গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
প্রাণঘাতী করোনা মহামারীতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত ও দুবাই থেকে গতকাল গভীর রাতে আরো ৪৭৭ জন প্রবাসী কর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছেন। তেল সমৃদ্ধ এ দেশ দু’টিতে কোম্পানীর কাজ না থাকায় আরো প্রচুর বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে। দুবাই প্রত্যাগত একাধিক প্রবাসী কর্মী এতথ্য জানিয়েছে।
তেলের দাম সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে আসায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো অর্থনীতিতে মন্দার ঢেউ লেগেছে। দেশগুলোতে অভিবাসী কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে নিজস্ব নাগরিকদের কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কুয়েত সরকার তার দেশে ৭০ শতাংশ কর্মস্থলে নিজস্ব নাগরিকদের চাকরি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সেক্টরে নিজ দেশের নাগরিকদের কাজে সম্পৃক্ত করবে দেশটির সরকার। কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
সোমবারবার রাত ১১টায় কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইট যোগে ২৮৯ জন প্রবাসী কর্মী দেশটির অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে খালি হাতে ঢাকায় ফিরেছেন। রাত ২টায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইট যোগে ১৮৮ জন প্রবাসী কর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছে। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরস্থ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কল্যাণ ডেস্কের এডি ফখরুল আলম আজ মঙ্গলবার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কুয়েত সরকার গত মার্চ মাসে দেশটিতে বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের সাধারণ ক্ষমার আওতায় নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে চার হাজার নয় শ’ অবৈধ কর্মী স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে। কুয়েত সরকারের ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ফ্লাইট যোগে বিনা ভাড়ায় তাদেরকে দেশে পাঠাতে চারটি অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা হয়। ক্যাম্পে বসবাসকারী কর্মীদের দেশটির সরকার প্রতিদিন খাবার সরবরাহ করছে। কুয়েত সরকার গত রমজান থেকে এ যাবত দু’সহ¯্রাধিক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে পাঠিয়েছে। ক্যাম্পে অপেক্ষমান বাকি প্রবাসী কর্মীদেরও পর্যায়ক্রমে ফেরত পাঠানো হবে। ক্যাম্পে অপেক্ষমান এসব অবৈধ কর্মী দেশটিতে পালিয়ে পালিয়ে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। দেশটিতে এখনো প্রায় ১৫ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি ঘরবন্দি অবস্থায় রয়েছে। কুয়েত প্রত্যাগত কর্মীরা এসব তথ্য জানায়।
এদিকে, বিমান বন্দরে পৌঁছে একাধিক প্রত্যাগত কর্মী জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন কোম্পানীতে কাজ না থাকায় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি কর্মীদের ছাঁটাই করে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। এখনো বিভিন্ন কোম্পানীতে কাজ না থাকায় দেশে ফেরার তালিকায় রয়েছে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মী। এসব কর্মীদের অনেকেই ভিটেমাটি বিক্রি এবং চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বিদেশে গিয়ে অভিবাসন ব্যয়ের টাকা এখনো তুলতে পারেনি। এসব অসহায় প্রবাসী কর্মীদের পরিবার পরিজন চরম হতাশায় ভুগছেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সরকার বিদেশ প্রত্যাগত অসহায় প্রবাসী কর্মীদের পুর্নবাসনে দু’দফায় প্রায় সাতশ’ কোটি টাকার ঋণ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। শিগগিরই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ প্রত্যাগত অসহায় কর্মীদের আবেদন যাচাই বাছাই করে ঋণ বরাদ্দের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। বায়রার ইসির অন্যতাম নেতা গোলাম মাওলান রিপন আজ মঙ্গলবার ইনকিলাবকে বলেন, বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের (প্রবাসী কর্মী) খালি হাতে দেশে ফেরত অব্যাহত থাকলে রেমিট্যান্স খাতে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিবে। তিনি বিদেশে প্রবাসীদের চাকরি সুরক্ষায় বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রত্যাগত অসহায় কর্মীদের মাঝে ঋণ বিতরণে অহেতুক হয়রানি বন্ধে সজাগ দৃষ্টি রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।