Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোরের পাঁচজন জঙ্গি চিহ্নিত পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ

প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর : যশোরের নিখোঁজদের মধ্যে পাঁচজন জঙ্গি তৎপতায় লিপ্ত রয়েছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখা নিখোঁজ ব্যক্তি ও সন্দেহভাজনদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে এবং যাচাই-বাছাই শেষে তাদের চিহ্নিত করে। একইসাথে জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। গতকাল পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান পিপিএম বার দৈনিক ইনকিলাবকে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ইতোমধ্যে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ শাখা থেকে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিরিয়ে আনারও ব্যবস্থা নিচ্ছে। যশোরের মাটিতে কেউ জঙ্গি তৎপরতা যাতে চালাতে না পারে সে ব্যাপারেও পুলিশ সুপার বিভিন্ন কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ছবিসহ পাঁচ জঙ্গির যাবতীয় তথ্য প্রচার করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে যশোরের ৯টি থানায় মোট ১১৪টি সাধারণ ডায়রি হয় সন্তান বা স্বজনদের নিখোঁজের বিষয়ে। দেশে জঙ্গি তৎপরতা বাড়ার প্রেক্ষাপটে পুলিশ এই সাধারণ ডায়রিগুলো বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে। পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এদের অনেকে পরিবার-সদস্যদের সঙ্গে রাগারাগি করে বাড়ি ছেড়েছেন। আবার অনেকে গোপনে বিয়ে করে পরিবার ত্যাগ করেছেন। কেউ কেউ বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছেন কাজের আশায়। যশোরের মণিরামপুরের ১৪ জনের নাম রয়েছে নিখোঁজদের তালিকায়। পুলিশ তদন্ত করে নিশ্চিত হয়েছে, এরা জঙ্গি নন, কাজের সন্ধানে সমুদ্রপথে বিদেশ গিয়েছেন।
যশোরে নিখোঁজের ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন জঙ্গি তৎপরতায় সাঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। এরা হলেন, যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার সোবহানের ছেলে কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্না (২৪), শহরতলীর কিসমত নওয়াপাড়া এলাকার কাজী হাবিবুল্লাহর ছেলে ফজলে রাব্বি (২১) এবং শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামের আওরঙ্গজেবের ছেলে মেহেদি হাসান জিম (১৯)। এদের মধ্যে ফজলে রাব্বি মাগুরা সদর উপজেলার বাসিন্দা হলেও বর্তমান ঠিকানা যশোরের কিসমত নওয়াপাড়া। বাকি দুইজন দুই ‘জঙ্গি’ হলেন শহরের ধর্মতলা মোড় এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে রায়হান (২১) ও মণিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মৃত হাসান আলী গাজীর ছেলে জিএম নাজিমউদ্দিন ওরফে নকশা নাজিম (৪২)।
পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ধর্মতলা এলাকার রায়হানের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় মামলা আছে। প্রায় তিন বছর তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। আর মণিরামপুরের নাজিমউদ্দিন নিখোঁজের ব্যাপারে রাজধানীর ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়রি হয়। যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, ‘পাঁচ জঙ্গীর’ পরিবারের সঙ্গে ইতোমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা ভুল পথ থেকে ফিরে এলে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি বলেন,এখন পর্যন্ত কামরুজ্জামান এবং ফজলে রাব্বির পরিবার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওই দুই তরুণের পিতা-মাতা পুলিশকে জানিয়েছেন, তারা সন্তানদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। অন্য তিনজনের পরিবারকে মেসেজ দেওয়া হলেও কোনো রেসপন্স পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, যশোর এম এম কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক নাইমা আক্তার সপরিবার দেশ ছেড়েছেন। তারা মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় রয়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধারণা করছে। ধারণা সঠিক হলে বাংলাদেশ থেকে সপরিবারে আইএসে যোগ দেওয়ার ঘটনা হবে এটিই প্রথম। দৈনিক ইনকিলাবে শিক্ষিকার সপরিবারে নিরেুদ্দেশ, নানা প্রশ্ন শিরোনামে সোমবার এটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যশোরের পাঁচজন জঙ্গি চিহ্নিত পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ