Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বন্ধ মৌসুমে লাখ লাখ বাঁশ পাচারের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : বাঁশের প্রজনন বৃদ্ধি ও বংশ বিস্তারের জন্য জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বন থেকে বাঁশ আহরণ, পরিবহন ও বেচাবিক্রি নিষিদ্ধ রয়েছে। সরকারের নিষেধাজ্ঞা না মেনে বন্ধ মৌসুমে কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী, রাঙ্গুনিয়ার ইছামতি খাল, কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক, রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম ঝুম নিয়ন্ত্রণ বিভাগের খাসখালী রেঞ্জের সদর বিটের কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন সড়কপথে লাখ লাখ বাঁশ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। মাঠ পর্যায়ের বন কর্মচারী-কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বন্ধ মৌসুমে বাঁশ পাচার হওয়ায় সরকার এ খাত থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। বেপরোয়াভাবে বাঁশ পাচার বেড়ে যাওয়ায় বাঁশঝাড় উজাড় হওয়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় অবস্থিত ইছামতি রেঞ্জ, বগাবিল বিট, নিশ্চিন্তপুর বিটের বিভিন্ন সড়ক, ইছামতি খাল ও কর্ণফুলী নদীপথে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ঝুম নিয়ন্ত্রণ বিভাগের খাসখালী রেঞ্জের সদর বিটের সুগার মিল, বেতবুনিয়া, সেলছড়া, ঘাগড়া, নারাল্যাছড়িসহ কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক, রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের চিড়িংগা বিট, কোদালা বিট এলাকার তিনছড়ি, ফুইট্টাগোদা, বারঘোনিয়া, রেশম বাগান থেকে বাঁশ চোরাই পথে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বনাঞ্চল উজাড় করে বাঁশ পাচার করার ফলে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে কাপ্তাই বাঁধের ওপর কেপিএমের ইজারাকৃত বাগান থেকে আহরিত বাঁশ মিলে ঠিকাদাররা সরবরাহ না করে খোলা বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। খোলা বাজারে বিক্রির উপযুক্ত নয় এমনই নষ্ট ও অকেজো বাঁশ সরবরাহ করছে মিলে। এসব বাঁশ ক্রয় করে মিল কর্তৃপক্ষ শতভাগ সুফল পাচ্ছে না বলে জানা গেছে। জানা গেছে, বন বিভাগের ট্রানজিট পাস (টিপি) বাবদ প্রতি ট্রাকে ৭শ’ বাঁশ পরিবহনের অনুমতি দেয়া হয়। প্রতি গাড়ি টিপি বাবদ ২৮৪১ টাকা রাজস্ব আদায়ের নিয়ম রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইছামতি রেঞ্জ, খাসখালী রেঞ্জ ও কাপ্তাই রেঞ্জ থেকে প্রতি গাড়িতে গড়ে ২০০-৩০০ বাঁশ বাড়তি নেয়া হচ্ছে। এক থেকে দুই হাজার টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
বাড়তি বাঁশ পরিবহন ও বন বিভাগের লোকজনকে ঘুষ দিয়ে বন্ধ মৌসুমে বাঁশ পাচারের কথা স্বীকার করে কাউখালী বেতবুনিয়া গ্রামের মো: সেলিম সওদাগর জানান, বন বিভাগকে বখশিশ দিয়ে বাঁশ ব্যবসা করছি। বাঁশের বন্ধ মৌসুমে বন বিভাগকে বখশিশের পরিমাণ বাড়াতে হচ্ছে। বখশিশ না দিলে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়। ঝামেলা এড়াতে বাড়তি টাকা দিয়ে টিপি নিই।
রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাটের ইছামতি খালের বাঁশ ব্যবসায়ী মো: লোকমান বলেন, হাজার হাজার বাঁশ প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে নেয়া হচ্ছে। ট্রানজিট পাস (টিপি) অনুকূলে বৈধভাবে বাঁশ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। বন বিভাগের টিপির অনুমতির চেয়ে বাড়তি বাঁশ পরিবহনে বন বিভাগকে বখশিশ বাড়তি দিলে কোনো ঝামেলা হয় না। বাঁশ বোঝাই ট্রাক থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ইছামতি রেঞ্জ কর্মকর্তা (ফরেস্টার) মো: আব্দুল হামিদ বলেন, টিপির অনুকূলে নদী ও সড়কপথে বাঁশ পরিবহনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। বন্ধ মৌসুমে বাঁশের টিপি দেয়া বৈধতা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্ধ মৌসুমে লাখ লাখ বাঁশ পাচারের অভিযোগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ