যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু ও মিজানুর রহমান মিল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য পদে যুক্ত হলেন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিন নেতাকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রাপ্তরা হলেন
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীতে মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশটির বিভিন্ন কোম্পানী অভিবাসী কর্মী ছাঁটাইয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কোম্পানীর কাজ না থাকায় দেশটিতে ঘরবন্দি লাখ লাখ বাংলাদেশি কর্মী বর্তমানের চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। সফল কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবে দেশটি থেকে প্রবাসী কর্মীরা খালি হাতে দেশে ফিরতে শুরু করেছে। ঘরবন্দি প্রবাসী কর্মীরা দেশটির দূতাবাসে দফায় দফায় ফোন করেও নানা সমস্যা সমাধানে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাতে দুবাই থেকে এয়ার অ্যারাবিয়া এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (৫১৯) যোগে ২০৯ জন বৈধ প্রবাসী কর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছে। দুবাইস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, কুয়ালালামপুর থেকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আজ রোববার রাত ১টায় মালয়েশিয়া থেকে একটি ফ্লাইট যোগে ১৫ প্রবাসী কর্মীর লাশ দেশে এসে পৌঁছবে। দীর্ঘ দিন যাবত এসব প্রবাসী কর্মীর লাশ দেশটির বিভিন্ন হাসপাতাল মর্গে পড়েছিল। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল মর্গে এখনো বেশ কিছু প্রবাসী কর্মীর লাশ পড়ে রয়েছে। কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের চরম অবহেলা ও গাফলতির দরুণ এসব লাশ দেশে পাঠাতে অহেতুক বিলম্ব হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে। দেশটিতে ১৯৭৬ সাল থেকে গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ২৩ লাখ৭২ হাজার ১৭২ জন চাকরি লাভ করেছে। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী কর্মীরা ৪০৪ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছে।
দুবাইর বিভিন্ন কোম্পানীতে কাজ না থাকায় শনিবার রাতে এসব কর্মীদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে একাধিক প্রত্যাগত কর্মী এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রত্যাগত এসব কর্মীর মধ্যে মাত্র তিন জন দুবাইস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরেছেন। তাদের পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছিল। প্রত্যাগত এসব রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অনেকের কাছেই বাড়িতে যাওয়ার গাড়ি ভাড়ার টাকা না থাকায় তারা চরম দুর্ভোগের শিকার হন। বিমান বন্দর থেকে প্রত্যক্ষদর্শিরা এতথ্য জানান।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. সেলিম রেজার উদ্যোগ করোনা সঙ্কটকালে বিদেশ থেকে ফেরত আসা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিমান বন্দরে পৌঁছার সাথে সাথে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল থেকে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা নগদ সহায়তা দেয়া শুরু হয়। এতে প্রত্যাগত অসহায় প্রবাসী কর্মীরা বিমান বন্দর থেকে সহজে নিজ নিজ বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পান। কিন্ত তৎকালিন প্রবাসী সচিব সেলিম রেজা রেল মন্ত্রণালয়ে বদলি হওয়ার পর এসব প্রত্যাগত অসহায় রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ওপর খড়গ নেমে আসে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার একগুঁয়েমির দরুণ অতিসম্প্রতি প্রত্যাগত প্রবাসী কর্মীদের বিমান বন্দর থেকে নিজ নিজ বাড়ি যাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকার নগদ সহায়তার বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারাও হতবাক হন।
বায়রার ইসির অন্যতম সদস্য গোলাম মাওলা রিপন আজ রোববার ইনকিলাবকে বলেন, করোনা মহামারী সঙ্কটকালে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরত আসা শুরু হয়েছে। প্রবাসী কর্মী ফেরত আসা অব্যাহত থাকলে রেমিট্যান্স খাতে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিবে। তিনি বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফেরা বন্ধ এবং সংশ্লিষ্ট দেশে কর্মীদের চাকরি সুরক্ষায় বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বায়রা নেতা রিপন বলেন, করোনা মহামারী সঙ্কটকালে বিদেশ থেকে প্রত্যাগত অসহায় রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিমান বন্দরে ৫ হাজার টাকা নগদ সহায়তা দেয়া বন্ধ করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় অমানবিক কাজ করেছে। তিনি বলেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিলে প্রবাসীদের জমাকৃত শত শত কোটি টাকা অলস পড়ে রয়েছে। চলমান এ মহাসঙ্কটকালে বিমান বন্দর থেকে প্রত্যাগতদের নিজ নিজ বাড়ি যাওয়ার সুবিধার্থে উল্লেখিত ৫ হাজার টাকার নগদ সহায়তা অনতিবিলম্বে চালু করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।