Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনাভাইরাস : কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা

মুহাম্মাদ ইবরাহীম খলিল | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করেছে, করোনা ভাইরাস (COVID-19) বিশ্বে মহামারী আকার ধারন করেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা সহ চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগ দিয়েছে নানা পরামর্শ; কিভাবে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়! অতীব আশ্চর্যের বিষয় আজ চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা যে যে নির্দেশনা দিচ্ছে তার সবকিছুই আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে প্রিয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের আবশ্যক করে দিয়েছেন। মুসলমানদের প্রাত্যহিক জীবনের রুটিন সাজিয়ে দিয়েছেন তিনি। আলোচ্য নিবন্ধে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার কুরআন-সুন্নার কতিপয় নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করব।
১। সাবধানতা অবলম্বন: শুধু করোনা ভাইরাস থেকে সাবধানে থাকবো তাই নয়; বরং সবকিছু থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে আমাদের রব আল্লাহ তায়ালাই নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশ অবলম্বন করলে তিনি যেমন আমাদেরকে করোনা থেকে হেফাযত করবেন তেমনি অন্যান্য মহামারি থেকেও হেফাযত করবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে ঈমানদারগণ ! তোমরা সাবধানতা অবলম্বন করো ”। (সূরা নিসা, আয়াত: ৭১)
মহামারি এই ভাইরাস থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সচেতনামূলক বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো মেনে চলা আমাদের জন্য আবশ্যক। চিকিৎসকরা করোনা থেকে রক্ষা পেতে যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, ইসলাম বহু আগেই সেগুলো মুসলমানদের জন্য প্রেসক্রিপশন করে দিয়েছে। সুতরাং ইসলামী বিধানগুলো যথাযথভাবে পালন করলেই এগুলো থেকে সহজে হেফাযতে থাকা যাবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেছেন, করোনা ভাইরাস মূলত বাতাসে বেশিক্ষণ ভেসে থাকতে পারে না। মানুষের সংস্পর্শেই এগুলো ছড়ায় । এগুলো মানব দেহে প্রবেশ করার একমাত্র পথ হলো চোখ, নাক ও মুখ। সুতরাং এগুলো সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে করোনো সহজে ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। আমরা বিভিন্ন সময় হাত দ্বারা চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ করি এতে সহজে বিভিন্ন ভাইরাস ভিতরে প্রবেশ করতে পারে; তাই হাত বিভিন্ন সাবান, হ্যান্ড সেনিটাইজার, বা এলকোহল বিশিষ্ট জিনিস দ্বারা বার বার হাত ধুয়ে নেওয়ার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন। রাসূল সা. বলেছেন, “পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ”। (সহীহ মুসলিম, হা: ২২৩) মুসলমানদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ করা হয়েছে। নামাযের পূর্বে ওযু করাও ফরজ। সুতরাং কমপক্ষে পাঁচবার ওযু করলে হাতমুখ থেকে বিভিন্ন জীবানু এমনিতেই দূর হয়ে যায়। তাছাড়া সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা তো রাসূল সা. এরই নির্দেশ। বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরা বা বড় বড় পার্টি সেন্টারে দেখা যায় খাবার গ্রহণ করার পর হাত না ধুয়ে টিস্যু দ্বারা হাত মুছে চলে যায়। এতেও বিভিন্ন রোগ জীবানু ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু রাসুল সা. যে কোন খাবার খাওয়া ও খাবার শেষে উত্তমভাবে হাত ধোয়ার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন , “খাবারের বরকত হলো, খাওয়ার পূর্বে এবং পরে (হাত-মুখ) ধৌত করা।”(সুনান আবু দাউদ; হাদীস- ৩৭৬১)
সাবধানতা অবলম্বন এটা তাওয়াক্কুল বিরোধী নয়; বরং সাবধনতা অবলম্বনসহই তাওয়াক্কুল করার নির্দেশ আল্লাহ দিয়েছেন। যেহেতু ভাইরাসটি একজনের সংস্পর্শে বা স্পর্শ করার মাধ্যমে ছড়ায় সেহেতু আপদত মুসাহাফা, কোলাকুলি না করাই ভাল। দেখা হলে সালাম বিনিময়ই যথেষ্ট।
মাস্ক ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে, এটা মূলত যারা আক্রান্ত তাদের ব্যবহার করা উচিত। বা যাদের সর্দি কাশি আছে তাদের ব্যবহার করা উচিত। যাতে তার ভাইরাস অন্যকে ক্ষতি করতে না পারে। অন্যদের ব্যবহার করাতেও দোষ নেই; তবে তা যেন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন তাকে। হাচিঁ দেয়া বা হাই তোলার সময় হাত দ্বারা বা অন্য কোন জিনিস দ্বারা তা প্রতিহত করে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। রাসূল সা. বলেছেন, “কেউ তা (হাই তোলা) যেন যথাসাধ্য প্রতিহত করে। (সহীহ বুখারী, হা: ৩২৮৯)
অনেকসময় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি থাকার কারণে করোনা আক্রান্ত হয়েও বোঝা যায় না। এজন্য সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে; সংস্পর্শের কারণে কম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তির দেহে গিয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করতে পারে।
২। আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও ভরসা: চিকিৎসা, সাবধানতা কখনোই করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে পারবে না; যদি আল্লাহ রক্ষা না করেন। সুতরাং আল্লাহর উপর ভরসা রাখা মুমিনের কাজ। আর সাবধানতা যেহেতু আল্লাহর নির্দেশ তাই সাবধানতাও অবলম্বন করতে হবে। সুতরাং দুটোর সমন্বয়েই আল্লাহর রহমত আসবে; আল্লাহ রক্ষা করবেন। আমরা জানি, ইবরাহীম আ. কে আগুনের কুন্ডুলিতে ফেলার পরও আগুন তাকে পোড়ায়নি, ইউনুস আ. মাছের পেটে মারা যাননি, ইসমাইল আ. কে যবাই করার সময় ছুরি তার কলা কাটেনি এসবই আল্লাহর নির্দেশে। সুতরাং আল্লাহর হুকুম না হলে কোন কিছুই সম্ভব নয়। এ বিশ্বাস একজন মুমিন হিসেবে আমাদের থাকতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “ যে আল্লাহর উপর ভরসা রাখে তিনি তার জন্য যথেষ্ট”(সূরা তালাক, আয়াত; ৩) ।
৩। কুরআনের নির্দেশনা মান্য করা: হালাল খাবার গ্রহণ: শরীরকে সুস্থ্য রাখতে সবসময়ই স্ব্যাস্থকর খাবার খাওয়া আমাদের উচিত। অপরিচ্ছন্ন, রোগ জীবানু ছড়ায় এমন খাবার গ্রহণ না করাই উচিত। কারণ এসব খাবার থেকেই বিভিন্ন রোগ-জীবানু ছড়ায়। এক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহ আমাদের যে নির্দেশ দিয়েছে তা আমারা অনুসরণ করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের পবিত্র খাবার খেতে এবং অপবিত্র খাবার থেকে বেচে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “তিনি তাদের জন্য পবিত্র খাবার হালাল করেছেন এবং অপবিত্র খাবার হারাম করেছেন”(সূরা আরাফ, আয়াত-১৫৭) । চিকিৎসা গবেষকরা ধারণা করেছেন, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হুবাই প্রদেশের উহান শহরের সী ফুড মার্কেট থেকে। করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে উহান শহরে সামুদ্রিক একটি খাবারের কথা বলা হচ্ছে। শহরটির একটি বাজারে গিয়েছিল এমন ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই বাজারটিতে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী বেচাকেনা হতো। কিছু সামুদ্রিক প্রাণী যেমন, বেলুগা জাতীয় তিমি করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে। তবে উহানের ওই বাজারে শুকর, বাঁদুড়, এবং সাপ ইত্যাদি বিক্রি হতো। তাই মূলত এই গোত্রীয় প্রাণীবাহিত হয়ে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়। সুতরাং হালাল খাবারই মূলত স্বাস্থ্যকর এবং হারাম সবসময়ই অস্বাস্থ্যকর। এ থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।
আজওয়া খেজুর: রাসূল সা. বলেছেন,“যে ব্যাক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে; ঐ দিনে কোন যাদু বা বিষ তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।” (সহীহ বুখারী: ৫৪৪৫)
আর আমাদের নিকট বৈজ্ঞানিক প্রমাণও রয়েছে যে, খেজুর ধমনীসমূহ (arteries) সুরক্ষিত করে এবং হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। কোলেস্টেরল নিজেই এক ধরণের উপবিষ (toxin) যা হৃদরোগজনিত সমস্যা উৎপন্ন করে। অধিকিন্তু খেজুরের কিছু উপাদান হজমজনিত সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা মূলক ভূমিকা পালন করে যেমন, dietary fiber সাহায্য করে human intestinal toxic substances দূরীভূত করতে যেমনটা গবেষকরা বলে থাকেন।
কালোজিরা: রাসূল সা. বলেছেন, “কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের ঔষধ। (সহীহ বুখারী; হা- ৫৬৮৮) সুতরাং করোনাসহ যে কোন রোগ থেকে মুক্তি পেতে হাদীসে বর্ণিত কলোজিরা আমরা খেতে পারি। আল্লাহ এর উসিলায় আমাদের শেফা দান করতে পারেন।
১৯৬০ সালে মিসরের গবেষকরা নিশ্চিত হন যে, কালোজিরা নাইজেলনের কারণে হাঁপানি উপশম হয়। জার্মানি গবেষকরা বলেন, কালোজিরার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-মাইকোটিক প্রভাব রয়েছে। এটি বোনম্যারো ও প্রতিরক্ষা কোষগুলোকে উত্তেজিত করে এবং ইন্টারফেরন তৈরি বাড়িয়ে দেয়। আমেরিকার গবেষকরা প্রথম কালিজিরার টিউমারবিরোধী প্রভাব সম্পর্কে মতামত দেন। শরীরে ক্যান্সার উৎপাদনকারী ফ্রির‌্যাডিক্যাল অপসারিত করতে পারে কালিজিরা। পারকিনসন্স রোগের প্রতিকারে, কালোজিরায় থাইমোকুইনিন থাকে যা পারকিনসন্স ও ডিমেনশিয়ায় আক্রান্তদের দেহে উৎপন্ন টক্সিনের প্রভাব থেকে নিউরনের সুরক্ষায় কাজ করে। ক্ষতিকর জীবাণু নিধন থেকে শুরু করে শরীরের কোষ ও কলার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কালিজিরা। Medical Science Monitor Journal এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, নিয়মিত কালোজিরা খেলে মৃগীরোগ, শিশুদের হৃৎপিন্ডে অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। কালোজিরায় খিঁচুনি বন্ধ করার উপাদান থাকে।
মধু: হাদীসে দুটি জিনিসকে রোগমুক্তি বলা হয়েছে, কুরআন ও মধু। রাসুল সা. বলেন, “তোমাদের জন্য দুটি শেফা (রোগমুক্তি) রয়েছে, মধু ও কুরআন।” (ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ৩৪৫২)
অন্য হাদীসের রাসূল সা. বলেন, “যে প্রতি মাসে তিন দিন সকালে মধু চেটে খাবে; তাকে বড় কোন রোগে আক্রান্ত করতে পারবে ন।”(সুনান ইবনে মাজাহ, হা-৩৪৫০)
বিএআরআই এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ রোগতত্ব) ড. কে এম খালেকুজ্জামান বলেন, মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, এতে অ্যালুমিনিয়াম, বোরন, ক্রোমিয়াম, কপার, লেড, টিন, জিংক ও জৈব এসিড এবং কতিপয় ভিটামিন, প্রোটিন, হরমোনস, এসিটাইল কোলিন, অ্যান্টিবায়োটিকস, ফাইটোনসাইডস, সাইস্টোস্ট্যাটিক্স ও পানি (১৯-২১%) ছাড়াও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। মধু এমন ধরনের ওষুধ, যার পচন নিবারক (অ্যান্টিসেপটিক), কোলেস্টেরলবিরোধী এবং ব্যাকটেরিয়াবিরোধী ধর্ম আছে। প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে খালি পেটে চা চামচের দুই চামচ করে মধু ডান হাতের তালুতে নিয়ে চেটে খেতে হবে। নিয়মিত ও পরিমিত মধু সেবন করলে যেসব উপকার পাওয়া যায়। তা হলো-
হৃদরোগ প্রতিরোধ করে; রক্তনালি প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং হৃদপেশির কার্যক্রম বৃদ্ধি করে; রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে; দৃষ্টিশক্তি ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে; মধুর রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা, যা দেহকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে; অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ও কোষকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে; শারীরিক দুর্বলতা দূর করে এবং শক্তি-সামর্থ্য দীর্ঘস্থায়ী করে ইত্যাদি
মাশরুম: রাসূল সা. বলেছেন, মাশরুম হলো ‘মান্না’ র মত। এর পানি চোখের জন্য শেফা।( সহীহ বুখারী; হা ৫৭০৮) মাশরুমকে বনী ঈসরাইলে উপর আল্লাহ যে মান্না ও ছালওয়া নাযিল করেছেন; সেই মান্না এর সাথে তুলনা করা হয়েছে।
মাশরুম বিশেষজ্ঞ ড. আখতার জাহান কাঁকন বলেন, একটি পরিপূর্ণ প্রোটিনের পূর্বশর্ত হলো মানব দেহের অত্যাবশ্যকীয় ৯টি অ্যাসিডের উপস্থিতি। মাশরুমে অতীব প্রয়োজনীয় এ ৯টি অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান।
মানব দেহের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা সৃষ্টি করাই ভিটামিন ও মিনারেলে প্রধান কাজ। শরীরের চাহিদামতো প্রতিদিন ভিটামিন ও মিনারেল খেতে না পারলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা ক্রমশ দুর্বল হয়ে নানারূপ জটিল রোগে আক্রান্ত হতে হয়। প্রাকৃতিকভাবে মাশরুমেই সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান। মাশরুমে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও সেলেনিয়াম। সেলেনিয়াম উপাদানটি শুধু মাছেই পাওয়া যায়। যারা পুরোপুরি নিরামিষভোজী তারা মাশরুমের মাধ্যমে এ উপকারী উপাদানটি গ্রহণ করতে পারেন। মাশরুমে আরও আছে এরগোথিওনেইন নামে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা মানব দেহের জন্য ঢালের মতো কাজ করে। মাশরুমে ভিটামিন বি-১২ আছে প্রচুর পরিমাণে যা অন্য কোনো উদ্ভিজ্জ উৎসে নেই। মাশরুম কোলেস্টেরল শূন্য। এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও খুবই সামান্য। এতে যে এনজাইম ও ফাইবার আছে তা দেহে উপস্থিত বাকি ব্যাড কোলেস্টেরলের বসতিও উজাড় করে দেয়।
তালবিনা: আয়শা সিদ্দীকা রা. বলেন, আমি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছি, “তালবিনা রুগ্ন ব্যক্তির হৃদয়ে প্রশান্তি আনে এবং শোক-দুঃখ কিছুটা দূর করে।( সহীহ বুখারী: হা-৫৬৮৯) পাকস্থলী এবং অন্ত্রতে আলসারে রোগীদের সকালের নাস্তায় নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়ে উন্নত মানের ব্যবস্থাপত্র হিসেবে তালবিনা দেয়া হতো। যব পিষিয়ে, দুধে পাকিয়ে তাতে মধু মিশ্রিত করলে তাকে তালবিনা বলা হয়। এতে আলসারের প্রতিটি রুগী ২/৩ মাসের মধ্যে আরোগ্য লাভ করত।
৪। কতিপয় আমল: পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর এই দোয়ার আমল করা: “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বারাচে ওয়াল জুনুনি ওয়াল জুযামি ওয়া মিন ছাইয়িল আছকামি”। অর্থ: হে আল্লাহ, অবশ্যই আমি আপনার নিকট ধ্ববল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ ও যাবতীয় কঠিন ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। (আবু দাউদ-১৫৫৪)
প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় এই দোয়াটি তিনবার পাঠ করা: “বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়া দ্বুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়া লা ফিছ ছামায়ি ওয়া হুওয়াছ ছামীউল আলীম”। অর্থ: আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি, যার নামের সাথে (শুরু করলে) আসমান ও যমীনের কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী। (ইবন মাজাহ-৩৭৬৯)
“যে কোন স্থানে গিয়ে প্রথমে এই দোয়াটি একবার পড়ে নেয়া: আউযুবি কালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাকা”
অর্থ: আল্লাহ তায়ালার পূত-পবিত্র কালিমার বরকতে তাঁর সকল সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। (সহীহ মুসলিম-৭০৫৩)
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হলেন সকল ডাক্তারের ডাক্তার। সুতরাং যে কোন বালা, মুসিবত, রোগ, শোক এ তার উপর ভরসা রেখে বেশি দোয়া দরুদের মাধ্যমে সহায্য চাওয়া মুমিনের কাজ। তবে সাথে সাথে সাবধানতাও অবলম্বন করতে হবে। সাবধানতা ও যাবতীয় করণীয় মেনে তবেই তার উপর ভরসা রেখে আমল, দোয়া, ইস্তিগফার চালিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে আল্লাহর গজব থেকে হেফাযত করুক আমিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ