পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদের সময় ঘনিয়ে এলেও এখনো যেন ঈদের আমেজ নেই রাজধানীতে। সড়কে মানুষ থাকলেও বিপণি বিতান খোলা খুব কমই। ক্রেতাও হাতে গোনা। তবে ফুটপাতে ভিড় আছে। ঈদের বাকি আর এক দিন। অন্যান্য বছর এই সময়ে মানুষের ব্যস্ততা থাকে ঈদের কেনাকাটা নিয়ে। তবে ঈদের চিরচেনা সেই আনন্দ এবার কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। ঈদকেন্দ্রিক বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের কেনাবেচায় উৎসবমুখর জমজমাট পরিবেশও নেই। ঈদের ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাজধানীতে বেড়েছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। বিশেষ করে মোট সংক্রমণের ৮৫ শতাংশ ঢাকা বিভাগে হওয়ার ফলে এবার ঈদের আমেজের লেশমাত্র পাওয়া যাচ্ছে না ঢাকায়।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে বছরে দু’টি ঈদকে কেন্দ্র করে জামা-কাপড়, জুতাসহ আরও কিছু পণ্যের জমজমাট বেচাকেনা হলেও করোনাভাইরাসের কারণে এবার বন্ধ রয়েছে সবধরনের ব্যবসাবাণিজ্য। শবে বরাতের পর থেকে ঈদের বেচাকেনা শুরু হলেও এ বছর চিত্র উল্টো। ঈদ উপলক্ষে রমজানের শেষ ৪ থেকে ৫টি রাত যেভাবে উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যেই প্রায় সারারাত ধরে বেচাকেনা করতেন শহরের প্রধান শপিংমলগুলোর দোকানীরা, এবার নেই সেই দৃশ্যও। রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্ক, গুলশান শপিং কমপ্লেক্স, নিউ মার্কেটসহ বন্ধ প্রায় সকল শপিংমল।
ঈদের আগে গুলিস্তান এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বর ও আশপাশের এলাকায় ফুটপাথে বেশ কিছু জামা-কাপড় ও থান কাপড়ের দোকান বসলেও এ বছর পুরো এলাকাই রয়েছে ফাঁকা। করোনাভাইরাসের কারণে ফুটপাথের চায়ের দোকান, ফলের দোকান, খাবার হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে। সবাই নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন। সবকিছু মিলিয়ে রাজধানী এখন থমকে আছে। দুপুরে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ওয়ারী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কিছু কিছু দোকান খুলেছে। তবে সেগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। একেকটা শোরুমে দু/তিনজন করে ক্রেতা। তাও তারা বেশিক্ষণ অবস্থান করছেন না। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব কিনে চলে যাচ্ছেন। ওয়ারীর সুনামধন্য এক বেকারীর মালিক জানান, গত বছরের এই দিনে অর্থাৎ ঈদের একদিন আগে লাচ্চা ও সেমাই কেনার জন্য ক্রেতার দীর্ঘ লাইন ছিল। ১২ জন কর্মচারি দিয়ে ক্রেতার চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। অথচ এবার ক্রেতা নেই। দুএকজন করে আসছেন। কিনছেন পরিমানে খুবই কম।
রায়ের বাজারের মুদি দোকানদার মনোয়ার বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ঈদের বেচাকেনা অনেক কম। করোনার কারণে মানুষের আয় কমে গেছে। কারো কারো আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় কাজ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত এবং নি¤œ আয়ের মানুষ। মানুষের হাতে টাকা না থাকলে তাদের ক্রয় ক্ষমতা এমনিতেই কমে আসে। যার কারণে ঈদকেন্দ্রিক বেচাকেনাও কম। গত বছরের তুলনায় কিছু পণ্যের দাম কমেছে, কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তাছাড়া দাম তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক।
শংকর থেকে রায়েরবাজারে বাজার করতে এসেছেন আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, করোনার কারণে স্বাভাবিক জীবনে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ নানা ঝামেলার মধ্যে আছে। যার জন্য এবারের ঈদ আগের ঈদের মত হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পণ্যের দাম আগে যা ছিল এখনও তেমনই আছে। চোখে পড়ার মত দাম বাড়েনি। তাছাড়া কিছু কিছু জিনিসের দাম ঈদ এলে ৫-১০ টাকা বাড়ে। এমন দাম বৃদ্ধি অন্যায় হলেও আমরা এসবের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি।
বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণেই আপাতত বন্ধ সমস্ত মার্কেট। বড় বড় শপিং কমপ্লেক্সগুলো নিরাপত্তা বিধি মেনে বিকিকিনি করলেও মার্কেট খুলে দিলে ভিড় বাড়বেই। আর সাধারণ মানুষ বলছেন, অফিস-আদালত ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় রাস্তায় মানুষের আগমন কম। কিছু মানুষ জরুরি প্রয়োজনে বেরুলেও যত দ্রæত সম্ভব কাজ সেরে নিচ্ছেন। সন্ধ্যার পরে ঢাকায় এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয় যেন। এমন পরিস্থিতিতে ঈদের আমেজ প্রায় বোঝাই যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।