পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে সামাজিক ট্রান্সমিশন। করোনা সংক্রমণের মধ্যেই মানুষ চলফেরা করলেও মুখে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস পড়ার সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি অনেককেই রাস্তায় পিপিই পড়েও চলাফেরা করতে দেখা যায়। স্যানিটাইজার ব্যবহারও বাড়ছে ব্যাপকভাবে। মানুষের মধ্যে ‘করোনাভাইরাসমুক্ত’ থাকতে মাস্ক-গ্লাভসের ব্যবহার বেড়েছে ঠিকই; কিন্তু যেখানে-সেখানে এসব মেডিক্যাল সরঞ্জাম ফেলার কারণে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। রাজধানী ঢাকায় এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন চিকিৎসকরা।
করোনার ঝুঁকি এড়াতে নাগরিকদের মাস্ক ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রচারণা চালাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এই ভাইরাসের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে গ্লাভস। বিশেষজ্ঞরাও প্রতিদিন নাগরিকদের সচেতন করতে এই পরামর্শ-উপদেশ দিচ্ছেন। ব্যাপক প্রচারণায় মাস্ক পড়ার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা এসেছে। কিন্তু একদিকে ভাল করতে গিয়ে অন্যদিকে পরিবেশের সর্বনাশ করা হচ্ছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) প্রকাশিত এক জরিপ বলছে, বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে প্রায় সাড়ে ৪৫ কোটি সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু ঢাকাতেই সর্বোচ্চ এক হাজার ৩১৪ টন সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভসের বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়া পলিথিন হ্যান্ড গ্লাভস ৬০২ টন, সার্জিক্যাল মাস্ক ৪৪৭ টন, পলিথিন ব্যাগ ৪৪৩ টন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল থেকে ২৭০ টন বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। ব্যবহারকারীরা যেখানে সেখানে এসব মাস্ক, গ্লাভস ফেলে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের সচেতনতা নেই। এতে করে পুরো ঢাকা শহরকে কার্যত ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলা হচ্ছে।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেছেন, পলিথিন জাতীয় বর্জ্য সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। আক্রান্ত ব্যক্তির মাস্ক, গ্লাভস তো আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আসলে আমাদের অসচেতনতার কারণে এটি হচ্ছে। ঢাকা শহরের অলি-গলির কর্তাব্যক্তি, বাসাবাড়ির মালিকদের এক্ষেত্রে আরও ভ‚মিকা রাখতে হবে যাতে ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস কেউ যত্রতত্র ফেলতে না পারেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হাসনাত মো. আশরাফুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ব্যবহারকারীরা অসচেতনভাবে অনেকে মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই রাস্তায় ফেলে যান। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়। করোনা সংক্রমণ এড়াতে মাস্ক ব্যবহার করলে বাসায় গিয়ে হাত ধোয়ার পর সেটি খুলে ময়লার ঝুড়ি কিংবা পৃথক বিনে রাখা আবশ্যক। যখন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাসা থেকে ময়লা আনতে যাবেন, তখন সেটি তার কাছে দিতে হবে। কিভাবে মাস্ক ডিসপোস করতে হবে, সে বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তারপরও রাস্তায় ব্যবহার করা মাস্ক গ্লাভস পড়ে থাকলে সেগুলো আমাদের কর্মীরা অপসারণ করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ছিদ্দিকী জানান, সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই ফেলার জন্য একটি করে কন্টেইনার স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এটি শিগগিরই বসানো হবে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা সংগ্রহ করার সময় সেগুলো তুলে নেবেন।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক বলেন, এসব বর্জ্য দিন দিন বাড়ছে। এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। আমরা এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনকে বরাবরই সচেতন করে আসছি। এরা সম্পূর্ণ প্রটেকটিভ ব্যবস্থা না নিলে আমাদের পরিবেশের জন্য এক সময় চরম হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, ঢাকাতেই প্রতিদিন ৫৬ টন বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে এই মহামারীর সময় ক্ষতিকর বর্জ্যগুলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তার সঙ্গে সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।