পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় প্রকাশিত ফলাফলে সন্তুষ্ট হতে পারেননি প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী। গত ৩১ মে ঘোষিত ফলাফলে কাক্সিক্ষত ফল পাননি মনে করে তা পরিবর্তনের জন্য খাতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৭১জন পরীক্ষার্থী। তারা সর্বমোট ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯১৯টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছেন। এদের মধ্যে শুধু এসএসসি পরীক্ষায় ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৮৯৮টি, দাখিলের ২৮ হাজার ৪৮৪টি এবং এসএসসি ভোকেশনালের ১৭ হাজার ৫৩৭ টি খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে। গত বছর আবেদনের সংখ্যা ছিলো ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯১১টি। এ বছর ৮০ হাজারের বেশি আবেদন বেড়েছে। এ খাতে প্রতি বছর বোর্ডগুলো কোটি কোটি টাকা আয় করে। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ড এখাতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৯৮ লাখ ৮ হাজার ৮৭৫ টাকা। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা জানান, এসএসসি, দাখিল ও সমমানের ফল প্রকাশের পরের দিন থেকে গত ৭ জুন ছিল ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের সুযোগ। পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা প্রতিটি বিষয়ে বোর্ডগুলো ১২৫ টাকা করে নিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের ফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করলেও নতুন করে উত্তরপত্র মূল্যায়নের সুযোগ নেই। শুধুমাত্র পুনঃনিরীক্ষা করা হয়। উত্তরপত্র মূল্যায়নে শিক্ষকদের অবহেলার কারণে এ প্রক্রিয়ায়ও প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়। এরজন্য উত্তরপত্র (খাতা) মূল্যায়নের দায়িত্বে থাকা পরীক্ষকরা দায়ী হলেও পরীক্ষার্থীদের টাকা গুণতে হয়।
এ ব্যাপারে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডে সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন বরাবরের মতো অনেক পরীক্ষার্থী নিজেদের ফলে সন্তুষ্ট না হয়ে পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করেছেন। ২০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ আবেদন করেছে এটা অস্বাভাবিক না। নিময় অনুযায়ী এসব খাতা নতুনভাবে নিরীক্ষা করা হবে। তিনি আরও বলেন, আবেদনকারীর মধ্যে যারা এক বা দুই কম পাওয়ায় জিপিএ-৫ পাননি অথবা কৌতুহলী হয়েও কেউ কেউ আবেদন করেছে। তবে এবার তুলনামূলক গণিত বিষয়ের আবেদন বেশি। দায়িত্বে অবহেলা চিহ্নিত হলে পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা জানিয়েছেন, পুনঃনিরীক্ষণে সাধারণত চারটি বিষয় দেখা হয়। এগুলো হলো-উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া হয়েছে কী না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক হয়েছে কী না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কী না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট সঠিকভাবে করা হয়েছে কিনা। এসব বিষয় পরীক্ষা করেই পুনঃনিরীক্ষার ফল দেওয়া হয়। অর্থাৎ শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র পুনরায় মূল্যায়ণের সুযোগ নেই। এরপরও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তনের আবেদন রীতিমত তুঘলঘিকান্ড আখ্যায়িত করে শিক্ষাবিদরা বলেন, বোর্ডের প্রশ্ন পদ্ধতি ও খাতা দেখার নানা ত্রুটির কারণে দিন দিন ফল চ্যালেঞ্জ করার সংখ্যা বাড়ছে। তবে বোর্ডের কর্মকর্তারদের দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের বিষয় ভিত্তিক নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয়। যে কারণে আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে। তারা মনে করে আবেদন করলেই ফল পরিবর্তন হবে। কারণ একজন শিক্ষার্থী যখন দেখছে সে ৭৯ কিংবা ৬৯ বা ৩২ নম্বর পেয়েছে। অর্থাৎ এক নম্বরের জন্য সে ফেল করেছে কিংবা পরবর্তী গ্রেড থেকে বাদ পড়েছে তখন সে খাতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করে।
শিক্ষাবিদরা বলেন, উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রতিবছর ফেল করা পরীক্ষার্থীও পাস করছে, এ-প্লাস পাচ্ছে। পুনঃমূল্যায়নে অসংখ্য শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হচ্ছে। এসব ভুল হওয়ার অন্যতম কারণ স্বল্প সময় বেঁধে দেয়া এবং যথাযথ প্রক্ষিক্ষণ ছাড়াই একজন পরীক্ষককে দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করানো এর ফলে গতানুগতিক মূল্যায়নের ফলে কিছু প্রকৃত মেধাবী প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়ছে।
আন্তঃশিক্ষা শিক্ষাবোর্ডের তথ্যমতে, এ বছর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৫৯ হাজার ৭৯০ জন পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৬০টি বিষয়ে আবেদন করেছে। আবেদনের র্শীষে গণিত বিষয়। চট্টগ্রাম বোর্ডে ২০ হাজার ৫৫০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে মোট ৫২ হাজার ২৪৬টি আবেদন করেছে। রাজশাহী বোর্ডে ২০ হাজার ৪১৩ জন শিক্ষার্থী মোট ৪৪ হাজার ৬১টি আবেদন করেছে। বরিশাল বোর্ডে ১০ হাজার ৫০ জন পাস করা শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে মোট ২৩ হাজার ৮৫০টি আবেদন করেছে। সিলেট বোর্ডে ১১ হাজার ৮৭৪ জন শিক্ষার্থী মোট ২৩ হাজার ৭৯০টি বিষয়ে আবেদন করেছে। কুমিল্লা বোর্ডে ১৭ হাজার ৬৭৭ জন শিক্ষার্থী মোট ৩৯ হাজার ৩০৩টি আবেদন করেছে। দিনাজপুর বোর্ডে ১৭ হাজার ৮৮৭ জন শিক্ষার্থী ৪০ হাজার ৭৫টি বিষয়ে আবেদন করেছে। ময়মনসিংহ বোর্ডে ৩১ হাজার ৩৩১টি আবেদন পড়েছে। আর মাদ্রাসা বোর্ডে ১৪ হাজার ৭০৭ জন শিক্ষার্থী ২৩ হাজার ৪৫০টি আবেদন করেছে। এরমধ্যে গণিতে ৭ হাজার ৯৩৯টি।কারিগরি বোর্ডে ১৭ হাজার ৫৩৭টি আবেদন করেছে শিক্ষার্থীরা। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।