Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশে ফিরতে পারছে না সউদী প্রবাসী শিক্ষার্থীরা

রিয়াদস্থ দূতাবাসের চরম উদাসীনতা ও খামখেয়ালি

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০২০, ৩:৪৫ পিএম

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীতে একটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতির অভাবে সউদী আরবের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা গ্রীস্মকালীন ছুটিতে দীর্ঘ এক মাস যাবত দেশে ফিরতে পারছে না। সউদী আরবের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করছে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশি মেধাবী শিক্ষার্থী। রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের চরম উদাসীনতা ও খামখেয়ালির দরুণ দেশটিতে প্রবাসী শিক্ষার্থীরা গ্রীস্মকালীন ছুটিতে দেশে ফেরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সউদীতে আটকে পড়া একাধিক ছাত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন।
রিয়াদস্থ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মিশনের রাষ্ট্রদূতরা করোনা মহামারীর মাঝেই এক মাস আগে নিজ নিজ দেশে বিশেষ ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি সংগ্রহ করে তাদের ছাত্রদের নিয়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশ দূতাবাসের যথাযথ উদ্যোগের অভাবে প্রবাসী ছাত্ররা দেশে ফিরতে পারছে না। জানা গেছে, রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ’র একগুঁয়েমির দরুণ বাংলাদেশি ছাত্রদের পরিবহনের জন্য একটি বিশেষ ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণের জন্য অনুমতি চেয়ে সিভিল এভিয়েশনে একটি লেটার তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েও তা’ পাঠানো সম্ভব হয়নি। রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও দেশে ফেরার কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না প্রবাসী ছাত্ররা। ফলে দেশের বাড়িতে তাদের অভিভাবকরা চরম হতাশায় ভুগছেন।
দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা সম্পন্ন হবার পর গ্রীস্মকালীন চার মাসের ছুটি গত রমজান থেকেই শুরু হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছাত্রদের ছুটিতে দেশে যাওয়ার ভিসা হস্তান্তর করেছে। শুধু সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের দুই- একটি বিশেষ ফ্লাইট বাংলাদেশে যাওয়া আসার অনুমতি না দেয়ায় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের বিনা মূল্যের টিকিট সরবরাহ করতে পারছেন না। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসির সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। দূতাবাস থেকে শুধু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেয়া হয়।
এদিকে, দূতাবাসের সামান্যতম উদ্যোগের অভাবে বাংলাদেশি ছাত্ররা দেশটিতে আটকে পড়ায় হতবাক হয়েছেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার এ ব্যাপারে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর মেহেদীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

গত ২৮ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত সকল বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করে সউদী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অতিসম্প্রতি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভারতীয় ছাত্রদের একটি ফ্লাইট যোগে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। নির্ধারিত ছুটির সময়ে শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরতে না পারলে পুনরায় তারা ছুটি শেষে সউদীতে ফিরতেও পারবে না। আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত একাডেমিক কার্যক্রম আবার শুরু হবে। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মো. ফুয়াদ হাসান, ফয়সাল আহমাদ শাকিল, শামসুল আরেফীন বলেন, আমরা এ বছর শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের ভিসাও দিয়েছে কিন্তু ঢাকা বিমান বন্দরে একটি বিশেষ ফ্লাইট অবতরণের অনুমোদন না পাওয়ার কারণে আমরা দেশে ফিরতে পারছি না। আমরা যেকোনো উপায়ে দেশে ফিরতে চাচ্ছি। বর্তমানে প্রবাসে বেকার জীবন কাটানো আমাদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ