৬৫), সেনবাগের অর্জুনতলা ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম মানিক (৩৫), জেলার শহরের হরিনারায়ণপুরের গৃহবধ‚ তাসফিয়া বেগম (৪৫), চৌমুহনী চৌরাস্তা আপন নিবাসের বাসিন্দা আবুল কাশেম (৬৫) ও কবিরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন (৪০)।
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুমেক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে জান মোহাম্মদ (৮০) নামের একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে মৃত্যু হয় তার। তিনি খালিশপুরের বঙ্গবাসী মোড়ের মৃত আলি মোহাম্মদের ছেলে।
খুমেক হাসপাতালের ফ্লু কর্ণারের ফোকালপার্সন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, তিনি সকাল সোয়া ৬টার দিকে শ্বাসকষ্ট, হালকা জ্বর নিয়ে করোনা সন্দেহে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ঘণ্টাখানেক পরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এছাড়া খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১ জন। গতকাল সকালে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশিদা সুলতানা এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০০১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩৬২ জন। মারা গেছেন ১৪ জন। ১৯ মার্চ এ বিভাগে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আর তা হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা জেলায়।
তিনি আরও জানান, বিভাগের ১০ জেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে খুলনা জেলায় ২৪৮ জন, বাগেরহাটে ৪৬ জন, সাতক্ষীরায় ৫৬ জন, মাগুরায় ৪৩ জন, নড়াইলে ৫০ জন, কুষ্টিয়ায় ১৬৩ জন, চুয়াডাঙ্গায় ১৩০ জন, মেহেরপুরে ২৯ জন, যশোরে ১৭১ জন এবং ঝিনাইদহে ৬৫ জন রয়েছেন।
বগুড়া ব্যুরো জানায়, বগুড়ায় একই দিনে করোনা উপসর্গে নারীসহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হলেন, আবু ইউসুফ (৩৭)। তিনি বগুড়া বিয়াম ল্যাব. স্কুল এন্ড কলেজের গণিতের শিক্ষক। অপরজনের নাম সালেহা খাতুন (৪৯)। তিনি বগুড়া সদরের ধাওয়াপাড়া এলাকার মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী। গতকাল দুপুর একটায় আবু ইউসুফ এবং দেড়টায় সালেহা খাতুন মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন আইসোলেশন কেন্দ্র মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আরএমও ডা. শফিক আমিন কাজল।
ডা. কাজল বলেন, মারা যাওয়া আবু ইউসুফ করোনা পরীক্ষার জন্য টিএমএসএস মেডিকেলে গত ৬ মে পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। সেই নমুনার ফলাফলে তার নেগেটিভ আসে। কিন্তু আজ তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সকাল সোয়া ১০টায় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি হন। বেলা একটার দিকে তিনি মারা যান।
অপরদিকে, জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাসায় ৫ দিন বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সালেহা খাতুন। পরে অবস্থার অবনতি হলে বুধবার রাত পৌণে ১২টায় ভর্তি হন হাসপাতালে। গতকাল দুপুর দেড়টায় তিনি মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া, বগুড়ায় করোনা পজিটিভ মানুষের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, এই সংখ্যা এলার্মিং। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান বিভাগ জানিয়েছেন বগুড়ায় করোনা সংক্রমনে মৃতের সংখ্যা ৮। এদিকে করোনা সংক্রমনের হার বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ১২ অক্টোবর থেকে বগুড়ার মার্কেট ও বিপণী বিতান গুলো ১ সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে চেম্বার প্রতিনিধির বৈঠকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া চেম্বার সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বগুড়ায় বয়স ভিত্তিক মোট রোগীর দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ১৮ থেকে ৪০ বছরের ৪৭৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যা ৩২২ এরপর ৫১ থেকে ৭০ বছরের রোগী মোট ১৬৮ জন এবং তালিকার তলানীতে রয়েছেন ৭০ উর্ধ্ব মাত্র ১৩ জন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত ১ হাজার ৩৭ জনের মধ্যে ৭৩৭ জন পুরুষ, ২৪২ নারী ও শিশু রয়েছেন ৫৮ জন। ৮ জনের মৃত্যু হলেও সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরেছেন ৭৩ জন।
বগুড়ায় সরকারিভাবে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত একটি মাত্র পিসিআরে করোনা টেস্ট হওয়ায় ফলাফল পেতে খুবই বিলম্ব হচ্ছে। এখানে বগুড়া জেলা ছাড়াও গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ ও কুষ্টিয়া জেলার নমুনাও পরীক্ষা করা হয়।
অন্যদিকে বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার ফি নেওয়া হচ্ছে ৪ হাজার টাকা । এই হাসপাতালে আরও ১ হাজার টাকা বেশি দেওয়া হলে ওই হাসপাতালের কর্মীরাই বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে। কেবল স্বচ্ছল ব্যক্তিরাই এই সুবিধা নিতে পারছে। এদিকে বগুড়ায় শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালেও আরেকটি পিসিআর স্থাপন করা হলে মধ্য, নি¤œ মধ্যবিত্ত¡ ও দরিদ্র শ্রেণির লোকজন উপকৃত হত বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
স্টাফ রিপোর্টার চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মতলবে দক্ষিণে মুক্তিযোদ্ধাসহ ২ জন ও হাজীগঞ্জে ১জন, চাঁদপুর সদরে ২জন এবং ফরিদগঞ্জে ১ জন মারা গেছেন। তাদের প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয়। মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের আবুল হোসেন (৬৭) নামের এক মুক্তিযোদ্ধা করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। ভোর ৪টার দিকে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে মারা যায়। আবুল হোসেনকে চিকিৎসার জন্য গত বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
বিকেল ৪টায় তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে উত্তর উপাদী প্রধানীয়া বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
অপরদিকে খাদেরগাঁও ইউনয়নের অহিদুজ্জামান খন্দকার(৭০) নামের এক সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সকাল ৮ টায় মারা যায়। প্রশাসনের উপস্থিতিতে দাফন- কাফন টিমের সহায়তায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয়েছে।এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীর, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর গাজী মো. খোরশেদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার বলাখাল ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুরুল আমিন (৪৮) চাঁদপুর ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসেলোশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত বুধবার রাত ৯টায় তার মৃত্যু হয়। জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে তিনি গত বুধবার দুপুরে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
চাঁদপুর শহরতলীর বাবুরহাট বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন খান (৫৫) বিকাল সাড়ে ৪টায় মারা গেছেন। তিনি গত ৮/১০দিন যাবত জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা নেওয়ার পথে মতলব নন্দলালপুর এলাকায় মারা যায়।
এদিকে তারই চাচা হাবিব খান(৬৫) তার মৃত্যুর ২ ঘণ্টা আগে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে মারা গেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল বেলা দেড়টায় তিনি মারা যান। সদর হাসপাতালে আরএমও ডাক্তার সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, করোনার উপসর্গ লক্ষ্য করায় তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তির করা হয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলার নয়াহাট হাই স্কুলের ২০০২ব্যাচের মেধাবী ছাত্র মেরিন ইন্জিনিয়ার মো. তাজুল ইসলাম (৩২)করোনা উপসর্গে নিয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে মারা যান। তাজুল ইসলাম গতকাল সকালে ভর্তি হন। দুপুর আড়াইটার দিকে মারা যান। গত ১২ ঘণ্টায় চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এদিকে গতকালও চাঁদপুরে দুই পুলিশ সদস্যের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চাঁদপুর জেলায় বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৯২জন।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠির নলছিটিতে করোনা উপসর্গ নিয়ে হারুন অর রশিদ (৭০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের খাওখির গ্রামের বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।
মৃতের স্বজনরা জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে হারুন অর রশিদ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নিয়েছেন। সকালে তিনি বুকে ব্যাথায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নেয় পরিবারের লোকজন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই সকাল সাড়ে ৭টায় তার মৃত্যু হয়।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে সফিকুল ইসলাম (৪০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর সফিকুল ও তার পরিবারের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্যবিভাগ। মৃত সফিকুল চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকার নাসির উদ্দিনের ছেলে।
স্টাফ রিপোর্টার কুষ্টিয়া থেকে জানান, কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ২৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে বহিরাগত বাদে ২০২ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হলো। গতকাল কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে মোট ১৭৮টি নমুনা (কুষ্টিয়ার ১২১টি) সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। কুষ্টিয়ায় সংগ্রহকৃত নমুনার মধ্যে ২৪টি নমুনা পজিটিভ আসে। কুষ্টিয়ার নতুন আক্রান্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ২০ জন, দৌলতপুর উপজেলায় ১ জন ও মিরপুর উপজেলায় ৩ জন। এ নিয়ে কুষ্টিয়া জেলায় ২০২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হল।
মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারে ক্রমশ বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল মৌলভীবাজারে ডাক্তার নার্সসহ আরও ২৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭৮ জন। গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. তৌউহীদ আহমদ। তিনি আরো জানান, ঢাকা থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আরও বেশ কিছু নমুনার রিপোর্টের অপেক্ষা করছি আমরা। নতুন আক্রান্ত ২৬ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ জন, রাজনগরে ২ জন, কুলাউড়ায় ১২ জন, বড়লেখায় ৪ জন, কমলগঞ্জে ১ জন এবং শ্রীমঙ্গলে ২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে নারী পুরুষ উভয়েই রয়েছেন। এছাড়া মৌলভীবাজার কুলাউড়া উপজেলায় করোনা উপসর্গ সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মাফিক আহমেদ চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার রাউৎগাও ইউনিয়নের পালগ্রাম নর্তন গ্রামের নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জে নতুন করে আরো ১০৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৩৭ জন, টংগীবাড়ীতে ৫ জন, সিরাজদিখানে ২৭ জন, শ্রীনগরে ৩ জন এবং লৌহজেং ৩১ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ কারী টংগীবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামের সুলতান শেখ (৬০) এবং সদর উপজেলার গোসাইবাগ গ্রামের মাকসুদা বেগম (৬৫) এর নমুনায় করোনাভাইরাস পজেটিভ আসে।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, নাটোরে আরোও ৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৬ জনে। সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান নিশ্চিত করেন যে ৭ জনের মধ্যে গত বুধবার রাতে বাগাতিপাড়া লক্ষনহাটি এলাকার ১জন এবং গতকাল দুপুরে আরো ৬ জনের করোনা শনাক্তের রিপোর্ট এসেছে। অপরদিকে সুস্থ হয়েছেন ৪২ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৪ জন বাগাতিপাড়া উপজেলার। ২ জন নাটোর সদর হাসপাতাল থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে কিন্তু তাদের বাড়ি কোথায় তা জানাতে পারেনি সিভিল সার্জন অফিস। আর ১ জনের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলায়।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াাখালী ডিসি কোর্ট ভবনে অবস্থিত রূপালী ব্যাংক নিউটাউন শাখার সেকেন্ড ম্যানেজার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আবু হানিফ আকন্দ (৫৫) গতকাল সকাল পাঁচটায় নিজ বাড়িতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
এছাড়া পটুয়াখালী জেলায় সর্বোচ্চ ৩০ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পটুয়াখালী পৌর শহরের ২১ জন রয়েছেন। এছাড়া বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগের ৪জন আক্রান্ত হলেন।
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো একজনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। খুলনা পিসিআর ল্যাব থেকে পাঠানো এক রিপোর্টে এ তথ্য জানান জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে সাতক্ষীরায় গতকাল পর্যন্ত মোট ৫৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে নতুন করে দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন সখীপুর অপরজন মির্জাপুর উপজেলার। এ নিয়ে জেলায় ডাক্তার, পুলিশসহ সর্বমোট ২৭৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলো। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান গতকাল সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জামালপুর : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে করোনার উপসর্গ নিয়ে কোহিনুর বেগম (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল (১১ জুন) দুপুরে উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের চরবাদুরাবাদ মন্নিয়া বাজার গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। গত বুধবার তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে জামালপুরে আসেন বলে জানা গেছে।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁয় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হলেও এ সময়ে ৫০ জনকে নতুন করে হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ১২ জন, আত্রাই উপজেলায় ৩ জন, মান্দা উপজেলায় ১২ জন, বদলগাছি উপজেলায় ২ জন, পতœীতলা উপজেলায় ১৯ জন এবং পোরশা উপজেলায় ২ জন।
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, যিনি দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তিকৃত করোনা রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছিলেন মিরা রানী দাস। শেষ পর্যন্ত তিনিই করোনার কাছে হেরে গেলেন। তাছাড়া আড়াইহাজার হাসপাতালে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন। করোনার থাবায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সিনিয়র স্টাফ নার্স মীরা রানী দাস (৫৪) মৃত্যুবরণ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়মা অফরোজ ইভা এবং প্রয়াত মীরা রানী দাসের স্বামী ব্যাংকার সুমন কুমার দাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মীরা কাঁচপুরের সাজেদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ১১টায় তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল আমীন জানান, ৩১ মে উপসর্গ দেখে তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে তার দেহে কোভিট-১৯ এর উপস্থিতি সনাক্ত হলে প্রথমে তাকে বাসায় আইসোলেশনে রাখা হয়। পরে অবস্থা অবনতি হলে ৭ মে কাঁচপুর তাকে সাজেদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহষ্পতিবার বেলা ১১টায় তার মৃত্যু হয়।

ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের ছাতকে হু হু করে বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গতকাল ২ জন ডাক্তারসহ মোট ১১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮জন এবং একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীসহ নতুন করে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয় ১৯জনের।
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় মাইটিভির জেলা প্রতিনিধি,ইউপি চেয়ারম্যান এবং একই পরিবারের ৭ জনসহ ২৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। অগতকাল বেলা আড়াইটার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: বদিউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে অগ্রণী ব্যাংক শ্রীপুর শাখার সাবেক ব্যবস্থাাপক শামছুল হক (বিএসসি) (৭০) মারা গেছেন। সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
রায়পুরা (নরসিংদী) : নরসিংদীর রায়পুরায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ফিরোজ মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত ফিরোজ উপজেলার উত্তরবাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর মারা গেলেন তাপস সাহা নামে এক ব্যবসায়ী। গত বুধবার রাতে উপজেলার মোগড়া গ্রামে অবস্থিত নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। গতকাল সকালে সৎকারের জন্য তার লাশ স্থানীয় শ্মশানে নেয়া হয়।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লকডাউন

৭ এপ্রিল, ২০২২
১৩ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ