Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউরোপ-আমেরিকাকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বললেন ড. মোমেন

কুটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০২০, ১:০০ এএম

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে ঢাকার প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর আহবানের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে, আমাদের পক্ষে আর বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় দেয়া সম্ভব নয়। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর প্রতি আহŸানও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় ড. মোমেন আরও বলেন, যারা বিশ্বে বড় বড় মাতব্বর, যারা সব সময় আমাদের উপদেশ দেন, তারা কিছু রোহিঙ্গা নিতে পারেন। তবে তারা নেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেদিন ইউরোপের একজন রাষ্ট্রদূত আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বললাম, আমার দেশের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার, আর আপনার দেশের মাথাপিছু আয় ৫৬ হাজার ডলার। আমার দেশে প্রতি বর্গমাইলে ১২০০ লোক থাকেন, আর আপনার দেশে প্রতি বর্গমাইলে ১৫ জন লোক থাকেন। আপনারা কিছু রোহিঙ্গা নিয়ে যান। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের উদ্দেশ্য করে বলি, আপনার যদি এত দরদ থাকে, ওদেরকে বেটার লাইফ দেবেন, নিয়ে যান আপনার দেশে। অসুবিধা কী? আমরা কাউকে আটকাবো না। রিলোকেট দেম। যে কোনো দেশে নিয়ে যান। এরই মধ্যে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে নৌকায় করে রোহিঙ্গারা প্রবেশ করতে চাইলেও সেসব দেশ তাদের ফিরিয়ে দেয়। পরে বাংলাদেশে আশ্রয় চায় তারা। ঢাকা আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে না চাইলে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা দফায় দফায় অনুরোধ জানাতে থাকে সরকারকে।
এই প্রসঙ্গ টেনে ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঝামেলা হয় আন্দামান সাগরে, ভারত মহাসাগরে। যখনই ঝামেলা হয় তখনই সবাই শুধু বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে থাকে। ভাবখানা এমন, যেহেতু আমরা আগে ১১ লাখ আশ্রয় দিয়েছি, বাকিগুলোকেও দেন। রোহিঙ্গা সমস্যা দুনিয়ার যেখানে হবে, তাদের আপনারা সাহায্য দেন। আমরা বলেছি যে, আমরা পারব না। আমাদের আর কোনো জায়গা নেই। আর অন্যদেরও রেসপনসিবিলিটি আছে। আর রোহিঙ্গা আমাদের একার সমস্যা নয়, এটা বিশ্বের সমস্যা। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ অন্য দেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে, এমন পরামর্শ দিয়ে ড. মোমেন বলেন, বড় বড় যারা মাতব্বর সারাবছর আমাদের উপদেশ দেন, আদেশ করেন, তারা নিতে পারেন। তাদের জায়গার কোনো অভাব নেই। স¤প্রতি সাগরে ভাসতে থাকা ২৭৭ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা (কক্সবাজারে) ক্যাম্পে অনেক ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকেন। আর আকাম-কুকাম করেন। ভাসানচরে গেলে কাজের সুযোগ পাবেন। রাখাইনে যেমন মাছ ধরতেন, কৃষিকাজ করতেন, তেমন সুবিধা সেখানেও পাবেন। তারা অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত হতে পারবেন। এতে তাদের ভালো হবে। ড. মোমেন বলেন, ভাসানচরে যাতায়াতের সমস্যার কথা বলছেন অনেকেই। তবে যারা বলছেন, তারা বোট সার্ভিস চালু করতে পারেন। কেন তারা এই সার্ভিস চালুর জন্য এগিয়ে আসছেন না?



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৩ মে, ২০২০, ৮:২৫ এএম says : 0
    পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন রোহিঙ্গাদের বিষয়ে এর আগেও ইউরোপিয় মন্ত্রীর সাথে ফোনালাপে কড়া কথাই বলেছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাসমান রোহিঙ্গাদেরকে নিতে হয়েছে এবং ভাসান চরে আশ্রয় দিতে হয়েছে। তারপরও আমি বলতে চাই বাংলাদেশ এখন কূটনৈতিক মহলে ছোট খাটো হলেও একটা যায়গা করেনিয়েছে। ইতিপূর্বে আমি দেখেছি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যা আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোন সরকার প্রধান বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে মাথা ঝাকি দিয়ে কথা বলতে সাহস পায়নি। বাংলার এই দুই রত্নই কেবল সাহসিকতার সাথে সঠিক জবাব দিয়েছেন। ইদানিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাহেব রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রতিবাদি কথা বলছেন। আমি মহান আল্লাহ্‌ পাকের দরবারে দোয়া করি তিনি যেন আমাদের দেশের কূটনীতিবিদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরকে কূটনৈতিকভাবে পারদর্শী করে তুলেন এবং দেশের পক্ষ হয়ে উচিৎ কথা বলার ক্ষমতা দান করেন। আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • Billal hossain ২৪ মে, ২০২০, ১১:১৫ এএম says : 0
    আপনাকে ধন্যবাদ, ওরা আমাদের ২য় ফিলিস্তন বানাতে চায়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ